রাতে ঘুমের মধ্যে সুগার কমে গেলে করণীয়

সিলেট মিরর ডেস্ক


সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
০১:৪৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
০১:৪৬ পূর্বাহ্ন



রাতে ঘুমের মধ্যে সুগার কমে গেলে করণীয়

ডায়াবেটিস সত্যিকার অর্থেই মারাত্মক রোগ। এ রোগে আক্রান্ত রোগীর রাতে ঘুমের মধ্যে অনেক সময় রক্তে সুগার বা শর্করা কমে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়ে থাকে, বিশেষ করে যারা ইনসুলিন নেন, তাদের এটি বেশি হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এ রোগের নাম নকটারনাল হাইপোগ্লাইসেমিয়া। ঘুমের মধ্যে যে শর্করা কমে যায়, অনেক সময় রোগী তা মোটেও বুঝতে পারেন না। এমনকি ঘুমের মধ্যে অচেতন হয়ে যাওয়া বা হঠাৎ মৃত্যুরও কারণ হতে পারে এই রাত্রিকালীন হাইপোগ্লাইসেমিয়ায়। তাই সমস্যাটি মোটেও অবহেলা করা যাবে না।

যে কারণে হয় : রাতের ইনসুলিন প্রয়োজনের তুলনায় বেশি নেওয়া, রাতের খাবার ঠিকমতো না খাওয়া বা খুব কম খাওয়া, দিনের বেলা অতিরিক্ত ব্যায়াম বা কায়িক শ্রম দেওয়া, অ্যালকোহল সেবন ইত্যাদি।

বোঝার উপায় : সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার পর মাথাব্যথা, অস্বস্তি বোধ করা; রাতে ঘুমের মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ, যা আপনার সঙ্গী লক্ষ করতে পারেন। যেমন- দুঃস্বপ্ন দেখা, উল্টাপাল্টা কথা বলা, ছটফট করা, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। ঘুমের মধ্যে অনেক ঘেমে যাওয়া, কাঁপুনি দেওয়া ইত্যাদি উপসর্গগুলো দেখা দেয় এবং সন্দেহ হয় যে, রাতে সুগার কমে যাচ্ছে, তবে কোনো একদিন ভোর চারটায় উঠে রক্তের সুগার মেপে নিন। সুগার ৪ মিলিমোলের নিচে হলে বুঝতে হবে আপনার রাত্রিকালীন হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়। এছাড়া বেডটাইম বা ঘুমানোর আগে সুগার অনেক কম থাকলেও এটি সন্দেহ করা যায়। কখনো কখনো রাতে সুগার কমে গেলে শরীরের কর্টিসোল ও অন্যান্য হরমোন নিঃসরণ ঘুমের মধ্যেই বেড়ে যায়। এগুলো আবার সুগার বাড়িয়ে দেয়। ফলে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে সুগার বেশি পাওয়া যায়। এ সমস্যাটির নাম সমোগি ইফেক্ট। যদি সারাদিন, বিশেষ করে বেড টাইম সুগার অনেক কম হয়, রক্তে তিন মাসের গড় সুগার এইচবিএওয়ান সি অনেক কম দেখানোর পরও সকালে সুগার বেশি পান, তবে বুঝবেন, আপনার সমোগি ইফেক্ট হচ্ছে।

করণীয় : রাতে ঘুমানোর আগে একটু হালকা নাশতা খেতে পারেন। দুধ-বিস্কুট, সামান্য ফল, দই ইত্যাদি এ ক্ষেত্রে খেয়ে নেওয়া যেতে পারে। রাতে খাওয়া-দাওয়া কখনো একেবারে বাদ দেওয়া ঠিক হবে না। রাতের খাবারে জটিল শর্করা, যেমন- লাল আটার রুটি, ওটস, কর্নফ্লেকস ইত্যাদি রাখবেন। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে রাতের ইনসুলিনের মাত্রা বা ওষুধের মাত্রা ঠিক করে নেবেন। রাতে ব্যাসাল ইনসুলিন একটু দেরি করে নেওয়াই উত্তম। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে অবহিত করে বিস্তারিত জেনে নেওয়া ভালো।


লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি ও মেটাবলিজম বিভাগ (তৃতীয় তলা), গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা


এএফ/০২