চালের দাম বৃদ্ধি অস্বাভাবিক, মজুত করলে জেলে পাঠান হবে: প্রধানমন্ত্রী

সিলেট মিরর ডেস্ক


জানুয়ারি ২২, ২০২৪
০৯:৫৭ অপরাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ২৩, ২০২৪
০৪:৪৫ অপরাহ্ন



চালের দাম বৃদ্ধি অস্বাভাবিক, মজুত করলে জেলে পাঠান হবে: প্রধানমন্ত্রী


নির্বাচন-পরবর্তী চালের দাম বেড়ে যাওয়াকে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘দুরভিসন্ধিমূলকভাবে কোনো জিনিস মজুত করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’

আজ সোমবার (২২ জানুয়ারি) গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি সভার সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।

মানুষ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন অযথা একটা ধূম্রজাল সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সবচেয়ে অবাক লাগে, কথা নাই বার্তা নাই হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে গেল, জিনিসের দাম বেড়ে গেল। আমরা জানি, করোনাভাইরাসের অতি মারির কারণে, এরপরে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, এরপরে নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে সারা বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। শুধু বাংলাদেশ না, উন্নত দেশও ধাক্কা সামাল দিতে পারছে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে সকল জিনিস আমাদের বাইরে থেকে ক্রয় করতে হয়ে, যেমন—গম, চিনি, ভোজ্যতেল, গ্যাস। কারণ, আমাদের যা আছে তা চাহিদার চেয়ে অনেক কম। আমাদের দেশ, ১৭ কোটি মানুষের দেশ। যে সকল জিনিস আনতে হয়—এগুলোর উচ্চমূল্য, পরিবহন ব্যয় বেড়েছে—সেই কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।’

মজুতদারদের হুঁশিয়ারি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যার কারণে আমরা শুরুতেই বলেছি আমাদের নিজস্ব উৎপাদন বাড়াতে। এবারও আমাদের ফসল ভালো হয়েছে, চাল উৎপাদন বেড়েছে। তারপরেও হঠাৎ দাম বাড়াটা এই রকম ভরা মৌসুমে—এটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। এটার পেছনে কারা আছে, এটা একান্তভাবে বের করা দরকার। শুধু দরকার না এবং এদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে—এটা আমরা আগামীতে করব। দুরভিসন্ধিমূলক কোনো জিনিস যদি মজুত করে রাখে, একটা হচ্ছে স্বাভাবিকভাবে যেটা বাজারে দেওয়ার জন্য মজুত করতে হয়। কিন্তু অস্বাভাবিকভাবে মজুত করে রাখা বা দুরভিসন্ধিমূলকভাবে মজুত করে রাখা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ রকম যাকেই পাওয়া যাবে, মোবাইল কোর্ট লাগিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। দরকার হলে জেলে ঢুকিয়ে দিতে হবে। আগামীতে আমরা সেই ব্যবস্থাটাই নেব। এখন থেকে প্রথমে ওই জায়গাতেই আঘাত করতে হবে। ডিম, সেটাও মজুত করে রাখা হয়। এর আগে পেঁয়াজ— একটার পর একটা পচা পেঁয়াজের বস্তা ফেলে দেওয়া হলো। এটা কোন ধরনের কথা? মানুষের খাবার নিয়ে খেলা, এর তো কোনো অর্থ হয় না, আর এই ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়ারও কথা না। এ সময় তো আরও কমে জিনিসের দাম।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘তরি-তরকারি, ফলমূল আমাদের সরবরাহের তো কোনো অভাব নাই। যেকোনো কৃষিপণ্যের দাম বাড়লের যারা ভোক্তা, তাদের কষ্ট হয়। কৃষক যদি দামটা পায়, তারা খুশি হয়। কৃষক ন্যায্য দামটা পাচ্ছে। কিন্তু যে দামটা পরিবহন খরচ ও সব মিলিয়ে হওয়া উচিত তার থেকে অতিরিক্ত বেশি। সেই জন্য দুরভিসন্ধি নিয়ে যদি কেউ মজুত রাখে, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা আমরা নেব। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’

নির্বাচন শেষ হওয়ার পর নানা চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এই কৌশল নেওয়া হচ্ছে, দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচন শেষ হওয়ার পর আরও কিছু চেষ্টা করা হয়েছে, গার্মেন্টসের মজুরি বাড়ানো হলো, তারপরেও রাত ১২টা বাজে গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলন। এটা করে ব্যর্থ হয়েছে, ব্যর্থ হয়ে এখন অন্যভাবে নামতে চাচ্ছে। সেভাবে করতে দেব না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেবে না। মানুষ আনন্দিত, খুশি এই পর্যন্ত যে উন্নয়নটা করেছি; এর সুফলটা যেনে জনগণ পায়, এই চেষ্টাটাই করছি।’


এএফ/০৫