শেষ হলো অনন্ত বিজয় হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

নিজস্ব প্রতিবেদক


জানুয়ারি ২১, ২০২২
০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ২১, ২০২২
০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন



শেষ হলো অনন্ত বিজয় হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

সিলেটে বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ (৩২) হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীনের আদালতে তার অবশিষ্ট সাক্ষ্য প্রদান করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার সিআইডির সোহেল রানা, মামলার আইটি ফরেনসিক মাসুদ সিদ্দিকী এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরমান আলী সাক্ষ্য দেন। তবে আরমান আলীর জবানবন্দি শেষ হলেও জেরা বাকি ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে আরমান আলীর জেরা সম্পন্ন হয়। আগামী ২৬ জানুয়ারি আসামি পক্ষের আত্মপক্ষ সমর্থন অনুষ্ঠিত হবে। এর পরেই মামলাটি যুক্তিতর্কে পৌঁছাবে।

বাদী পক্ষের আইনজীবী প্যানেল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৮ মে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। আলোচিত এ মামলায় ২৯ সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। বাকি ৫ জনের মধ্যে দুইজন দেশত্যাগ করেছেন। বাকিরা মামলার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়।

বাদীপক্ষের মামলা পরিচালনায় গঠিত আইনজীবী প্যানেলের সদস্য মোহাম্মদ মনির উদ্দিন সিলেট মিররকে বলেন, ‘মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রæতই মামলার রায় ঘোষণা তারিখ নির্ধারিত হবে।’

এদিকে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন অনন্ত বিজয় দাশের স্বজনরা। অনন্ত বিজয়ের ভগ্নিপতি অ্যাডভোকেট সমর বিজয় সী শেখর সিলেট মিররকে বলেন, ‘প্রায় আড়াই বছর এ ধরে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। তবে অবশেষে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে তাতে স্বস্তি প্রকাশ করছি। আশা করছি দ্রæতই রায় ঘোষণা দিন নির্ধারিত হবে।’

প্রসঙ্গত, গত ২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারের কলাপাড়া এলাকার নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত বিজয় দাশ। বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি তিনি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন অনন্ত।

হত্যাকাণ্ডের দিন রাত অনন্তের বড় ভাই রতেœশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।

মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের মধ্যে কানাইঘাটের আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭) ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫) পলাতক। কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এ বি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪) কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়া সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় বসবাসকারী সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান (৩০) ও কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫) কারাগারে আছেন। ফারাবী ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলারও আসামি।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবীরা জানান, গত ১৯ সালের ৭ মে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। কিন্তু সাক্ষীদের অনুপস্থিতির কারণে বারবার পেছানো হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। দীর্ঘদিন সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলার পর ২০২০ সালে মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।

এনএইচ/আরসি-০৪