নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ০৫, ২০২১
১২:৪৬ পূর্বাহ্ন
আপডেট : অক্টোবর ০৫, ২০২১
১২:৪৮ পূর্বাহ্ন
দেশের একমাত্র জলাবন হিসেবে পরিচিত সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রাতারগুলে চাঁদাবাজির অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করা হয়েছে। সোমবার (৪ অক্টোবর) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন এমনটা জানিয়েছেন রাতারগুল গ্রামের বাসিন্দারা।
তারা দাবি করেছেন, সম্প্রতি পর্যটকদের গাড়িতে হামলাকারী ফতেহপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ফখর উদ্দিনের ইন্দনে পরিকল্পিতভাবে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মিনহাজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিখ্যাত রাতারগুল গ্রামের অধিবাসী। রবিবার সিলেটে আয়োজিত দুটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের হেয় প্রতিপন্ন করে বক্তব্য রেখেছেন বাগবাড়ী গ্রামের আব্দুর রশিদ। তিনি রাতাগুল ঘাটের কোন মাঝি নন। তার বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
মিনহাজ আরও বলেন, ‘সম্প্রতি ফখর মেম্বার রাতারগুল ঘাটে পর্যটকবাহী নৌকা থেকে প্রতি সপ্তাহে ৪ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করলে আমরা নৌকার মাঝিরা পরাগতা প্রকাশ করি। এতে ফখর মেম্বার ক্ষিপ্ত হয়ে লোকজন দিয়ে রাতারগুলগামী পর্যটকবাহী গাড়ি আটকে চাঁদা দাবি করে। পর্যটকবাহী গাড়ি চাঁদা না দিলে পর্যটকদের দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে তার লোকজন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।’
এসময় তিনি কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন, তারা হচ্ছেন- ফখর উদ্দিন মেম্বার, আব্দুর রশিদ, আরমান আলী, মনশাদ উদ্দিন, আব্দুল আহাদ, কামরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ মিয়া, আব্দুল ওয়াহিদ, আইযুব আলী, আব্দুল মতিন, আব্দুল মালিক, কয়ছর আহমদ উরফে বুতু, শরিফ উদ্দিন ও নজমুল হক এসব ঘটনায় জড়িত। এ ঘটনায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা বক্তব্য দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
লিখিত বক্তব্যে মাঝিদের পক্ষ থেকে মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ‘রাতারগুলবাসীর বন বিভাগের সহযোগিতায় ঘাট প্রতিষ্ঠা করে নৌকা চলিয়ে জীবিকা নির্বাহের পথ তৈরি করি। এই ঘাটে ১৩২টি নৌকা নিয়ে প্রায় ৩০০ পরিবারের লোকজন জীবিকা নির্বাহ করে।’
রবিবারের সংবাদ সম্মেলনে বাগবাড়ি ও রামনগর গ্রামের যে ২৬টি নৌকা রাতারগুল ঘাটে নৌকা চালানোর দাবি তোলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক দাবি করে তিনি বলেন, ‘তারা চৌরঙ্গীঘাট বাগবাড়ী মৌজার ঘাটের মাঝি। বাগবাড়ী গ্রামের আব্দুর রশীদেরা নৌকা চালায় এবং ঘাট পরিচালনা করেন। এখানে তাদের কর্মসংস্থান আছে। অন্যদিকে, চাাঁদাবাজ মেম্বার রাতারগুলঘাটও তার বাহিনী দ্বারা পরিচালিত করার নিমিত্তে এই অপপ্রচার। আমাদের রাতাগুল ঘাটে ১৩২টি নৌকা রাতারগুলের সুষ্ঠু ভাবে চলছে। যা উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিতে আছে।’
‘বাগবাড়ী ও রামনগর গ্রামের মাঝিরা চৌরঙ্গীরঘাট ছেড়ে এখানে এসে নৌকা চালানোর অযৌক্তি দাবি আমরা মেনে নিতে পারি না। একইভাবে চৌরঙ্গির ঘাটে রাতারগুল গ্রামের কোন মাঝিকে নৌকা চালাতে দেওয়া হয় না।’- যোগ করেন তিনি।
উপজেলা যুবলীগ নেতা জুবায়ের আহমদকে জড়িয়ে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে দাবি করে মিনহাজ আরও বলেন, ‘আমরা তাকে সবসময় পাশে পাই। ঘাটের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে তিনি আমাদের সহযোগিতা দেন। তিনি আগামী নির্বাচনে ইউপি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন। আর তাই চাঁদাবাজ ফখর মেম্বার প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে তার বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন।’
বাগবাড়ী ও রামনগর গ্রামের মাঝিদের অভিযোগের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি ট্রিপের ৭৫০ টাকা থেকে মাঝিদের মাত্র ২শ’ টাকা দেওয়া এবং বাকি টাকা দিয়ে সাংবাদিক ও পুলিশ ম্যানেজ করার নামে আমরা আত্মসাত করি বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে তাও সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা ঘাটে নৌকা চালাই। আমাদের ট্রিপের টাকা সাথে সাথেই মাঝিরা পাই।’ অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি রাতারগুল গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে সরকারের উচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের দাবি জানান।
এসএইচ/বিএ-০৩