বিমানের ১৭ কর্মকর্তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

সিলেট মিরর ডেস্ক


ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৩
০৮:০১ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৩
০৮:০২ অপরাহ্ন



বিমানের ১৭ কর্মকর্তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
১ হাজার ১৬১ কোটি টাকার দুর্নীতি


আট বছর আগে মিশরের ইজিপ্ট এয়ার থেকে বিমান লিজ নেওয়া সংক্রান্ত দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় বিমান বাংলাদেশের সাবেক-বর্তমান ১৭ কর্মকর্তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তিন সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতে তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের মামলায় ১৭ জন আগাম চেয়ে আবেদন করলে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের দ্বৈত বেঞ্চ বুধবারএ আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও মো. আসিফ হাসান। আসামিপক্ষে ছিলেন আইন এ আর এম হাসানুজ্জামান।

দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, এই ১৭ কর্মকর্তা সরাসরি বিমান লিজের সঙ্গে জড়িত। মামলাটি প্রথমিক পর‌্যায়ে আছে। কেবল তদন্ত শুরু হয়েছে। আসামিরা জামিন পেলে তদন্ত প্রভাবিত করতে পারে। এ যুক্তি তুলে ধরে তাদের জামিনে আপিত্তি জানিয়েছিলাম। আদালত জামিন না দিয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামরার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে মিশরের ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর মডেলের দুটি বিমান লিজ নেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বছর পার হতে না হতেই বিমান দুটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। ইঞ্জিনগুলো প্রায় ১২-১৫ বছরের পুরানো। দুটি বিমানের ইঞ্জিন বিকল হওয়ার পর সেগুলোকে সচল করতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় সেটিও। এতে পাঁচ বছরে দেশের ক্ষতি হয় ১১০০ কোটি টাকা, যা একাদশ জাতীয় সংসদের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির তদন্তে উঠে আসে। 

গত বছর ২৮ মে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও কাছে লিজ সংক্রান্ত নথি তলব করে দুদক। পরে এ অভিযোগের অনুসন্ধানের জন্য একটি অনুসন্ধান টিমও গঠন করা হয়। অনুসন্ধানে লিজ সংক্রান্ত গুরুতর অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পায় সংস্থাটি। সে সবের ভিত্তিতে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সংস্থাটির সমন্বিত কার্যালয়ে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক জেসমিন আক্তার।

আসামি করা হয়- বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট অপারেশন্সের পরিচালক ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদ, ডেপুটি ইঞ্জিনিয়ার মো. শফিকুল আলম সিদ্দিক, মহা-ব্যবস্থাপক মো. আব্দুর রহমান ফুকই, সাবেক মুখ্য প্রকৌশলী শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ হানিফি, সাবেক মুখ্য প্রকৌশলী দেবেশ চৌধুরী, এয়ারওরথিনেস কনসালটেন্ট (সিএএবি) গোলাম সারওয়ার, প্রকৌশলী মো. সাদেকুল ইসলাম ভূঞা, ডিজিএম কামাল উদ্দিন আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী এ আর এম কায়সার জামান, সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার শরীফ রুহুল কুদ্দুস, ক্যাপ্টেন মো. নজরুল ইসলাম শামিম, জিয়া আহমেদ, চিফ পার্সার কাজী মোসাদ্দেক আলী, ফ্লাইট পার্সার মো. শহিদুল্লাহ কায়সার ডিউক, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আজাদ রহমান, ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল কাদির, উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, ইঞ্জিনিয়ার অফিসার মো. জাহিদ হোসেন, সহকারী ব্যবস্থাপক মো. ফজলুল হক বসুনিয়া, ব্যবস্থাপক মো. আতাউর রহমান, চিফ পার্সার মোহাম্মদ সাজ্জাদ উল হক, ফ্লাইট পার্সার শাহনাজ বেগম ঝর্ণা, চিফ ইঞ্জিনিয়ার গাজী মাহমুদ ইকবালকে।

মামলায় পরস্পর যোগসাজশ, ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণার মাধ্যমে ১ হাজার ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাত, অপচয় ও ক্ষতির অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। এসব আসামিদের মধ্যে ১৭ জন হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয় আবেদন করেছিলেন। 


এএফ/০৯