সিলেটে মৃত্যুর হিসাবে গরমিল

নিজস্ব প্রতিবেদক


আগস্ট ০৭, ২০২১
০৪:০৫ পূর্বাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ০৭, ২০২১
০৪:০৫ পূর্বাহ্ন



সিলেটে মৃত্যুর হিসাবে গরমিল

সিলেট বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যায় গরমিল দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ অধিদপ্তর কেন্দ্রীয়ভাবে মৃত্যুর যে তথ্য প্রতিদিন দিচ্ছে তার সঙ্গে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যের মিল নেই।

বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায় এ পর্যন্ত সিলেট বিভাগে মারা গেছেন ৮২৫ জন। অথচ গতকাল সকালেই বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে বিজ্ঞপ্তি দেয় তাতে মৃত্যুর সংখ্যা বলা হয় ৭৬১ জন। ব্যবধান ৬৪জনের। 

এ বিষয়ে জানতে কেন্দ্র এবং স্থানীয় দুই দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে উভয়েই নিজেদের তথ্য সঠিক বলে দাবি করেন। এছাড়া এ বিষয়ে নিজেদের ব্যাখাও তুলে ধরেন।  

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের তথ্যমতে, সিলেট বিভাগে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৭৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে সিলেট জেলায় মারা গেছেন ৬০৯ জন, সুনামগঞ্জে মারা গেছেন ৫৫ জন, হবিগঞ্জে ৩৬ জন এবং মৌলভীবাজার জেলায় মারা গেছেন ৬১ জন। 

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বিভাগে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৮২৫ জন। এদের মধ্যে সিলেট জেলায় মারা যান ৫১৭ জন, সুনামগঞ্জে ১০৬ জন, হবিগঞ্জে ৮০ জন এবং মৌলভীবাজার জেলায় মারা যান ১২২ জন। অর্থাৎ সিলেটে হিসাবের চেয়ে ৬৪ জন বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। 

এদিকে শুধু মোট মৃত্যুই নয় দৈনিক মৃত্যুর হিসাবেও রয়েছে বিভ্রান্তি। গত বুধবার সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় বিভাগের করোনায় একদিনে রেকর্ড ২০ জন মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল। তবে বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় হিসাবে জানানো হয় ওইদিন সিলেট বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। আবার গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় ২৪ ঘন্টায় বিভাগে ১৩ জনের মৃত্যুর খবর জানায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় হিসাবে বিভাগে মৃত্যু দেখানো হয় ২৩ জনের। 

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সিলেট মিররকে বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন সকালে গণমাধ্যমে যে তথ্যটি পাঠাই সেটাই সঠিক। জাতীয় তথ্যে ত্রুটি রয়েছে।’ 

আপনাদের তথ্যই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেখায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন গণমাধ্যমে যে তথ্য পাঠাই, সেটাই আবার ঢাকায় পাঠানো হয়। তবে সেখানে সমন্বয় করতে গিয়ে জটিলতার তৈরি হয়। শুধু সিলেট নয় অন্যান্য অঞ্চলের হিসাবেও এরকম ত্রুটি রয়েছে।’ 

আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক মো. কামরুল কিবরিয়া সিলেট মিররকে বলেন, ‘সিলেটে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর অনেক রোগী চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আসেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ঢাকার হাসপাতালগুলোতে মারা যান। তখন তাদেরকে আমরা সিলেটের হিসাবেই ধরি। যার ফলে আমাদের হিসাবে মৃত্যু বেশি। কারণ ঢাকার হাসপাতালে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের হিসাব সিলেট কার্যালয় পায় না।’ 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত বছরের ৫ এপ্রিল সিলেট প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম মৃত্যু ঘটে ১৫ এপ্রিল। গত বছরে এপ্রিল থেকে জুলাই চারমাসে বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪৬ জনের। আর চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪১২ জনের। অর্থাৎ মৃত্যু বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ। 

এনএইচ/আরসি-০১