‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ সম্মাননা পেলেন আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী

সিলেট মিরর ডেস্ক


অক্টোবর ০৭, ২০২১
০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ০৭, ২০২১
০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন



‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ সম্মাননা পেলেন আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী

বৃটেনের সম্মানজনক ‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ সম্মাননা পেয়েছেন সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের কৃতীসন্তান কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী জেপি।

মঙ্গলবার লন্ডনের গিল্ডহলে এক অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মর্যাদার এ সম্মাননা তার হাতে তুলে দেয়া হয়। কমিউনিটিতে অবদান ও কর্মক্ষেত্রে সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। এটি লন্ডনের সর্বোচ্চ সম্মাননার স্বীকৃতি এবং আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক মর্যাদাপূর্ণ।

ওই অনুষ্ঠানে ক্লার্ক টু দি চ্যাম্বারলেইন মুরে ক্রেইগের আহ্বানে ‘ডিক্লারেশন অব দি ফ্রিম্যান’ পড়তে দেন আহমেদ উস সামাদ চৌধুরীকে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বগণ। পরে সপরিবারে উপস্থিত আহমেদ উস সামাদ চৌধুরীর হাতে সম্মাননাটি তুলে দেন ক্লার্ক টু দি চ্যাম্বারলেইন মুরে ক্রেইগ।

সম্মাননা পাওয়ার পর আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী জেপি বলেন, আমি নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেছি। কোনোদিন কোনো পজিশন চাইনি। আমার এই সম্মাননা কমিউনিটির মানুষকে কল্যাণমূলক কাজে উৎসাহিত করবে- এটাই আমার অর্জন।

প্রায় ৩০০ বছর আগে এই সম্মানজনক পুরস্কার চালু করা হয়। বৃটেনের বর্তমান রাজপরিবারের ১১ জন সদস্য এখন পর্যন্ত এ পুরস্কার পেয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন, প্রিন্স জর্জ-ডিউক অব ক্যামব্রিজ, প্রিন্সেস ডায়না, প্রিন্স চার্লস-প্রিন্স অব ওয়েলস, প্রিন্স অ্যাডওয়ার্ড-আর্ল অব ওয়াসেক্স প্রমুখ।

বিখ্যাত বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী উইন্সটন চার্চিল, মার্গারেট থেচারসহ ডিউক অব ওয়েলিংটন, নেলসন ম্যান্ডেলো, জওহর লাল নেহেরু, আর্চ বিশপ অব ক্যান্টারবেরি, জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব কফি আনানও এ সম্মাননা পেয়েছেন।

১৯৫৬ সালে সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জের নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী। তার পিতা দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী ছিলেন একজন সমাজসেবক। আহমেদ উস সামাদ নিজ গ্রামের দুর্গাপুর প্রাইমারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ফেঞ্চুগঞ্জ ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি হাই স্কুলে ও পিপিএম হাইস্কুলে পড়াশুনা করেন।

তিনি বৃটেনে পাড়ি জমান ১৯৭২ সালে। সেখানে ঐতিহ্যবাহী বাথ শহরের সিটি অফ বাথ কলেজ থেকে ও-লেভেল পাস করার পর ব্যবসা প্রশাসন বিষয়ে প্রথম ভর্তি হন সাউথ বৃস্টল কলেজে। পরে এ বিষয়ে উচ্চ ডিগ্রি শেষ করেন সিটি অফ বাথ কলেজে। উভয় কলেজে তিনি স্টুডেন্ট ইউনিয়নে সহ-সভাপতি ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। উচ্চ শিক্ষা শেষ করেই আহমেদ চৌধুরী আত্মনিয়োগ করেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠায়।

১৯৯১ সাল থেকে ‘কমনওয়েলথ জাজেস অ্যান্ড ম্যাজিস্ট্রেট এসোসিয়েশন’-এর আজীবন সদস্য আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী। তিনি ‘বৃটেন-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতি’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ১৯৯১ সালে বৃটেনে বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্য থেকে ‘জাস্টিস অফ পিস (জেপি)’ হিসেবে নিয়োগ পেয়ে বাথ বেঞ্চের একজন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

১৯৭৫ সালে আহমেদ উস সামাদ ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটিতে প্রথম এশিয়ান ছাত্র সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়াও তিনি নিজের নামে আর্থিক ঋণ নিয়ে ১৯৯০ সালে ব্রিস্টল শহরে বাঙালি কমিউনিটির জন্য প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ হাউস এবং ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ সেন্টার।

তিনিই প্রথম বিলেতে ব্রডশিট মাল্টিকালার পত্রিকা প্রকাশ করেন। ২০০২ সালে ব্রিস্টলে নান্দনিক শাহজালাল ইসলামিক সেন্টার অ্যান্ড মসজিদ প্রতিষ্ঠায় ছিল অসামান্য অবদান। তিনি ১৯৯৫ সালে সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নিউ ডিল প্রোগ্রামের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।

আরসি-০১