নিজস্ব প্রতিবেদক
আগস্ট ১৩, ২০২১
০৬:৩৯ অপরাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ১৩, ২০২১
১১:১৬ অপরাহ্ন
সিলেট নগরের বাগবাড়ি এলাকার ছোটমণি নিবাসে নাবিল আহমদ নামে এক শিশু খুনের ঘটনা ঘটেছে। ২ মাস ১১ দিন বয়সের এ শিশুকে দেখভালের দায়িত্বে থাকা সুলতানা ফেরদৌসি সিদ্দিকা নামের একজন আয়া খুন করেছেন। ছোটমণি নিবাসের কক্ষে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) দিবাগত রাত ১ টায় আটক করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
বিষয়টি সিলেট মিররকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আবু ফরহাদ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ জুলাই রাতে ছোটমনি নিবাসের বাসিন্দা শিশু নাবিল কান্নাকাটি শুরু করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন শিশুদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকা। নাবিলের কান্নায় বিরক্ত হয়ে এক পর্যায়ে তিনি তাকে বিছানা থেকে তুলে ছুড়ে ফেলে দেন। এ সময় বিছানার স্টিলের রেলিংয়ে বাড়ি খেয়ে মাটিতে পড়ে শিশুটি। প্রচণ্ড আঘাতে তৎক্ষণাৎ জ্ঞান হারায় শিশু নাবিল। এরপর নাবিলের মুখে বালিশ চেপে ধরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন আয়া সুলতানা।
সূত্র আরও জানায়, ঘটনার পর প্রমাণাদি লুকানোর চেষ্টা করেন তিনি। ছোটমনি নিবাসের সিসি ক্যামেরায় শিশু নাবিল খুনের পুরো ঘটনাটি রেকর্ড হয়। এই রেকর্ডের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে আয়া সুলতানা ফেরদৌসীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে খুনের ঘটনাটি চাপা দিতে গত ২৪ জুলাই কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (নম্বর-৪৫) দায়ের করে সিলেট সমাজসেবা কার্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ খুনের ঘটনা উদঘাটন করে।এ
ব্যাপারে সিলেট কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, অপমৃত্যুর মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই হত্যার ঘটনাটি সামনে আসে। তদন্তে ছোটমনি নিবাসের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। সেই ফুটেজে শিশুটিকে হত্যার প্রমাণ পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, `এ ব্যাপারে এসপি, ডিসি, সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ সবাইকে জানানো হয়। পরে ওই নারীকে আটকের সিদ্ধান্ত হলে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সমাজসেবা কার্যালয় কর্তৃপক্ষকে মামলা করতে বলেছি আমরা। তারা যদি মামলা না করেন তাহলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবে।'
তিনি আরও বলেন, `এ ঘটনা এখনও তদন্তাধীন আছে। তদন্তে যদি ছোটমনি নিবাসের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
এই বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক সন্দীপ কুমার সিংহ সিলেট মিররকে বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করেছি বিষয়টি। সেখানে তার সংশ্লিষ্টতা থাকায় ঐ আয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঢাকায় তদন্ত প্রতিবেদনও পাঠিয়েছি।
আরসি-১১