সিলেটে পূজোর কেনাকাটায় শেষ মূহুর্তের ব্যস্ততা

নিজস্ব প্রতিবেদক


অক্টোবর ১০, ২০২১
০৫:২৮ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ১০, ২০২১
০৫:২৮ পূর্বাহ্ন



সিলেটে পূজোর কেনাকাটায় শেষ মূহুর্তের ব্যস্ততা

মাঝে মাত্র আর কয়েকদিন। তার পরই শারদীয় দুর্গাপূজা। দুয়ারে কড়া নাড়ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। করোনা ভীতিকে উড়িয়ে দিয়ে সবাই এখন ব্যস্ত শেষ মুহ‚র্তের পূজোর কেনাকাটায়। সিলেটের দোকানপাট ও শপিং মলগুলোতে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষরা ছুটছেন পূজোর কেনাকাটা সারতে। গত বছরের পূজোর চেয়ে এবার ক্রেতার সংখ্যা বাড়ায় খুশি বিক্রেতারা। তবে তরুণ-তরুণীদের ঝোঁক বেশি অনলাইন কেনাকাটায়। 

ছুটির দিনগুলোতে সাধারণত সিলেট নগরের দোকানপাট বন্ধ থাকে। তবে দুয়ারে দুর্গাপূজা বলে গতকাল শুক্রবার সিলেট নগরের বিপণীবিতানসহ দোকানপাট খোলা রাখতে দেখা গেছে। 

গত দুই দিন সিলেট নগরের মহাজনপট্টি, শুকরিয়া মার্কেট, মিতালী ম্যানশন, মধুবন সুপার মার্কেট, বøু ওয়াটার শপিং সিটি, হাসান মার্কেটের দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে মানুষের কেনাকাটার ভিড়। পাশাপাশি নগরের ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কাপড় ও জুতার দোকানগুলোতেই বেশি ভিড় চোখে পড়েছে। তবে বিপণিবিতানগুলোতে নারী ক্রেতাদের পাশাপাশি শিশুদের উপস্থিতি বেশি। সামর্থের মধ্যে পছন্দের জামা, কাপড়, শাড়ি, জুতা ও প্রসাধনী সামগ্রী কিনে খুশিমনে বাড়ি ফিরছেন সবাই। 

নগরের জিন্দাবাজারের শুকরিয়া মার্কেটে এসেছিলেন দিপীকা মালাকার। আলাপকালে তিনি বলেন, ‘মা দুর্গাকে বরণ করতে লাল-সাদার সনাতনী সাজ অবশ্যই থাকা চাই। সে অনুযায়ীই আমি লাল পাড়ে সাদা জামদানি শাড়ি কিনতে এখানে এসেছি। আর এটাই তো সময় কেনাকাটা করার। এখন কেনাকাটা না করলে তো আর করাই হবে না। দুপুরে এসেছিলাম একটু ফাঁকা থাকে তাই। সন্ধ্যার পর তো মানুষের চাপ বেশি থাকে।’

বিপণীবিতানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, তরুণী-কিশোরীরা লেহেঙ্গা, থ্রি পিস কেনায় বেশি আগ্রহী। এ ক্ষেত্রে তাদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে থ্রি পিস। নারীদের নজর বেশি শাড়ির দিকেই। পুরুষদের জন্য নতুন ডিজাইনের পাঞ্জাবি দেখা গেছে ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে। 

নয়াসড়ক এলাকার বারনী বিপণী বিতানে পূজোর বাজার করতে এসেছিলেন পলি দাশ। পূজোর কেনাকাটা আগেই শেষ। তবে কয়েকটি কাপড় কেনা বাকি ছিল। সেগুলো কিনতে এসেছিলেন বলে আলাপকালে জানান। তবে বেশিরভাগ কেনাকাটা অনলাইনে করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, অনলাইনের বাজারগুলো আগের চেয়ে অনেক বিশ্বস্ত হয়ে উঠেছে। পণ্যের মানগুলোও ভালো। তাই পছন্দের পণ্যগুলো অনলাইনে অর্ডার দিয়ে দেই। 


পলি দাশের মতো তরুণীদের ঝোঁক অনলাইনে থাকলেও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এবারের পূজায় ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। নগরের নয়াসড়ক এলাকার বারণী বিপণী বিতানের ব্যবস্থাপক স্বাধীন আহমদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, করোনার কারণে বিক্রিবাট্টায় স্বাভাবিক সময়ের যে ভাটা পড়েছিল তা কেটেছে। পাশাপাশি গত বছরের পূজার চেয়ে ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। গতবার পূজায় তো মানুষের উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। সে হিসেবে এবার ক্রেতাদের উপস্থিতি অনেক বেশি। 

একই সুরে বললেন কমলা ভান্ডারের ব্যবস্থাপক সেলিনা আক্তার। সিলেট মিররকে তিনি বলেন, করোনা যে ধাক্কা দিয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে। তবে পূজাকে সামনে রেখে ক্রেতাদের আগমন একটু হলেও আমাদের আশা জাগাচ্ছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্রেতার সংখ্যা থাকে সীমিত। তবে বিকেল গড়ালেই ক্রেতাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার দিকেই ক্রেতাদের ভিড়টা সবচেয়ে বেশি থাকে। 

তবে তায়েফ শড়িঘরের ব্যবস্থাপক মাহবুব আলমের কণ্ঠে হতাশার সুর। সিলেট মিররের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, করোনার কারণে দুই বছরে যে ক্ষতি হয়েছে, সে ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া মানুষের হাতেও এখন খুব বেশি অর্থ নেই। পূজা উপলক্ষে মানুষের বাজেটও থাকে সীমিত। জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে। তাই ক্রেতার উপস্থিতিও সেভাবে নেই। 

অনলাইন শপগুলোর কারণে আরও ক্রেতার উপস্থিতি কমেছে উল্লেখ করে এই ব্যবসায়ী বলেন, অনলাইন শপগুলোতে মানুষের ঝোঁক বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতার সংখ্যা কমেছে। অনলাইনে একই ডিজাইনের ও কালারের কাপড় অনেক সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়। তাই মূল্য দেখেই ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। অথচ কাপড়ের মান যাচাইয়ের কোনো সুযোগ সেখানে থাকে না। যদিও কিছু ক্রেতা আসেন, তবে তা আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী না।

আরসি-০১