নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৫
০৯:১৩ অপরাহ্ন
আপডেট : সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৫
০৩:১৫ অপরাহ্ন
ব্রাজিলে আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কপ সম্মেলন। সেই সম্মেলনে বিশ্বব্যাপী জলবাফু সংকট, স্বৈরাচারী রাস্ট্রব্যবস্থা এবং সামাজিক অবিচারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহনের আহ্বান জানিয়ে সিলেটে সমাবেশ করেছে পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক নাগরিক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সিলেট জেলা শাখা।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা দেড়টায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রাতারগুল সোয়াম ফরেস্টের মাঝের ঘাটে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বৈষম্য, স্বৈরাচার, গণহত্যা, ধ্বংস এবং বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রনেতাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান এবং জলবায়ূ পরিবর্তনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের মাধ্যমে সবার জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যত নিশ্চিত করার আহ্বানে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ধরার সদস্যসচিব আব্দুল করিম কিমের সভাপতিত্বে এবং ধরার সংগঠক রেজাউল কিবরিয়া-এর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সিলেটের মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ও ধরার আজীবন সদস্য ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেন, ‘আজকের এই কর্মসূচীর লক্ষ্য হলো বিশ্বজুড়ে বৈষম্য, স্বৈরাচার, গণহত্যা, ধ্বংস এবং বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং সবার জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যত নিশ্চিত করা।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে ক্ষমতাধর সরকারগুলো স্বৈরতন্ত্রের দিকে ঝুঁকছে এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্রতিশ্রুতিগুলো বিলম্বিত বা ধ্বংস করা হচ্ছে । তাই ২০২৫ সালকে একটি ‘মোড় ঘোরানোর বছর’ হিসেবে দেখা হচ্ছে, আমাদের গণমানুষের শক্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করতে হবে।’
হাওর রক্ষায় আমরা-এর সংগঠক সজল কান্তি সরকার বলেন, ‘জনগণ সবসময় প্রত্যাশা করে, যেসব প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে একটি সরকার পরিবর্তিত হয়, ক্ষমতায় আসার পর সেই প্রতিশ্রুতিগুলো সরকার মনে রাখবে এবং বাস্তবায়নে উদ্যোগী হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, অনেক সময় সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই অঙ্গীকার ভুলে যায় কিংবা সেগুলো নিয়ে কার্যকরভাবে কাজ করে না। অথচ জনগণের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা সরকারের নৈতিক ও গণতান্ত্রিক দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালিত না হলে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।’
সভাপতির বক্তব্যে সমাবেশের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সমাবেশে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সিলেটের সদস্যসচিব আব্দুল করিম কিম বলেন, ‘পৃথিবীব্যাপী ক্ষমতাধর সরকারগুলো যখন স্বৈরতন্ত্রের দিকে ঝুঁকছে এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্রতিশ্রুতিগুলো বিলম্বিত বা ধ্বংস করছে, তখন এই প্রতিবাদ কর্মসূচিটি এক নতুন সংহতির বার্তা দিচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাসের ১৯-২১ তারিখ পর্যন্ত বিশ্বের ১০০টি দেশের একাধিক নগরে এবং বাংলাদেশে ৩০টি স্থানে অধিকার, কর্মসংস্থান, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র এবং একটি পরিপূর্ণ জীবনের জন্য গণহত্যা, ধ্বংস ও বিশৃংখলার বিরুদ্ধে অবস্থান জানাতে বৈশ্বিক এই কর্মসুচি পালিত হচ্ছে। মূলত জলবায়ু সংকটের ফলে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা এবং ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাতেই এই কর্মসূচির আয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘এই সময়ে আমাদের গণমানুষের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সবার জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যতের জন্য অবস্থান নেওয়া অপরিহার্য। এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা তাই বিশ্বব্যাপী করপোরেট ও কোটিপতিদের লোভ, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার, পিতৃতন্ত্র, বর্ণবাদ এবং পরিকল্পিত অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ গড়ে তোলতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। এখন বিশ্ব নেতাদেরকেও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
এএফ/০৫