আমরা মানুষকে নিচে নামানোর জন্য উঠেপড়ে লাগি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক


জানুয়ারি ২১, ২০২৩
১০:২৩ অপরাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ২১, ২০২৩
১০:২৩ অপরাহ্ন



আমরা মানুষকে নিচে নামানোর জন্য উঠেপড়ে লাগি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ভিয়েনা গ্রহণ না করা সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. তৌহিদুল ইসলামের ভূয়সী প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘অত্যন্ত ভালো, তুখোড় ছেলে। এখন ওরে টেনে কিভাবে নামানো যায়, এ জন্য তার মন্ত্রণালয়ের লোকজন, তারই বন্ধুবান্ধবরা কন্টিনিউয়াসলি চেষ্টা করে।’

তাঁকে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যদ্দিন আছি, আই উইল ডিফেন্ড হিম।’

শনিবার সকালে সিলেটে সুরমা নদীর চর খননকাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন এসব কথা বলেন। এর আগে সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের চানপুর খেয়াঘাট এলাকায় নদীর খননকাজের উদ্বোধন করেন তিনি। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে সে (তৌহিদুল) আমাদের অ্যাম্বাসাডর ইন সিঙ্গাপুর। তাকে আমরা ভিয়েনাতে দিতে চাই। সেখানে মাল্টিন্যাচারাল কাজ আছে আমাদের ধারণা। সারা দেশেই বোধ হয় এই ক্যারেক্টার, আমরা খালি (কেবল) মানুষকে নিচে নামানোর জন্য উঠেপড়ে লাগি।’

মিডিয়াও ওই লাইনেই আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ওপরে ওঠানোর চেষ্টা করে না, খালি নামানোর জন্য। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনেক ডিপ্লোম্যাট আছে, আমাদের একজন ডিপ্লোম্যাট, হি (তৌহিদুল) ইজ সাকসেসফুল।’

কূটনীতিক তৌহিদুল ইসলাম সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, ‘সে মেডিক্যাল ডাক্তার, সে ঢাকা থেকে এমবিবিএস পাস করে, সে ফার্স্ট হয়। তারপর সে যখন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ পরীক্ষা দেয়, ওইটাতেও সারা বাংলাদেশে ফার্স্ট হয়। তারপরে তার ব্যাচের ফার্স্ট বয় সে। অত্যন্ত ভালো, তুখোড় ছেলে। এখন ওরে টেনে কিভাবে নামানো যায়, এ জন্য তার মন্ত্রণালয়ের লোকজন, তারই বন্ধুবান্ধবরা কন্টিনিউয়াসলি চেষ্টা করছে।’

কূটনীতিক তৌহিদুলের শত্রু রয়েছে উল্লেখ করে তিনি  বলেন, ‘সে যখন মিলানে কনসাল জেনারেল ছিল, কনসাল জেনারেল থাকা অবস্থায় কোনো একটা মেয়েকে তার পেছনে লাগিয়ে দেয়। লাগিয়ে দিয়ে একটা কেলেঙ্কারির চেষ্টা করে। তখন তাকে উইথড্র করা হয়, সাসপেন্ড করা হয়, অনেক ইনভেস্টিগেশন হয়, সরকারের অনেক টাকা খরচ হয়। পরে দেখা যায় এক্কেরে বানোয়াট, এক্কেরে অলীক। তার (তৌহিদুল) প্রমোশন হয়, তারপর অ্যাম্বাসাডর হয়। এখন তার বিরুদ্ধে আবার লাগছে একদল, তারই বন্ধুবান্ধব হবে। আর না হয় পত্রিকায় এগুলো গেল কিভাবে? হি ইজ অ্যা ভেরি গুড অফিসার। আমি যদ্দিন আছি, আই উইল ডিফেন্ড হিম।’

জানা যায়, গত বছরের মাঝামাঝি থেকে ভিয়েনা মিশনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের পদ শূন্য রয়েছে। এ পদে কূটনীতিক তৌহিদুলকে নিয়োগ দিয়ে এসংক্রান্ত প্রস্তাব ভিয়েনায় পাঠায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু সেখানকার সরকার তৌহিদুলকে গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে চিঠি লিখে তৌহিদুলকে গ্রহণ করতে অনুরোধ জানান। তবে তাতেও কাজ হয়নি।

২০১৩ সালে ইতালির মিলানে কনসাল জেনারেল হিসেবে কর্মরত থাকাকালে মো. তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক নারী সহকর্মীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ ওঠে। সে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই তৌহিদুলকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে ভিয়েনা গ্রহণ করছে না বলে কূটনীতিসংশ্লিষ্ট অনেকের ধারণা।


এএফ/০১