সিলেট মিরর ডেস্ক
মার্চ ৩০, ২০২৫
০২:৫৯ অপরাহ্ন
আপডেট : মার্চ ৩০, ২০২৫
০৩:০৩ অপরাহ্ন
চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপিত
দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে।
রবিবার (৩০ মার্চ) সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারীরা দীর্ঘ আড়াই শ বছর ধরে হানাফি মাযহাবের নিয়ম অনুসরণ করে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করে আসছেন।
এই দরবার শরীফের অনুসারীরা হানাফি মাযহাব মতে, বিশ্বের যেকোনো দেশে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আড়াই শ বছর ধরে এভাবে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা ও চান্দ্রমাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ধর্মীয় অনুশাসন পালন করে আসছেন।
মির্জাখীল দরবার শরিফের খানকাহ মাঠে রবিবার (৩০ মার্চ) সকাল ১০টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
হযরত শাহ জাহাঁগীর শেখুল আরেফীন (ক.), হযরত শাহ জাহাঁগীর ফখরুল আরেফীন (ক.), হযরত শাহ জাহাঁগীর শমসুল আরেফীন (ক.) এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বর্তমান সাজ্জাদানশীন হযরত শাহ জাহাঁগীর তাজুল আরেফীন (ক.)-এর তত্ত্বাবধানে তার জানশিন (উত্তরাধিকারী) হযরত ইমামুল আরেফীন ড. মাওলানা মুহাম্মদ মকছুদুর রহমান ঈদের নামাজে ইমামতি করেন।
মির্জাখীল দরবার সূত্রে জানা যায়, মির্জাখীল এলাকা ছাড়াও সাতকানিয়া উপজেলার গারাংগিয়া, সোনাকানিয়া, ছোটহাতিয়া, আছারতলি, সাইরতলি, এওচিয়া, খাগরিয়া, ছদাহা, গাটিয়াডাঙ্গা, বাজালিয়া এবং লোহাগাড়া উপজেলার কলাউজান, বড়হাতিয়া, পুটিবিলা, চরম্বা ও চুনতি, বাঁশখালী উপজেলার জালিয়াপাড়া, ছনুয়া, মক্ষিরচর, চাম্বল, শেখেরখীল, ডেংরা, তৈলারদ্বীপ ও কালীপুর, পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও, বাহুলী, ভেল্লাপাড়া ও সীতাকুণ্ড উপজেলার মাহমুদাবাদ, বারৈয়াঢালা, বাঁশবাড়িয়া, সলিমপুর, মহালংকা, মিরসরাই, পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, রাউজান ও ফটিকছড়ি, ফেনী, রাঙামাটি, কুমিল্লা, ঢাকা, মোহাম্মদপুর, মুন্সীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মনোহরদী, মঠখোলা, বেলাব, আবদুল্লাহনগর, কাপাসিয়া, চাঁদপুর জেলার মতলব, সিলেট, হবিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, বরিশাল, পটুয়াখালী, চুয়াডাঙ্গা, ভোলাসহ বিভিন্ন জেলার শতাধিক গ্রামের বহুসংখ্যক অনুসারী আজ রবিবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।
এ ছাড়াও পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার অনেক গ্রামে থাকা মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারীরাও ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।
এ বিষয়ে মির্জাখীল দরবার শরীফের মেঝ সাহেবজাদা মোহাম্মদ মছুদুর রহমান বলেন, প্রায় আড়াই শ বছর আগে সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল গ্রামে হযরত মাওলানা মোখলেছুর রহমান (রহ.) হানাফি মাযহাবের ফতোয়া অনুযায়ী পৃথিবীর যে কোনো দেশে চাঁদ দেখা গেলে রোজা, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহাসহ সব ধর্মীয় উৎসব পালন করার ফতোয়া দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারীরা একই নিয়মে সব ধর্মীয় উৎসব পালন করে আসছেন।
এদিকে সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন আরব দেশের সঙ্গে মিল রেখে সীতাকুণ্ড উপজেলার দুটি গ্রামের ৫০টিরও অধিক পরিবারে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। ঈদ ঘিরে এসব গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
এই উপজেলার উত্তর বাশঁবাড়ীয়ার ১নং ওয়ার্ড রহমতের পাড়া জাহাগীরীয়া জামে মসজিদ এবং বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ মাহমুদাবাদ (চাড়ালকান্দি) হযরত জাহাঙ্গীর শাহ মাজার শরীফ হুজুরের বাড়িতে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাতে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন অংশ নেন। এই দুটি ইউনিয়নের দুটি গ্রামে পৃথক পৃথক প্রায় তিন শতাধিক মানুষের এই ঈদুল ফিতরের জামাত সম্পন্ন করেন।
বাড়বকুণ্ডের (চাড়ালকান্দি) ঈদের জামাতে অংশ নিয়ে অ্যাডভোকেট আরিফ ভুঁইয়া বলেন, প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে আমরা মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখি এবং ঈদ উদযাপন করি। শনিবার চাঁদ দেখা গেছে। তাই আজ রবিবার আমরা ঈদ উদযাপন করছি। আমি ১৫-১৬ বছর পূর্বে প্রথমে দুইজন শুরু করেছিলাম। এ বছর ২০-৩০ জন একসঙ্গে ঈদের জামাতে অংশ নিই।
তিনি আরও বলেন, তাছাড়া উক্ত বিষয়ে মুসলিমদের চার মাযহাবের তিন মাযহাব একমত পোষণ করেছেন। তাই মুসলিমদের উচিত রাসুল (স.) এর দেখানো পথ অনুসরণ করে পুনরায় ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মাধ্যমে মুসলিমদের ঐক্য, সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করা। এ বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে উক্ত বিষয়টি সমাধান করার জোর দাবি জানান তিনি।
রবিবার সকাল ৯টায় বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের দক্ষিন মাহমুদাবাদ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের (চাড়ালকান্দি) জাহাগীর শাহ দরবার শরীফের অনুসারীরা ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত উত্তর বাঁশবাড়িয়া রহমতের পাড়া ঈদের জামাতের ইমামতি করেন মাওলানা আলী আহমদ এবং মো. মামুন।
জিসি ০ ৩