সিলেট মিরর ডেস্ক
আগস্ট ০৬, ২০২১
০৫:১৬ পূর্বাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ০৬, ২০২১
০৫:১৬ পূর্বাহ্ন
জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম্স লিমিটেডের ‘চরম অন্যায়-অবিবেচকমূলক কর্মকাণ্ডে ’দি ম্যান অ্যান্ড কোম্পানী অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমদ মিছবাহ।
বৃহস্পতিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ জানান তিনি। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ নীতিমালা অনুসরণ করেই আমরা দি ম্যান এন্ড কোম্পানীর গার্ডেন টাওয়ারে ১৯৫টি গ্যাসের চুলার অনুমোদন নিয়েছি এবং সেই মোতাবেক বিলও দিয়ে আসছি। কিন্তু কারো অদৃশ্য ইন্ধনে আমাদের সম্পূর্ণ বৈধ সংযোগ ঢালাওভাবে অবৈধ আখ্যায়িত করে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। যে বা যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। তা না হলে এই চক্র সিলেটের মানুষের সঙ্গে আরও অন্যায় অবিচার করতেই থাকবে। সবার মঙ্গলের স্বার্থেই এসব অপচক্রের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে।’
এ সময় বিভিন্ন সময়ে গ্যাস সংযোগ নেওয়ার সময়কাল উপস্থাপন করে তিনি বলেন, ‘দি ম্যান অ্যান্ড কোম্পানী লিমিটেডের গার্ডেন টাওয়ার ভবনের ১৮২টি ফ্ল্যাটসহ অন্যান্য স্থাপনার জন্য প্রথম পর্যায়ে ১৪০টি দ্বৈত চুলা সংযোগের আবেদন করলে ২০০৩ সালের ২৪ এপ্রিল জালালাবাদ গ্যাস টি এন্ড ডি সিস্টেমস লিমিটেড চাহিদাপত্র অনুসারে ১৪০টি চুলার বিপরীতে জামানত ও কানেকশন ফিসহ ৭টি পে-অর্ডারে ৭ লাখ ৭৮২ টাকা পরিশোধ করা হয়। পরবর্তীতে একই বছরের ৪ জুন ১৪০টি দ্বৈত চুলার বিপরীতে সম্পূরক চাহিদা পত্র অনুসারে ২১ জুন অতিরিক্ত জামানত বাবদ ২৭ হাজার ৭২৪ টাকা পরিশোধ করা হয়। যার ফলে ওই্ বছরের ৭ জুলাই গ্যাস লাইনের ড্রয়িং দাখিল করলে গ্যাস অফিস কর্তৃক ১৪০টি চুলার গ্যাস সংযোগ ও ড্রয়িং অনুমোদন করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘২০০৪ সালের ১৭ অক্টোবর আবারও ৫৩টি দ্বৈত ও দুটি একক চুলার সংযোগের আবেদন করলে সে বছরের ১৭ অক্টোবর সম্পূরক অতিরিক্ত চাহিদা পত্র অনুসারে পে-অর্ডারের মাধ্যমে ৫৩টি দ্বৈত ও দুটি একক চুলার সংযোগের জন্য ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৫৬ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। ২০০৫ সালের ১৩ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩টি দ্বৈত ও দুটি একক চুলার সংযোগ ও ড্রয়িং অনুমোদন করা হয়। এ নিয়ে মোট ১৯৫টি চুলার জন্য জামানত, অতিরিক্ত জামানত ও সংযোগ ফিসহ মোট ৯ লাখ ১ হাজার ৩৬২ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে এবং ১৯৫টি চুলার সংযোগ প্রদান করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘২০১৫ সালের ২২ জানুয়ারি কোম্পানীর পক্ষ থেকে গার্ডেন টাওয়ারের চারটি ভবনে বর্তমানে ১৯৭টি দ্বৈত চুলা ও দুটি একক চুলার অনুমোদন রয়েছে বলে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। সেই প্রেক্ষিতে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ থেকে গার্ডেন টাওয়ারের ফ্ল্যাট বাড়ির জন্য আবাসিকভাবে ১৯৩টি দ্বিমুখী চুলা ও দুটি একক চুলার অনুমোদন দেওয়া হয় এবং বর্ধিত গ্যাসমূল্য বাবদ অতিরিক্ত জামানত বাবদ ৪৩ হাজার ৬৫৪ টাকা ও একটি প্রেসার গেজের মূল্য ৬ হাজার ১৭২ টাকাসহ সর্বমোট ৪৯ হাজার ৮২৬ টাকা জমা প্রদান করার জন্য জানানো হয়। আমরা সেই সময় বিষয়টি নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৪০টি ও ৫৩টি দ্বৈত চুলা ও দুটি একক চুলাসহ সর্বমোট ১৯৫টি চুলার চাহিদাপত্র অনুযায়ী জামানত ও অতিরিক্ত জামানত পরিশোধ ও ড্রয়িং অনুমোদনের বিষয়টি অবহিত করি। এ ব্যাপারে আমাদেরকে পরবর্তীতে জানাবেন বলে জানান। কিন্তু গত ৭ বছরেও অতিরিক্ত জামানতের টাকা পরিশোধের বিষয়ে জালালাবাদ গ্যাসের পক্ষ থেকে কিছুই জানানো হয়নি।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ১৪ জুলাই হঠাৎ করে লকডাউনের মধ্যে জালালাবাদ গ্যাস টি এন্ড ডি সিস্টেমস লিমিটেড ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল সরজমিনে উপস্থিত হয়ে গ্যাস রাইজারটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা বলে বিনা নোটিশে যাচাই বাচাই না করে রাইজারটি খুলে নিয়ে যান। কিন্তু আমরা গ্যাস লাইন সংযোগের পর থেকে মিটারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা নিয়মিতভাবে পরিশোধ করে আসছি। হঠাৎ করে গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করায় কোম্পানীর অপুরণীয় ক্ষতি হয়েছে।’
তিনি জানান, এ ব্যাপারে নথিপত্র যুক্ত করে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বরাবরে একটি আবেদন করা হয়েছে। এছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান, সিলেট চেম্বারের সভাপতিকেও এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অবিলম্বে গ্যাস রাইজারটি খোলার কারণ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও বিচ্ছিন্নকৃত গ্যাস রাইজারটি দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনঃসংযোগের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরসি-০৩