নাটকীয়তা ছড়িয়েও শেষ ওভারে হারল সিলেট

ক্রীড়া প্রতিবেদক


ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২২
১০:৫৯ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২২
১০:৫৯ অপরাহ্ন



নাটকীয়তা ছড়িয়েও শেষ ওভারে হারল সিলেট

সিলেটের ব্যাটারদের দাপট, বোলাররা শুরুতে বজায় রেখেছিলেন। তবে শেষে গিয়ে যেন খেই হারিয়ে ফেললেন। তাতে নাটকীয়তা ছড়ানো এক ম্যাচে আশা জাগিয়েও জয় পাওয়া হয়নি সিলেট সানরাইজার্সের। ঘরের মাঠে নিজেদের শেষ ম্যাচে কুমিল্লার কাছে তারা হেরে গেছে ৪ উইকেটে। 

নাটকীয়তার আগে উত্তেজনায় পারদ ছড়িয়েছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ষোলতম ওভারের শেষ বলে ইমরুল বোপারাকে ছয় মারলে ব্যবধান কমে নেমে আসে ২৪ বলে ৪০ রানে। ব্যাটারদের স্বর্গরাজ্য সিলেটের মাঠে তখন ম্যাচের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জয়ের পাল্লা অনেকটাই ভারি হয় কুমিল্লার দিকে। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলেই ইমরুলকে বোল্ড করে ফেরান নাজমুল অপু। তাতেও দমে যায়নি কুমিল্লা।

সিলেটের পালে হাওয়া লাগে ১৮তম ওভারে। শুরু হয় ম্যাচের নাটকীয়তা। আলাউদ্দিন বাবু পরপর দুই বলে ফেরান মাহমুদুল ও আরিফুলকে। তাতে জয়ের খুব কাছেই পৌছে যায় সিলেট। তবে শেষ পর্যন্ত পেরে উঠল না সিলেট।

ইনিংসের শেষ ওভারটি অপেক্ষা করছিল আলাউদ্দিন বাবুর হ্যাটট্রিকের। তবে তাকে আশাহত করেন আবু হায়দার রনি। ওভারের পঞ্চম বলে সব ফিল্ডারদের অফে নিয়ে আসেন অধিনায়ক বোপারা। ততক্ষণে দুই দলের সংগ্রহ সমানে সমান। আবু হায়দার রনি আলাউদ্দিন বাবুর বলটি ডিপ ফাইন লেগ দিয়ে বাউন্ডারি ছাড়া করেন। এতেই জয় নিশ্চিত হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। ঘরের মাঠে সিলেট সানরাইজার্সকে শেষ ম্যাচেও বঞ্চিত করে সিলেট।

গতকাল বুধবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করে তারা। দলের দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার ইনগ্রামের ব্যাট থেকে এসেছে ৮৯ রান। আরেক ওপেনার আনামুল হক বিজয়ও খেলেছেন ৩৩ বলে ৪৬ রানের ইনিংস।

ম্যাচটিতে টস জিতে সিলেটকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। প্রতিপক্ষের আমন্ত্রণে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই ১০৫ রান যোগ করেন আনামুল ও ইনগ্রাম। দুই প্রান্ত থেকেই সমান তালে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে মাত্র ৭৪ বলে আসে এই রান।

ইনিংসের ১৩তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ফাফ ডু প্লেসির হাতে ধরা পড়েন আনামুল। তার ব্যাট থেকে আসে ৪ চার ও ৩ ছয়ের মারে ৩৩ বলে ৪৬ রান। এরপর সিলেটের রানের গতি কিছুটা কমে আসে। তিন নম্বরে নামা লেন্ডল সিমন্স ১৩ বলে ১৬ এবং অধিনায়ক রবি বোপারা আউট হন মাত্র ১ রান করে।

অপরপ্রান্ত থেকে সঙ্গ না পেলেও মারমুখী ব্যাটিং করতে থাকেন ইনগ্রাম। কিন্তু মঙ্গলবার রাতের মতো গতকালও অল্পের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যক্তিগত ৮৯ রানে পৌঁছে যান এ বাঁহাতি ওপেনার। পরের বলেও ছক্কা মারার চেষ্টায় ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন তিনি। মোস্তাফিজের করা ইনিংসের শেষ বলে আলাউদ্দিন বোল্ড হওয়ার আগে সিলেট ১৬৯ রান সংগ্রহ করে।

কুমিল্লার পক্ষে ৪ ওভারে মাত্র ২৩ রান খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ। এছাড়া তানভির ইসলাম ও সুনিল নারিনের শিকার ১টি করে উইকেট।

১৭০ রানের লক্ষ্যে নেমে শুরুতেই হোচট খায় কুমিল্লা। তবে ইনিংসের প্রথম বলে লিটন ছয় দিয়ে রানের খাতা খুলেন। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই উইকেট রক্ষক আনামুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওপেনার লিটন দাস। পেসার স্বাধীনের বলে ফেরার আগে এক ছয়ে ৪ বলে ৭ রান করেন। পরের ওভারের পঞ্চম বলে ফিরে যান ফাফ ডুু প্লেসিও মাত্র ২ রান করে ফিরে যান।

তিন ওভারে ২২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে কুমিল্লা। তবে ‘সিলেটের জামাই’ মঈন আলীকে সঙ্গে নিয়ে সেই চাপ সামলে উঠেন ব্যাটার মাহমুদুল হাসান জয়। ধীরেসুস্থে খেলে দুজনে মিলে গড়েন ৮৪ রানের জুটি। ৬৫ বলে সাজানো এই জুট ভাঙেন বোপারা। স্বাধীনের হাতে ক্যাচ দিয়ে মঈন আলী ফিরে যান ৪৬ রান করে। চারটি ৪ ও দুটি ছক্কায় ৩৫ বলে ইনিংসটি তিনি গড়েছিলেন।

মঈন ফিরে গেলেও জয়ের ঝড় তখনও থামেনি। সঙ্গে যুক্ত হন ইমরুল কায়েসও। দ্রæতই তুলে নেন ১৬ রান। যেখানে ছিল দৃষ্টিনন্দন দুটি ছক্কা। তবে ১৭ তম ওভারে নাজমুল অপুর বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান। তিনি। তবুও থেমে থাকেননি জয়। তবে পরের ওভারেই আলাউদ্দিন বাবুর শিকার হন তিনি। আলাউদ্দিন বাবুর বলে ফিরে যাওয়ার আগে ২ ছক্কায় ও ৭ চারে ৫০ বলে খেলেন ৬৫ রানের দৃষ্টিনন্দন একটি ইনিংস। যে ইনিংসে তিনি জিতে নিয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

মাহমুদুল জয় ফিরে যাওয়ার পরের বলেই আরিফুলও আউট হলে কিছুটা চাপে পড়ে কুমিল্লা। তবে সেই চাপ জয় করে ম্যাচ থেকে পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়েন আবু হায়দার রনি ও সুনিল নারিন।

আরসি-১৩