নিজস্ব প্রতিবেদক
আগস্ট ২২, ২০২১
০৫:৩১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ২২, ২০২১
০৫:৩১ পূর্বাহ্ন
সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকায় আগামীকাল সোমবার (২৩ আগস্ট) থেকে আবারও করোনার টিকার প্রথম ডোজ শুরু হতে যাচ্ছে। গত ১২ আগস্ট থেকে সিলেটে প্রথম ডোজ প্রদান বন্ধ থাকলেও অন্য তিন জেলায় টিকাদান অব্যাহত আছে। শনিবার (২১ আগস্ট) বিভাগে নতুন করে সিনোফার্মের আরও ১ লাখ ৫৮ হাজার ডোজ টিকা এসে পৌঁছেছে।
এদিকে, টিকাগ্রহীতাদের চাপ বাড়ায় সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় ৭টি কেন্দ্র বাড়াতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন।
চার জেলার সিভিল সার্জন সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সিলেট বিভাগে নতুন করে ১ লাখ ৫৮ হাজার ডোজ সিনোফার্মের টিকা আসে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ৫০ হাজার ডোজ, সুনামগঞ্জে ৩২ হাজার ৮০০ ডোজ, হবিগঞ্জে ৩৭ হাজার ৬০০ ডোজ এবং মৌলভীবাজারে ৩৭ হাজার ৬০০ ডোজ টিকা এসেছে। বিশেষ ফ্রিজার ভ্যানে করে এসব টিকা আসে। চার জেলার সিভিল সার্জন টিকা গ্রহণ করেন। পরে জেলা ইপিআই সেন্টারে টিকা মজুত রাখা হয়। এসব টিকা দিয়ে প্রথম ডোজ ও দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান চলবে। সিলেট ছাড়া বাকি তিন জেলায় আগে থেকেই প্রথম ডোজ ও দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান চলছে। তবে আগামীকাল সোমবার থেকে সিলেট জেলায় পুনরায় প্রথম ডোজ টিকাদান শুরু হবে।
চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাদানের মাধ্যমে সিলেটে শুরু হয় টিকাদান কার্যক্রম। ওই বছরের ৮ এপ্রিল থেকে সিলেটে শুরু হয় অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ প্রদান। তবে টিকা সঙ্কটের কারণে জুনে বন্ধ হয় টিকাদান কার্যক্রম। পরে ১৯ জুন থেকে মেডিকেল-নার্সিং শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার মাধ্যমে আবারও টিকাদান শুরু হয়। আর গত ১৩ জুলাই থেকে আবারও শুরু হয় গণটিকা কার্যক্রম। এ সময় সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় দেওয়া হয় মডার্নার টিকা এবং উপজেলায় দেওয়া হয় সিনোফার্মের টিকা।
এদিকে, গত ১০ আগস্ট থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান শুরু হয়। যারা এই টিকার দ্বিতীয় ডোজ আগে পাননি তারাই এখন এই টিকা পাচ্ছেন। তবে গত ১২ আগস্টের পর থেকে সিলেট জেলায় বন্ধ রয়েছে প্রথম ডোজ। ফলে নিবন্ধন করে টিকার অপেক্ষায় রয়েছেন নগরের প্রায় ৬০ হাজার বাসিন্দা। তবে প্রবাসীদের জন্য প্রথম ডোজ চালু থাকলেও গতকাল শনিবার থেকে সিলেটে প্রবাসীদেরকেও প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আর গত ১৪ আগস্ট থেকে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় মডার্নার দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদান শুরু হয়।
সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত সিলেট মিররকে বলেন, ‘সিলেটে শনিবার সিনোফার্মের ৫০ হাজার ডোজ টিকা এসে পৌঁছেছে। এই টিকা দিয়ে দ্বিতীয় ডোজের সঙ্গে প্রথম ডোজ টিকাও দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম সিলেট মিররকে বলেন, ‘আমরা আগামী সোমবার থেকে সিনোফার্মের টিকা দিয়ে আবারও প্রথম ডোজ প্রদান শুরু করছি। যারা আগে নিবন্ধন করে টিকা পাননি তাদের টিকা গ্রহণের বার্তা (ম্যাসেজ) দেওয়া হবে। যারা আগে নিবন্ধন করেছেন তাদের আগে ম্যাসেজ দেওয়া হবে।’
সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন বলেন, ‘শনিবার জেলায় ৩২ হাজার ৬০০ ডোজ টিকা এসেছে। এই টিকা দিয়ে প্রথম ডোজ ও দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান চলবে।’
এদিকে, সিলেট নগরে বর্তমানে ৩টি কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম চলছে। তবে এসব কেন্দ্রে টিকাগ্রহীতাদের চাপ অনেক বেশি। এতে করে টিকাগ্রহীতা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ অবস্থায় নতুন ৭টি কেন্দ্র বাড়াতে সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। এর আগে ৯টি কেন্দ্র চেয়ে চিঠি পাঠালেও এখনও অনুমোদন পাওয়া যায়নি।
সিসিকের তথ্য অনুযায়ী প্রস্তাবিত টিকাদানকেন্দ্রগুলো হলো- মাতৃমঙ্গল হাসপাতাল, ধোপাদিঘিরপাড় বিনোদিনী নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বাগবাড়ি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, তোপখানা নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কাজীটুলা সূর্যের হাসি ক্লিনিক, শাহজালাল উপশহর সীমান্তিক নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং কদমতলী নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
এ বিষয়ে ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কেন্দ্র কম হওয়ায় টিকাগ্রহীতাদের চাপ বেশি থাকে। তাই আমরা নতুন ৭টি কেন্দ্র বাড়াতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছি। নতুন কেন্দ্রগুলো অনুমোদন পেলে সুবিধা হবে। চাপও কমবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হয়ত আমাদের কেন্দ্রগুলো অনুমোদিত হবে। তবে ইতোমধ্যে যারা ওসমানী ও পুলিশ হাসপাতাল কেন্দ্রে টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন তাদের সেখানেই টিকা দিতে হবে। কারণ বর্তমানে আমাদের কাছে স্থান পরিবর্তন করে টিকার বার্তা পাঠানোর সুযোগ নেই।’
এনএইচ/আরসি-০১