টাইটানের সব আরোহী ‘বিস্ফোরণে’ মারা গেছেন

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুন ২৩, ২০২৩
০৪:১২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ২৩, ২০২৩
১২:৫৬ অপরাহ্ন



টাইটানের সব আরোহী ‘বিস্ফোরণে’ মারা গেছেন


নিখোঁজ টাইটান সাবমার্সিবল ডুবোযানের পাঁচজন আরোহীই মারা গেছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্ট গার্ডের একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, ডুবোযানটি ‘বিপর্যয়কর বিস্ফোরণের’ শিকার হয়েছিল বলে তারা ধারণা করছেন। ডুবোযানটি রবিবার নিখোঁজ হয়েছিল।

এর আগে কোস্ট গার্ড বলেছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালের দিকে ডুবে যাওয়া ঐতিহাসিক জাহাজ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে একটি এলাকায় কিছু ভাঙা বস্তুর সন্ধান পান তারা।

যানটির পরিচালক সংস্থা বলেছে, যানটির আরোহী পাঁচ ব্যক্তি ‘সত্যিকার অর্থে ছিলেন অভিযাত্রী, অ্যাডভেঞ্চারের আসল উত্তেজনা ও আনন্দের প্রকৃত ভাগীদার ছিলেন তারা’।

ডুবোযানের যাত্রীরা ছিলেন ৬১ বছর বয়সী স্টকটন রাশ, যিনি ওশানগেট কম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্রিটিশ পাকিস্তানি ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ৪৮ বছর বয়সী শাহজাদা দাউদ ও তার ১৯ বছরের ছেলে সুলেমান দাউদ এবং ব্রিটিশ ধনকুবের ব্যবসায়ী ৫৮ বছর বয়সী অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী হ্যামিশ হার্ডিং। ওই যানে পঞ্চম ব্যক্তি ছিলেন ৭৭ বছর বয়সী পল-অঁরি নারজিওলেট, ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক ডুবুরি এবং খ্যাতনামা অভিযাত্রী।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন কোস্ট গার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মগার জানান, সমুদ্রতলে যেসব ভাঙা টুকরো পাওয়া গেছে, সেগুলো টাইটান সাবমর্সিবলের অংশ বলে মিলে গেছে বলেই তাদের ধারণা।

তবে টাইটান কিভাবে বিধ্বস্ত হলো তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, যানটি তালিয়ে যাবার সময় তাতে আকস্মিক বিশাল একটি বিস্ফোরণ হয়েছে।

রিয়ার অ্যাডমিরাল মগার বলেন, ভাঙা টুকরোগুলোর ধরণ ও আকৃতি থেকে বোঝা যাচ্ছে ডুবোযানটিতে ‘বিপর্যযকর বিস্ফোরণ’ ঘটেছিল। এর কারণ তিনি বলেন, এর মধ্যে দুটি টুকরো রয়েছে : একটি হলো টাইটানের টাইটানিয়ামের তৈরি সামনের ছুঁচলো মুখ এবং অন্যটি যানটির লেজের অংশ, যার থেকে ধারণা করা যায় ডুবোযানটি বিস্ফোরণে মাঝখান থেকে ফেটে যায়।

ডুবোযানটি নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সেটির বিশাল অনুসন্ধান কাজ শুরু হয, যাতে অংশ নেয় মার্কিন, কানাডিয়ান, ব্রিটিশ এবং ফরাসি বিভিন্ন বাহিনীর উদ্ধারকারীরা।

আরওভি নামে পরিচিত দূর-নিয়ন্ত্রণ চালিত পানির নিচের অনুসন্ধান যান এই ভগ্নাবশেষ খুঁজে পায় টাইটাইনিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রায় ১৬০০ ফুট (৪৮০মিটার) দূরে। সেখানে পাঁচটি পৃথক টুকরা খুঁজে পাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়, সেগুলো টাইটানের ভাঙা টুকরা, যার মধ্যে যানটির লেজের কোনাকৃতি একটি অংশও রয়েছে।

রিয়ার অ্যাডমিরাল মগার বলেন, যানটির পাঁচজন আরোহীর মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হবে কি না এ বিষয়ে তার কাছে কোনো উত্তর নেই। তিনি বলেন, ‘সমুদ্রের তলদেশের পরিবেশ অত্যন্ত বিপজ্জনক।

তিনি আরো জানান, কী ঘটেছিল সে বিষয়ে তদন্ত চলাকালীন আরওভিগুলো ওই এলাকা ছেড়ে যাবে না।

এদিকে কোন সংস্থা এই তদন্ত চালাবে তা এখনো স্পষ্ট নয়, কারণ কোনো সাবমার্সিবলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তা তদন্তের দায়িত্ব কার সে বিষয়ে কোনী নিয়মনীতি নেই। রিয়ার অ্যাডমিরাল বলেছেন, বিষয়টি খুবই জটিল। কারণ দুর্ঘটনা ঘটেছে আটলান্টিক মহাসাগরের একটি প্রত্যন্ত অংশে এবং ডুবোযানটিতে ছিলেন বিভিন্ন দেশের নাগরিক।

তবে এ পর্যন্ত যেহেতু অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছে মার্কিন কোস্ট গার্ড, কাজেই তদন্তের ব্যাপারে তাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে।

সূত্র : বিবিসি


এএফ/০৫