এটা ব্যতিক্রমী সমাবেশ, তরুণরা জেগেছে: ফখরুল

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুলাই ২২, ২০২৩
১০:৪৮ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ২২, ২০২৩
১০:৪৮ অপরাহ্ন



এটা ব্যতিক্রমী সমাবেশ, তরুণরা জেগেছে: ফখরুল


রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ প্রসঙ্গে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এটা ব্যতিক্রম সমাবেশ, তরুণরা জেগে উঠেছে সমাবেশের মাধ্যমে। আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি। আমার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।’

আজ শনিবার (২২ জুলাই) বিকেলে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সমাবেশ থেকে আগামী ২৭ জুলাই ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে একদিকে স্যাংশনস দিচ্ছে গণতন্ত্রকামী রাষ্ট্রগুলো। অপরদিকে তারা অন্যায়-অবিচার অব্যাহত রেখেছে। নির্বাচনকে তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে রাতারাতি পাল্টিয়ে ফেলা হচ্ছে ডিসি এবং এসপিদের। নির্বাচন সামনে রেখে বিশ্বস্তদের দিয়ে সাজানো হচ্ছে প্রশাসন।’

তিনি বলেন, ‘এ সরকার অন্যায়ভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় বসে আছে। সরকার বড় বড় কথা বলছে, তারা নাকি ক্ষমতায় এলে গণতন্ত্র আসে, জনগণের অধিকার ফিরে পায়। দেশবাসী দেখেছে ২০১৪ কীভাবে অনির্বাচিতদের দ্বারা সংসদ নির্বাচিত হয়েছিল। ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে কীভাবে হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে রাতারাতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথা বাতিল করেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনোই নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয়ী হতে পারবে না। তারা দেশের অনেক ক্ষতি করেছে, যা আগে কোনো সরকার করেনি। এরা দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছে। এরা গণতন্ত্রবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিল, আমাদের মাফ করে দেন। ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াবো, ঘরে ঘরে চাকরি দেবো। আজ কি ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়া হয়েছে? মানুষ কি ১০ টাকা দরে চাল পাচ্ছে? পাচ্ছে না। চাকরি তারাই পাচ্ছে, যারা আওয়ামী লীগ করে অথবা ২০ লাখ টাকা ঘুসের বিনিময়ে চাকরি হচ্ছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ভালো ভোটের আলামত দেখতে পেলাম ঢাকা-১৭ আসনে। বেচারা হিরো আলমকে কীভাবে মারধর করা হলো। হিরো আলম বাচ্চা ছেলে, খুব কষ্ট পেলাম। আওয়ামী লীগ তাকেও ভোট করতে দেয়নি। এরা কাউকে সহ্য করতে পারে না। এরা দেশটাকে মনে করে বাপের তালুকদারি। এরা সাধারণ মানুষের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করছে, দেশটাকে ফোকলা বানিয়ে ফেলেছে। বিদ্যুৎ নেই। শুধু বিদ্যুৎখাত থেকেই ১৪ লাখ কোটি টাকা তারা লুট করেছে। এখন আর কোনো বক্তব্য নেই, দাবি আদায়ের পালা।’

তিনি বলেন, ‘এ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, তা শুধু বিএনপি নয়, বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। জাতীয় পার্টি এবং ইসলামী আন্দোলনও বলেছে, এ সরকার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কখনই সম্ভব নয়।’

মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়া, বিএনপি নেতা রফিকুল আলম মজনু, সাইফুল ইসলাম নিরব, শেখ রবিউল আলম রবি, আব্দুল মোনায়েম মুন্না, ইউসুফ বিন জলিল কালু, এস এম জাহাঙ্গীর, মিয়া নূরুদ্দিন অপু, গোলাম মাওলা শাহীন, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, জয়নাল হোসেনসহ কারাবন্দি সব নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করেন।

যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মো. মোর্শেদ হাসান খান প্রমুখ।

যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল সমাবেশ পরিচালনা করেন।

সমাবেশকে ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকার লোকারণ্য হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে এর বিস্তৃতি ঘটে শাহবাগ, পল্টন, কাকরাইল পর্যন্ত।

বিএনপির সরকার পতনের চলমান আন্দোলনে তরুণ প্রজন্মের সম্পৃক্ততা বাড়াতে শনিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তারুণ্যের এ সমাবেশ শুরু হয়। দুপুরে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুক্রবার রাত থেকেই ঢাকার আশপাশের জেলার নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। শনিবার ভোর থেকেই বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করেন।

বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, সেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে।


এএফ/০৬