সিলেট মিরর ডেস্ক
জুন ১৪, ২০২৫
১২:১১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুন ১৪, ২০২৫
১২:১১ পূর্বাহ্ন
তৃণমূলে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে সুনামগঞ্জ-১ আসনের একাধিকবারের সংসদ সদস্য ও বিএনপির মরহুম নেতা নজির হোসেনের নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
তাহিরপুরের বিন্নাকুলি গ্রামে ‘নজির হোসেন মেমোরিয়াল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়’ নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির উদ্বোধন করা হয়েছে গত বৃহস্পতিবার (১২ জুন)। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হাসেমসহ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাসহ বিএনপির নেতা-কর্মী, এলাকাবাসী ও শিক্ষানুরাগীরা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নজির হোসেনের সহধর্মিনী সালমা নজির সকলের কাছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরুর পথে সর্বাত্মক সহায়তা চেয়েছেন। অনুষ্ঠানে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য আবুল কালাম আজাদ, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী ফেরদৌস আলম, তাহিরপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান জুনাব আলী, সুনামগঞ্জ জেলার রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য আবুল হোসেন, তাহিরপুর উপজেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য চান মিয়া মাস্টারসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে সুনামগঞ্জ-১ আসনের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে সালমা নজিরের একটি প্রচারপত্র প্রকাশ করা হয়। ‘সুশিক্ষা ফেরাবে সুদিন/ সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে আমার ভাবনা’ শীর্ষক প্রচারপত্রে বলা হয়, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুশিক্ষিত যোগ্য সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে না পারলে আমাদের রাজনীতি জনকল্যাণমুখী হবে না বলে আমি মনে করি। অবহেলিত হাওর অঞ্চলের শিক্ষা কার্যক্রমকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশেষ বিবেচনায় এগিয়ে নেওয়া ছাড়া বিকল্প কিছু আমি দেখছি না। সুশিক্ষা ফেরাবে সুদিন। তাই এই এলাকার শিক্ষা করার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নিম্নে আমার ভাবনাগুলো উপস্থাপন করলাম-
১। প্রতিটি ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ড মিলে কমপক্ষে একটি উচ্চবিদ্যালয় স্থাপন করা। ২। প্রতি ইউনিয়নে কমপক্ষে একটি কলেজ সংযূক্ত কারিগরি শিক্ষা বিভাগসহ স্থাপন করা। ৩। বালক-বালিকা সকল শিক্ষার্থীকে অবৈতনিক এবং সরকারি উপবৃত্তির আওতায় আনা। ৪। উপজেলাভিত্তিক বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূূচিতে শিক্ষা খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রাখা এবং বার্ষিক অর্থ বরাদ্দে শিক্ষা উপকরণসহ অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যায় নিশ্চিত করা। ৫। হাওর এলাকার শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার পথ প্রসারিত করতে সরকারের বিশেষ বিবেচনায় একটি ‘হাওর বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপন করা।
শিক্ষা একটি অধিকার। শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে আছে সুশিক্ষা। আমাদের সুদিন ফেরাবে সুশিক্ষা। শিক্ষাদীক্ষায় যে জনগোষ্ঠী যত বেশি অগ্রগামী, সেই জনগোষ্ঠীর অগ্রগতি কেউ ঠেকাতে পারবে না। আসুন, সুদিন ফেরাতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষাদীক্ষায় উন্নত, যোগ্য সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলি। আমার ভাবনাগুলো বাস্তবায়নে আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করি। ধন্যবাদান্তে, সালমা নজির।’
হাওরাঞ্চলের আসনখ্যাত সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর-জামালগঞ্জ-ধরমপাশা-মধ্যনগর) নির্বাচনি এলাকার একাধিকবারের সংসদ সদস্য নজির হোসেন ২০২৪ সালের ২৮ মার্চ আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন। পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রথম নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
রাজনীতির বিজ্ঞজন হিসেবে সমাদৃত ছিলেন নজির হোসেন মোট পাঁচবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ানখ্যাত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। ভোটের রাজনীতিতে সেই হারজিৎ ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। বলা হয়েছিল ‘নজিরের নজিরবিহীন বিজয়’। বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে শীর্ষ নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাংগঠনিক দক্ষতার জনপ্রিয়তায় তিনি দলীয় কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নজির হোসেন কেবল এলাকার উন্নয়নে ভ‚মিকা রেখেছেন। নিজের নামে কিছুই করেননি। তাঁকে তাঁর কর্মের মাধ্যমে স্মরণে রাখতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
এএফ/০১