কোম্পানীগঞ্জের টুকের বাজারে লাগে না উন্নয়নের ছোঁয়া

কবির আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ


আগস্ট ০৫, ২০২১
০২:৪৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ০৫, ২০২১
০২:৪৬ পূর্বাহ্ন



কোম্পানীগঞ্জের টুকের বাজারে লাগে না উন্নয়নের ছোঁয়া

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী টুকের বাজারে এক যুগের বেশি সময়ে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। বাজারের রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোগী, ড্রেনগুলো অপরিষ্কার, অলিতে–গলিতে ছড়িয়ে থাকে ময়লা-আবর্জনা। দখল-দূষণে বাজারের কয়েকটি ড্রেনে পানিপ্রবাহ প্রায় বন্ধ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বাজারের প্রতিটি গলি বেহাল। দিনের বেলায় বাজারজুড়ে পণ্যবাহী ট্রাক-পিকআপের মালামাল লোড-আনলোডের কারণে বাজার দিয়ে মানুষের চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সবমিলিয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রাজধানী খ্যাত টুকের বাজারের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের দুর্ভোগের সীমা নেই। বাজারের সর্বত্র অব্যবস্থাপনার কারণে বাজারটি উন্নয়নের ছোঁয়াবঞ্চিত বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

রাজস্ব আদায় হলেও এ বাজারের উন্নয়নে সংশ্লিষ্টদের নেই কোনো নজরদারি। রক্ষণাবেক্ষণে নেই যথাযথ উদ্যোগ। অযতœ-অবহেলায় পুরোনো এ বাজারের ঐতিহ্য আজ ধ্বংসের দোরগোড়ায়। তাছাড়া সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, সংস্কার, উন্নয়নের অভাব ও নানা অব্যবস্থাপনায় বর্তমানে টুকের বাজারে দেখা দিয়েছে চরম দুরবস্থা।

জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২০টির বেশি বাজার রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে টুকের বাজার। পাশাপাশি এখানে রয়েছে সাপ্তাহিক গরু-ছাগলের হাট। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে শাক-সবজি, মাছ, ধান, আম, কাঁঠাল, চালসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য ও গাছ-গাছালি এনে সাপ্তাহিক হাটে বিক্রি করেন। সকাল-বিকাল দৈনন্দিন বেচাকেনা চলে টুকের বাজারে। 

বর্তমানে টুকের বাজার পরিচালনা কমিটির অর্থায়নে বাজারের মাঝামাঝি থাকা ভাঙা রাস্তাটি নতুন করে ঢালাই ও গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করলেও সরকারি অর্থায়নে পরিকল্পিত উন্নয়ন হয়নি দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময়ে। বাজারে কোনো গণশৌচাগার নেই বলে মানুষ যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ করে পরিবেশ দূষিত করছে। সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে পয়ঃনিষ্কাশন হয় না। এতে সামান্য বৃষ্টিতে বাজারে পানি জমে যায়। পাশাপাশি মাছবাজার নোংরা, অপরিচ্ছন্ন ও দুর্গন্ধময়। তাছাড়া পশু জবাইয়ের জন্য আলাদা সুব্যবস্থাও নেই বাজারে। উন্মুক্ত স্থানে পশু জবাই একদিকে যেমন বিপজ্জনক, অন্যদিকে গরুর রক্ত ও বর্জ্যের কারণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। টুকের বাজারে যাতায়াত ব্যবস্থাও খুবই খারাপ। রাস্তা ও দোকানের ভিটা প্রায় সমান্তরালে থাকায় বৃষ্টি হলেই রাস্তা ও দোকানে পানি জমে যায়। কর্দমাক্ত থাকে পুরো বাজার।

বাজারের ব্যবসায়ী খায়রুল আমিন সিলেট মিররকে বলেন, মানুষের জীবন সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে হাট-বাজার। বাজারের যুগোপযোগী উন্নয়ন খুবই জরুরি। দীর্ঘ কয়েকবছর যাবত বাজারের উন্নয়ন না হওয়ায় বাজারের ব্যবসায়ীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে পয়ঃনিষ্কাশন হয় না। এতে সামান্য বৃষ্টিতে বাজারে পানি জমে যায়। অলিতে–গলিতে ছড়িয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। বিভিন্ন সমস্যার কারণে বাজারে মানুষের চলাচল করা খুবই কষ্টকর।

টুকের বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মজনু মিয়া সিলেট মিররকে বলেন, বাজারের প্রকৃত উন্নয়নে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা জরুরি। এছাড়া টুকের বাজারকে আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন একটি বাজার হিসেবে রূপান্তর করা হোক, যা সময়ের দাবি।

পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ্ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন অপরিকল্পিভাবে দোকানপাট নির্মাণের ফলে টুকের বাজারে বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে জানিয়ে সিলেট মিররকে বলেন, সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য পরিকল্পিত একটি নকশা করে সংশিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে কাজ করা হবে। 

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য বলেন, বাজারের সমস্যাগুলোর কথা আমার জানা নেই। ব্যবসায়ী ও বাজার পরিচালনা কমিটি লিখিতভাবে সমস্যাগুলো জানালে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।


এমকে/আরআর-০৮