অর্থনীতি এখনও গতিশীল আছে: প্রধানমন্ত্রী

সিলেট মিরর ডেস্ক


নভেম্বর ২৪, ২০২২
০১:১৮ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ২৪, ২০২২
০১:৩১ অপরাহ্ন



অর্থনীতি এখনও গতিশীল আছে: প্রধানমন্ত্রী

আমাদের অর্থনীতি এখনও গতিশীল আছে, নিরাপদ আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অনেক কাজ আমরা করে যাচ্ছিলাম, তবে করোনা, ইউক্রেন যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী মন্দা দেখা দিয়েছে। এই মন্দা থেকে আমরা যেন উত্তরণ ঘটাতে পারি, সে বিষয়ে যথেষ্ট সজাগ আছি। আমাদের অর্থনীতি এখনও গতিশীল আছে, নিরাপদ আছে, সেটুকু অন্তত আমি বলতে পারি।’


বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যশোরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী (বিএএফ) একাডেমিতে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে সেখানে পাসিং আউট কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন সরকারপ্রধান।


শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার পর একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের দায়িত্ব নিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যে দেশে কোনো রিজার্ভ মানি ছিল না, কারেন্সি নোট ছিল না, রাস্তা-ঘাট, পুল, ব্রিজ সবই ধ্বংসপ্রাপ্ত ছিল। তা ছাড়া একটি প্রদেশ, তাকে রাষ্ট্রে উন্নীত করা এবং তার উপযুক্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তিনি অতি দ্রুত করেছিলেন। যুদ্ববিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে অর্থনৈতিক মুক্তির পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক সেই সময়ে ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।’


তিনি আরও বলেন, ‘একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, আমাদের কিছুই ছিল না, তারপরও বন্ধুপ্রতিম দেশের সহযোগিতা নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিমানবাহিনী গড়ে তোলেন। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিমানবাহিনীর বিশেষ অবদান রয়েছে। যাঁরা জীবন দিয়েছেন তাঁদের আমি শ্রদ্ধা জানাই।’


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে, জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশে বার বার ক্যু হয়, বিমানবাহিনীর প্রায় ৬০০ অফিসার ও সেনাকে হত্যা করা হয়। ১৯৭৫ সালের পর থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত নানা ঘটনা ঘটে। সরকারে আসার পর বিমানবাহিনীকে আবার নতুনভাবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা নিই। মিগ-২৯ প্রথম ক্রয় করে দিই। তা ছাড়া সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এয়ার রাডারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে বিমানবাহিনীকে নতুনভাবে গড়ে তুলি।’


তিনি আরও বলেন, ‘২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার সরকারে এসে বিমানবাহিনীর আধুনিকায়ন, অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান সংযোজনসহ নানা পদক্ষেপ আমরা নিই। ফলে বিমান বাহিনী বর্তমানে অত্যন্ত চৌকস ও দক্ষ। শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের বিমানবাহিনী অত্যন্ত চমৎকার ভূমিকা পালন করছে। আমরা সেজন্য গর্বিত।’


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রতিরক্ষা নীতিমালা, যেটা তিনি ১৯৭৪ সালে প্রণয়ন করে দিয়েছিলেন, সেই নীতিমালার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ সরকার ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন শুরু করেছে। আজকের বিমানবাহিনী অবকাঠামো, রণকৌশল ও প্রযুক্তির দিক থেকে আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী, আধুনিক ও চৌকস। তা ছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা করেছি। কাজেই আমাদের প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠান এবং বাহিনী প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন হবে, সেদিকে সেভাবে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।’


শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আমরা দেখি, আমাদের দেশে অন্যান্য দেশ থেকেও ট্রেনিং নিচ্ছে। যেমন নেপাল, ফিলিস্তিন, জাম্বিয়ার অফিসাররা এখানে এসেছেন। নবীন কর্মকর্তাদের বলব, আমাদের সরকার সব সময় বিমানবাহিনীর দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণ সুবিধা দিয়ে উন্নয়নে ও আধুনিকায়নে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সেভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’


ক্যাডেটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যেন আমাদের ক্যাডেটদের নিয়ে গর্ব করতে পারে। তা ছাড়া শান্তিরক্ষা মিশনে আমরা কাজ করি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে, সেজন্য প্রশিক্ষকদের কথা সব সময় মনে রাখতে হবে, প্রশিক্ষকদের কথায় সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রশিক্ষণ উৎকর্ষতা বৃদ্ধি করে, এই কথাটা মনে রাখতে হবে। আমাদের স্বাধীন দেশ, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি, আমরা বিজয়ী জাতি। আমরা বিশ্বদরবারে সব সময় মাথা উঁচু করে চলব। এটাই আমাদের লক্ষ্য।’


এদিন দুপুর ৩টার দিকে যশোর জেলা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। 


যশোর জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, এই জনসভায় ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটানোর লক্ষ্য রয়েছে। গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এ উপলক্ষে চলেছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। পুরো শহর সাজানো হয়েছে তোরণ, ব্যানার ও পোস্টারে। 


যশোরের বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের উপজেলাসহ খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এই জনসভায় যোগ দেবেন। সকাল থেকেই জনসভাস্থল অভিমুখে মানুষের ঢল দেখা গেছে।


এসই/০১