সিলেটের ওসমানীতে অবৈধ পার্কিং ও অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ড উচ্ছেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক


অক্টোবর ০৮, ২০২১
০৬:২১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ০৮, ২০২১
০৬:২১ পূর্বাহ্ন



সিলেটের ওসমানীতে অবৈধ পার্কিং ও অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ড উচ্ছেদ

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অবৈধ পাকিং ও অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় হাসপাতাল এলাকায় থাকা অবৈধ পার্কিং এবং অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) সকালে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেজবাহ উদ্দিন। 

জানা গেছে, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রবেশপথের ঠিক ডানপাশে দীর্ঘদিন ধরে পার্কিং জোন গড়ে তোলা হয়েছিল। এ পার্কিং ঘিরে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালে প্রবেশ করা প্রতিটি যানবাহনকে দিতে হত পার্কিং ফি। এতে করে হাসপাতালে প্রবেশ করা যানবাহনকে অতিরিক্ত ভাড়া পরিশোধ করতে হত রোগী ও রোগীর স্বজনদের। 

এছাড়া হাসপাতাল এলাকায় অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ড হাসপাতালের নিত্যদিনের সমস্যা। প্রায়ই হাসপাতালে আসা রোগীদের কাছ থেকে এসব অ্যাম্বুলেন্স চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করত বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে অবৈধ পার্কিং ও স্ট্যান্ড উচ্ছেদের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে অভিযানে নামে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের প্রবেশ মুখের পাশে থাকা পার্কিয়ের মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। পরে আদালত এই অবৈধ পার্কিং উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। সম্প্রতি হাসপাতাল কর্তপৃক্ষের কাছে এ নির্দেশনার চিঠি আসে। পরে এ চিঠি সিলেটে পুলিশ প্রশাসনকে দেওয়া হয়। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনও এই অবৈধ পার্কিং উচ্ছেদে নির্দেশনা দেন। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে একটি বুলডোজার দিয়ে হাসপাতালের প্রধান গেইটের পাশে থাকা টিনের তৈরি অবৈধ পার্কিং ভেঙ্গে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ডও উচ্ছেদ করা হয়। এ সময় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ব্রায়ান বঙ্কিম হালদার, উপ-পরিচালক মাহবুব আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

এ বিষয়ে হাসপাতালের উপ-পরিচালক মাহবুব আলম সিলেট মিররকে বলেন, ‘হাসপাতালে থাকা অবৈধ পার্কিং উচ্ছেদে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। চলতি বছরের ৩০ জুন এ পার্কিংয়ের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর থেকেই এটি অবৈধভাবে হাসপাতালে আসা যানবাহনের কাছে পার্কিং ফি আদায় করছে। সম্প্রতি এ পার্কিং উচ্ছেদে আদালতের নির্দেশের কপি হাসপাতালে আসে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ অবৈধ পাকিংয়ের কারণে হাসপাতালে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনদের অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হত। তবে এখন থেকে তা আর দিতে হবে না। সরকারের নির্দেশনা পেলে হাসপাতালের পার্কিং স্পেস ইজারা দেওয়া হবে।’

আর পার্কিং জোনের পরিচালক মীর্জা এম এস হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘২০০৭ সাল থেকে চুক্তি অনুযায়ী পার্কিং জোন চালিয়ে আসছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবির প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত পরিশোধিত পাওনাও জমা রয়েছে। চলতি বছরের ২৭ জুন তিনি হাসপাতাল কতৃপক্ষের কাছে প্রাপ্য বকেয়া টাকা ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯৬ টাকা (অতিরিক্তি পরিশোধিত পাওনা) আদায় এবং অনাদায়ে সময় বর্ধিত করণের জন্য আদালতের রায় প্রার্থনা করেন। কিন্তু হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার সকালে জোরপূর্বক পার্কিং জোন উচ্ছেদ করা হয়েছে।’ এ ঘটনায় তিনি উচ্চ আদালতের দারস্থ হবেন বলেও জানান। 

এ বিষয়ে হাসপাতালের উপ-পরিচালক মাহবুব আলম বলেন, ‘তিনি এর আগে ২০১৫ সালেও পাওনা টাকার জন্য উচ্চ আদালতে একটি মামলা করেছিলেন। তবে সেটা বাতিল হয়ে যায়। সম্প্রতি আবারও তিনি মামলা করেছেন। আমরা আইনজীবীর মাধ্যমে এর জবাব দিয়েছি।’

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেজবাহ উদ্দিন সিলেট মিররকে বলেন, ‘অবৈধ পার্কিং ও অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ড উচ্ছেদে ওসমানী হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এ সময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা রেকার করা হয়েছে।’

এনএইচ/আরসি-০৪