নিজস্ব প্রতিবেদক
                        অক্টোবর ৩১, ২০২৫
                        
                        ০৬:৪৪ অপরাহ্ন
                        	
                        আপডেট : অক্টোবর ৩১, ২০২৫
                        
                        ০৬:৪৪ অপরাহ্ন
                             	
 
                        
             
    সিলেটের প্রতি উন্নয়ন বৈষম্যের প্রতিবাদে আগামী রবিবার (২ নভেম্বর) সিলেট নগরে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। ওইদিন সকাল ১১টায় সিটি পয়েন্ট থেকে সুরমা মার্কেট পয়েন্ট পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
সিলেটের ন্যায্য দাবি-দাওয়া আদায়ে গঠিত ‘সিলেট আন্দোলন’র উদ্যোগে এ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীদের পক্ষে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আরিফুল হক চৌধুরীর কুমারপাড়াস্থ বাসভবনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়ী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষক, সাংবাদিক, ধর্মীয় ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
সিসিকের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী কর্মসূচি ঘোষণা করে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) জুমার বয়ানে বিষয়টি তুলে ধরতে সিলেট অঞ্চলের ইমামদের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডার দায়িত্বশীলদেরকেও সিলেটের মানুষের ন্যায্য দাবিটি তুলে ধরার আহ্বান করেন তিনি। এ ছাড়া আগামীকাল শনিবার বাদ মাগরিব হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ চত্বর থেকে কর্মসূচির সমর্থনে একটি মশাল মিছিল বের করার সিদ্ধান্ত হয়।
বৃহস্পতিবার রাতের সভায় বলা হয়, ‘উন্নয়নের ক্ষেত্রে সিলেট নানাভাবে বঞ্চনার শিকার। এ বিভাগের উন্নয়ন বৈষম্য দূর করতে নগরের কোর্ট পয়েন্টে ১২ অক্টোবরের সমাবেশ থেকে ১৫ দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়। এরই মধ্যে আলটিমেটামের সময়সীমা শেষ হলেও দাবি বাস্তবায়নের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই।’
বক্তারা বলেন, এ অঞ্চলের উন্নয়ন বঞ্চনা ঘুচাতে ‘সিলেট আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন গঠন করা হয় এবং নবগঠিত এ প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে রবিবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
এ সময় আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সড়ক ও রেল যোগাযোগের বিষয়ে বিদ্যমান সমস্যাবলী নিয়ে সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা এবং রেল উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি।’
সাক্ষাতের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি জানান, এ সমস্যা সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল এবং তিনি নিজে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক পরিদর্শন করেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। গত সপ্তাহখানেক ধরে লোকজন ৬-৭ ঘণ্টায় ঢাকায় যাতায়াত করতে পারছেন। আরিফুল হক চৌধুরী সড়ক যোগাযোগ নিয়ে কিছুটা সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও রেলের টিকিটসহ অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে এখনো কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি বলে অভিযোগ করেন।
তবে উপদেষ্টা সিলেটের জন্য ১০টি বগি বরাদ্দের আশ্বাস তাকে দিয়েছেন। বিমান ভাড়ার বিষয়টি এখনো উদ্বেগের।
আরিফুল হক চৌধুরী সভায় জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সিলেট সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। সিলেটের জন্য ২০২১ সালে সিলেটের উপজেলা ও ইউনিয়নসমূহের রাস্তাঘাট সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য ২৪০০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় সরকার সচিব ফের প্রকল্পটির ডিপিপি (ডেভেলপম্যান্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) তৈরি করার নির্দেশনা দিয়েছেন—বিষয়টি আমাদের জন্য হতাশার। বাদাঘাটে ওয়াটার ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্ট স্থাপনেরও তেমন অগ্রগতি নেই। এ অবস্থায় আগামী রমজানে সিলেটে পানির জন্য হাহাকার তৈরি হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
সামগ্রিক পরিস্থিতিতে সিলেটের মানুষের রাজপথে নামা ছাড়া সামনে কোনো উপায় নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া ছাড়া আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’
এএফ/০২