প্রথম দিনেই পেছালো প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণ

নিজস্ব প্রতিবেদক


মে ১০, ২০২২
০৯:৪৮ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ১০, ২০২২
০৯:৪৮ অপরাহ্ন



প্রথম দিনেই পেছালো প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণ

প্রথম দিনেই পেছালো সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ।  গতকাল মঙ্গলবার ছিল এই হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ। তবে এক আইনজীবীর মৃত্যুতে কোর্ট রেফারেন্স থাকায় এদিন সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। 

আদালতসূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয় বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে। এদিন সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল রায়হানের মা সালমা বেগম, স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী ও রায়হানের চাচা শ্বশুরের। তারাও যথাসময়ে এসে আদালতে হাজির হন।

এ বিষয়ে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নওশাদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য এদিন রায়হানের মা, স্ত্রীসহ ৩ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে হাজির হয়েছিলেন। এদিন আসামি আসতে দেরি হয়। এছাড়া একজন আইনজীবী মৃত্যুতে কোর্ট রেফারেন্স চলায় সাক্ষ্য হয়নি। তাছাড়া আসামিদের আইনজীবীরা আদালতে একটি দরখাস্ত দিয়ে জানিয়েছেন, মামলার চার্জ গঠনের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে রিভিশনে গিয়েছেন। কিন্তু এই মর্মে কোনো কিছু আনেননি আদালত। এ অবস্থায় আদালতের মঙ্গলবার কার্যক্রম মুলতবি করা হয়। আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।’

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয়। ১১ অক্টোবর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রীর করা মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়। ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে প্রধান অভিযুক্ত আকবর ১৩ অক্টোবর পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যান। ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির বরখাস্ত হওয়া এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, মো. হারুন অর রশিদ, টিটু চন্দ্র দাস, ফাঁড়ির টুআইসি পদে থাকা মো. হাসান উদ্দিন ও এসআই আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার আবদুল্লাহ আল নোমানের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

অভিযোগপত্রভুক্ত ছয়জন আসামির মধ্যে পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাবন্দী। অভিযোগপত্রভুক্ত ৬ নম্বর আসামি আবদুল্লাহ আল নোমান পলাতক। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার নথি পর্যালোচনা শেষে অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয় এবং একমাত্র পলাতক আসামি নোমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। পরে তার মালামাল ক্রোক ও সর্বশেষ পত্রিকা বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর চার্জ গঠনের তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। কয়েকদফা পিছিয়ে গত ১৮ এপ্রিল চার্জ গঠন করে আদালত। 

BA-02