নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ৩১, ২০২২
১১:১৬ অপরাহ্ন
আপডেট : মার্চ ৩১, ২০২২
১১:১৬ অপরাহ্ন
ওয়াজ মাহফিলের জন্য অগ্রিম অর্থ নিয়েও না আসার মিথ্যা অভিযোগের প্রচার ও সম্মানহানির অভিযোগে ১৫ জনের বিরুদ্ধে সিলেটের সাইবার ট্রাইব্যুনালে আলোচিত ইসলামি বক্তা মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরির করা মামলার আবেদন গ্রহণ করে তা তদন্তে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সিলেট বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের (জেলা ও দায়রা জজ) বিচারক মোঃ আবুল কাশেম এ নির্দেশ দেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে আদালতে হাজির হয়ে মামলার আবেদন করেন তাহেরি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাহেরির আইনজীবী মো. জাবেদ হোসাইন। তিনি বলেন, ‘শুনানি শেষে আদালত মামলা গ্রহণে করে তা তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে দুই বিকাশ নম্বর থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে সেগুলোও নম্বরও আমি উল্লেখ করে দিয়েছি মামলার তদন্তের সুবিধার জন্য।’
মামলার আবেদনে তাহেরি অভিযোগ করেন, তার সাথে কোনোরকম যোগাযোগ না করেই গত ২২ মার্চ সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার পৈলনপুরে ইসলামি সুন্নি মহাসম্মেলনে হাজির থাকার কথা উল্লেখ করে প্রচারণা চালানো হয়। মাহফিলের পোস্টারেও তার নাম ছাপানো হয়। মাহফিলে উপস্থিত হওয়ার জন্য তাহেরীর পিএস দাবিদার এক ব্যক্তিকে মাহফিল কমিটি ৩৩ হাজার টাকা দিয়েছে বলে দাবি করে। তবে ওই ব্যক্তিকে তিনি চেনেনই না বলে দাবি করেন তাহেরি।
তাহেরি আরও অভিযোগ করেন, মাহফিলের আয়োজকরা ফেসবুক ইউটিউবে তার নামে নানারকম অপপ্রচার ও কুৎসা রটনা করে। তার বিরুদ্ধে মিছিল করে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় আয়োজক কমিটি। তারা সিলেটে তাকে অবাঞ্চিতও ঘোষণা করে তারা। এতে তার মানহানি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাহেরি।
মামলাটি তদন্তের মাধ্যমে তদন্তপূর্বক দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
মামলা দায়েরের পর আদালত প্রাঙ্গণে গিয়াস উদ্দিন তাহেরি সাংবাদিকদের জানান, তিনি বালাগঞ্জের মাহফিলের কোনো দাওয়াত পাননি। কে বা কারা তার নাম করে টাকা নিয়েছে তাও জানেন না। কিন্তু তার নামে মিথ্যাচার করা হয়েছে তাই তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
তবে, আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, মাহফিলে আসা বাবদ তার সহকারীর কাছে দুই ধাপে অগ্রিম ৩৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। আগের দিন মাহফিল পরিদর্শনও করে গিয়েছিলেন গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরীর এক সহকারী। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
মামলার আসামিরা হলেন, সিলেটের বালাগঞ্জ পৈলনপুরের মইনুল ইসলাম, হাফিজ মুজিবুর রহমান, মসজিদের ইমাম ও খতিব ক্বারি জয়নাল আবেদীন,সিলেট অনলাইন টিভি নবীগঞ্জের রাজু আহমদ, ফেসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারী নবীগঞ্জ সদরঘাটের শেখ শাহজাহান, ফেসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারী হবিগঞ্জ লাখাই মুড়াকুড়ির আব্দুল কুদ্দুছ নুরী, ফেসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারী তপু তরফদার, ফেসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারী নিজাম আহমেদ আকরাম, ফেসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারী নিজাম উদ্দিন সিদ্দীকি, একে মিডিয়া সিলেট, ফেসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারী নবীগঞ্জের দেওপাড়া সাতাইল গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে হাফিজ কামরুল ইসলাম জালালি, ফেসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারি বি-বাড়িয়া জেলার আখাউড়া তুলাই শিমুল গ্রামের শেখ রাসেল, ফেসবুকে লাইভ ও শেয়ারকারী বি-বাড়িয়া চারগাছ গ্রামের আবদুল ফরহার ছেলে মোরশেদ শাহ, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানার গুমগুমিয়া গ্রামের খালেদ আহমদের ছেলে এস.এ শামিম ও টিটিভি।
উল্লেখ্য, মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরি অগ্রিম ৩৩ হাজার টাকা নিয়ে সিলেটের বালাগঞ্জে একটি ওয়াজ মাহফিলে আসেননি- এমন অভিযোগ ওঠে গত মঙ্গলবার। এদিন বালাগঞ্জের পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন মাঠে এ মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন স্থানীয়রা।
এএফ/০৩