ভারত ভাগ হয়ে যেতে পারে : বারাক ওবামা

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুন ২৩, ২০২৩
০১:১৩ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ২৩, ২০২৩
০১:১৩ অপরাহ্ন



ভারত ভাগ হয়ে যেতে পারে : বারাক ওবামা


বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরই মাঝে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে ভারত নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

ওবামা ভারতে 'ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা' নিয়ে সরব হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ওবামা সিএনএনকে বলেন, ‘যদি ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং অন্যান্য জাতিদের মানবাধিকার রক্ষা না করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে ভারত ভাগ হয়ে যেতে পারে।’ 

পাশাপাশি ওবামার আরও বলেন, বাইডেন প্রশাসনের উচিত ভারত সরকারের সঙ্গে সংখ্যালঘুদের অধিকারের ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা।

ওবামা বলেন, ‘যদি মোদির সঙ্গে বাইডেন বৈঠকে বসেন, তাহলে ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুদের অবস্থানের বিষয়টি উত্থাপিত করা উচিত তার। আমি মোদিকে নিজে চিনি। আমি যদি এই পরিস্থিতিতে তার সঙ্গে দেখা করতাম তাহলে আমি তাকে বলতাম, ‘আপনি যদি সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা না করেন, তাহলে ভারতের টুকরো টুকরে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।’ 

এদিকে, ভারতে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে আলোচনা করার জন্য নিজ দলের ভেতরে ও বাইরে চাপের মুখে আছেন বাইডেন।

জানা গেছে, বাইডেনের দলের ৭৫ জন সিনেটর এবং হাউস রিপ্রেজেন্টেটিভ তার কাছে আবেদন করেছেন যাতে মোদির সঙ্গে আলোচনার সময় ভারতে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়।

এ নিয়ে মঙ্গলবার (২০ জুন) বাইডেনকে ওই চিঠি লেখেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা।

হাউস রিপ্রেজেন্টেটিভ প্রমীলা জয়পাল ও ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস ভ্যান হলেনের নেতৃত্বে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ভারতের কোনো নির্দিষ্ট দল বা নেতাকে আমরা সমর্থন করি না। সেটা বেছে নেওয়ার দায়িত্ব ভারতীয় জনগণের। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর সমর্থন করি আমরা। তাই আমরা দাবি জানাচ্ছি, মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় যেন ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়গুলো তার সামনে তুলে ধরেন বাইডেন। দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বহু নিরপেক্ষ প্রতিবেদনেই দেখা গেছে, ভারতের রাজনৈতিক পরিসর ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। সেখানে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। সামাজিক সংগঠন এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলা বাড়ছে। বন্ধু হলে উদ্বেগের বিষয়গুলো তার সামনে তুলে ধরা উচিত।'

উল্লেখ্য, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার সূচকের তালিকায় এ বছরই ১১ ধাপ নিচে নেমেছে ভারত।

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতে সাংবাদিকতার পরিস্থিতি ‘খুব বাজে’ পর্যায়ে। মোট ১৮০টি দেশকে নিয়ে সংকলিত এ তালিকায় ভারত বর্তমানে ১৬১তম স্থানে। তালিকা অনুযায়ী, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের থেকেও নিচে ভারত।

ভারতের ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার ইস্যুটি বহুবার মার্কিন রিপোর্টে উল্লিখিত হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে মহানবীকে নিয়ে বহিষ্কৃত বিজেপি নেত্রীর বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে উত্তাল হয়েছিল ভারত। সে সময় মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক মুসলিম দেশ ভারতের কাছে জবাবদিহি চেয়েছিল।

এ ছাড়া বর্তমান সরকারের অধীনে দেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থান নিয়ে বারবার বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। কয়েকদিন আগেই এটা নিয়ে একটি তথ্যচিত্র বানিয়েছিল আলজাজিরা। তবে সেই তথ্যচিত্র ভারতে আপাতত সম্প্রচারিত হচ্ছে না।

এর আগে গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ হয়েছিল ভারতে। এদিকে সিএএ, এনআরসি নিয়ে দেশের সংখ্যালঘুদের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে। এ নিয়ে দীর্ঘ আন্দোলনও হয় দেশে।


সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


এএফ/০৮