সিলেটে শনাক্তের হার নেমেছে ১ শতাংশে

নিজস্ব প্রতিবেদক


অক্টোবর ০২, ২০২১
০৪:৩১ অপরাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ০২, ২০২১
০৪:৩১ অপরাহ্ন



সিলেটে শনাক্তের হার নেমেছে ১ শতাংশে
# আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে শনাক্ত কমেছে ৭ গুণ

সিলেটে করোনা সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার নেমেছে ১ শতাংশে। এদিকে সেপ্টেম্বর মাসে বিভাগে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৬১১ জনের। যা গত আগস্ট মাস থেকে ৭ গুণ কম।  

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত) বিভাগে ৭৪৪টি নমুনায় ১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১ দশমিক ৬১ শতাংশ। এর আগে গত জুলাইয়ে শনাক্তের হার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশের কোটায় ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্তদের মধ্যে সিলেট জেলায় ৭ জন, হবিগঞ্জে ৩ জন এবং মৌলভীবাজার জেলায় ২ জন আছেন। 

গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৩ জন। এদের মধ্যে সিলেট জেলায় ১১ জন, হবিগঞ্জে ১০ জন এবং মৌলভীবাজার জেলায় ১২ জন। এ সময় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন ১ জন। তিনি সিলেট জেলার বাসিন্দা। 

এদিকে সেপ্টেস্বরে বিভাগে নতুন করে ১ হাজার ৬১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগে আগস্টে শনাক্ত হয়েছিল ১২ হাজার ৫৩১ জন। অর্থাৎ চলতি মাসে শনাক্ত কমেছে ৭.৭২ গুণ। সেপ্টেম্বরে শনাক্তদের মধ্যে সিলেট জেলায় ৯৫২ জন, সুনামগঞ্জের ১৪৯ জন, হবিগঞ্জের ১৭১ জন এবং মৌলভীবাজার জেলায় ৩৩৯ জন। 

এ সময় করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৩৪৪ জন। সুস্থদের মধ্যে সিলেট জেলায় ১ হাজার ৯২৩ জন, সুনামগঞ্জে ১ হাজার ৭৮ জন, হবিগঞ্জে ৩১২ জন এবং মৌলভীবাজার জেলায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৩৪ জন। এদিকে সেপ্টেম্বরে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৮ জন। মৃতদের ৮৭ জনই সিলেট জেলার বাসিন্দা। বাকি একজন হবিগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। 

গত বছরের ৫ এপ্রিল সিলেট প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম মৃত্যু ঘটে ১৫ এপ্রিল। ওই বছরের এপ্রিলে করোনা শনাক্ত হয় ১১০ জনের, মৃত্যু হয় ৩ জনের। মে মাসে শনাক্ত হয় ৯৩০ জনের, মৃত্যু হয় ১৬ জনের। জুনে শনাক্ত হয় ৩ হাজার ৫৭৪ জনের, মৃত্যু হয় ৫৮ জনের। জুলাই মাসে শনাক্ত হয় ৩ হাজার ৩০০ জনের, মৃত্যু হয় ৬৯ জনের। আগস্ট মাসে শনাক্ত হয় ২ হাজার ৯৭৪ জন, মৃত্যু হয় ৪১ জনের। সেপ্টেম্বরে শনাক্ত হয় ১ হাজার ৭৮২ জন, মৃত্যু হয় ৩১ জনের। অক্টোবরে শনাক্ত হয় ১ হাজার ৯ জনের, মৃত্যু হয় ১৩ জনের। নভেম্বরে শনাক্ত হয় ৯৬৭ জনের, মৃত্যু হয় ১৩ জনের। ডিসেম্বরে শনাক্ত হয় ৮৪৭ জনের, মৃত্যু হয় ১৯ জনের। 

এ বছরের জানুয়ারিতে শনাক্ত হয়েছে ৫০৯ জনের, মৃত্যু হয় ১২ জনের। ফেব্রæয়ারিতে শনাক্ত হয় ৩০৩ জনের, মৃত্যু হয় ৩ জনের। মার্চে শনাক্ত হয় ১ হাজার ১৮৬ জনের আর মৃত্যু হয় ১২ জনের। এপ্রিলে করোনা শনাক্ত হয় ৩ হাজার ২০১ জন আর মৃত্যু হয় ৬০ জনের। মে মাসে বিভাগে করোনা শনাক্ত হয় ২ হাজার ৪ জনের আর মৃত্যু হয় ৫৯ জনের। জুনে ৩ হাজার ২৮৫ জনের করোনা শনাক্ত ও ৬৯ জনের মৃত্যু হয়। জুলাই শনাক্ত হয় সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৪৭১ জনের আর মৃত্যু হয় ২২৪ জনের আর আগস্টে শনাক্ত হয় ১২ হাজার ৫৩১ জন আর মৃত্যু হয় ৩৭৩ জনের। 

গত বছরের ৫ এপ্রিল সিলেটে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ঐ বছরের মে থেকে জুনে শনাক্ত ও মৃত্যু বাড়তে থাকে। তবে, আগস্টের পর থেকে তা ছিল নি¤œমুখী। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মার্চের শেষ দিকে আবারও বাড়তে থাকে। এপ্রিলের পর সরকারি বিধি-নিষেধে সংক্রমণের হার কিছুটা কমলেও গত ঈদুল ফিতরের পর আবারও সংক্রমণ বাড়তে শুরু হয়। জুলাইয়ে তা বাড়ে আশঙ্কাজনক হারে। 

এদিকে, জুলাইয়ে সংক্রমণের হার চ‚ড়ায় থাকায় সিলেটের সব আইসিইউ ও সাধারণ শয্যা রোগীতে পূর্ণ হয়ে যায়। বিশেষ করে সিলেট মহানগরের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে শয্যা পাওয়া দুরূহ হয়ে উঠে। রোগীর চাপে হাসপাতালগুলো শয্যা ও আইসিইউ বাড়িয়েও রোগী জায়গা দিতে পারছিল না। তবে মধ্য আগস্ট থেকে সিলেট কমতে শুরু করেছে করোনা সংক্রমণ। সংক্রমণ কমায় হাসপাতালে রোগীর ভর্তির চাপও এখন অনেক কম। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, সিলেটে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে। শনাক্ত রোগীর পাশাপাশি হাসপাতালেও রোগীর সংখ্যা কমছে। তবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও স্বাস্থ্যবিধিতে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না বলেও জানান তিনি।

এনএইচ/আরসি-০৭