সিলেটে ১৫ বছর পর চালু হলো শেখ হাসিনা শিশু পার্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক


সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১
০৮:৩৬ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১
০৮:৩৬ অপরাহ্ন



সিলেটে ১৫ বছর পর চালু হলো শেখ হাসিনা শিশু পার্ক

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) উদ্যোগে দক্ষিণ সুরমা এলাকার আলমপুরে নির্মিত ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্ক’ চালু হয়েছে। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নামকরণ জটিলতায় নির্মাণ কাজ আটকে থাকার প্রায় ১৫ বছর পর চালু হলো পার্কটি। 

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, পরীক্ষামূলক চালু অবস্থায় যেসব সমস্যা চিহ্নিত হবে তা সমাধানের পরই পার্কটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হবে।

এরই মধ্যে পার্কে বসানো হয়েছে বেশ ক’টি রাইড। প্রথম দিন ২০ টাকা প্রবেশ ফি দিয়ে পার্কে ঢোকার সুযোগ দেওয়া হয় জনসাধারণকে। পার্কে শিক্ষার্থীদের সমাগম ছিল লক্ষ্যণীয়।

শেখ হাসিনা শিশু পার্কে বসানো রাইডগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- রোলার কোস্টার, ম্যাজিক প্যারাস্যুট, মনোরেল, ভিজিটিং ট্রেন, রেলগাড়ি, পাইরেট শিপ, স্নিপার, সিসরাইড, বোট, টুইস্টার, বাম্পার কার, ফ্রুট ফ্লাইং চেয়ার, নাগরদোলা, ফ্যারসেল, জাম্পিং ফ্রগ।

সিসিক সূত্রে জানা যায়, শিশুদের বিনোদনের জন্য ‘মনোরেল’ ও ‘ম্যাজিক প্যারাসুট’সহ বেশ কয়েকটি রাইড বসানো হয়। ম্যাজিক প্যারাসুটে একসঙ্গে ১৮ জন ৭০ ফুট উঁচুতে উঠানামা করতে পারবেন। মনোরেলে মাটি থেকে ১৫ ফুট উচ্চতায় এক হাজার ৩৬১ ফুট দূরত্ব অতিক্রম করা যাবে। এটি থাকবে পার্কের চারপাশজুড়ে।

ভিজিটিং ট্রেন দিয়ে একসঙ্গে ২৬ জনকে নিয়ে চারশ’ ২০ ফুট ঘুরা যাবে। ৯টি রাইড ছাড়া বাকিগুলোতে বিনা খরচে চড়া যাবে।

সুরমা নদীর তীরবর্তী এই হওয়ায় পার্কের উত্তর অংশে নদীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। নদী থেকে সিঁড়ি বেয়ে উঠা যাবে পার্কে। বিনোদনের জন্য এটি হতে পারে বড় আকর্ষণ। সিলেট মহানগরে পর্যাপ্ত বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্কটি শিশু-কিশোরদের জন্য বুক ভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ তৈরি করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

২০০৬ সালে এম সাইফুর রহমান তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী থাকা অবস্থায় দক্ষিণ সুরমার হবিনন্দী মৌজার ৩ দশমিক ৭৭ একর ভূমির ওপর শিশু পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রথম দফায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পার্কের জন্য ১৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০০৬ সালের জুলাই থেকে ২০০৮ সালের জুন পর্যন্ত বরাদ্দ থেকে ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা খরচ করে সিটি করপোরেশন। এ টাকায় জমি অধিগ্রহণ, মাটি ভরাট, অভ্যন্তরীণ লাইটিং, গাছের চারা লাগানো এবং সীমানা প্রাচীর ও টিকিট কাউন্টার নির্মাণ কাজ করা হয়।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পুরো কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় ২০০৮ সালের জুলাইয়ে বরাদ্দের ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ফেরত যায়। টাকা ফেরত যাওয়ায় রাইড বসানো ও সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের সঙ্গে পার্কের সংযোগ সড়ক (এপ্রোচ রোড) নির্মাণসহ পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়নি।

সিসিকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে আবারও পার্কটির কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৫ সালের ৬ এপ্রিল সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত পার্কটির উন্নয়ন কাজ শেষ করতে তৎকালীন স্থানীয় সরকারমন্ত্রীকে একটি ডিও লেটার (আধা সরকারি পত্র) দেন। ডিও লেটারের সূত্র ধরে পার্কটির নামকরণ হয় ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্ক’।

২০১৭ সালের ৭ নভেম্বর থেকে পার্কে রাইড বসানোর কাজ শুরু হয়। নেওয়া হয় ৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প। প্রকল্পের আওতায় চীনা একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে পার্কে রাইড বসানোর কাজ করে। অবশেষে, ১৫ বছর পর পার্কটি চালু হলো।

এসএইচ/বিএ-১৭