আনলাকি থার্টিনে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল টাইগাররা

সিলেট মিরর ডেস্ক


এপ্রিল ১৩, ২০২০
১০:২৮ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ১৩, ২০২০
১০:২৮ অপরাহ্ন



আনলাকি থার্টিনে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল টাইগাররা

‘আনলাকি থার্টিন’ বলে সাধারণে সংখ্যাটিকে অশুভ বলেই পরিগনিত হয়। ফলে প্রবল ইচ্ছে থাকা সত্বেও অনেকেই এই দিনটিতে শুভ কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন না। অন্য কোনো দিনের জন্য জমিয়ে রাখেন। কিন্তু কী আশ্চর্য! বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে এই অপয়া সংখ্যাটি সবচেয়ে পয়মন্ত! কেননা আজ থেকে ২২ বছর আগের এই দিনেই এদেশের ক্রিকেটের আকাশে উঠেছিল নতুন এক সূর্য্য। বিশ্ব ক্রিকেটে সেদিন অবাক বিস্ময়ে এক নতুন শক্তির অভ্যুদয় দেখেছে। ১৯৯৭ সালের ১৩ এপ্রিল কুয়ালালামপুরের কিলাত ক্লাব মাঠে আকরাম খানের নেতৃত্বে কেনিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। আর সেদিন থেকেই ছোট্ট এই ব-দ্বীপের প্রাণের খেলা ফুটবলকে ছাপিয়ে ক্রীড়াপ্রেমীদের চিত্তে জায়গা করে নেয় ক্রিকেট।

এর আগ পর্যন্ত ফুটবলই ছিল প্রথম ও একমাত্র খেলা যা এদেশের ক্রীড়া প্রেমীদের বুঁদ করে রাখত। মাঠের খেলা মানেই যেন ওই ফুটবলই। আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ দেখতে তখন মাঠে দর্শকের ঢল নামত। ১৯৯০ সালেই অবশ্য ফুটবলকে পেছনে ফেলে ক্রিকেটকে শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার অনন্য সুযোগটি এসেছিল। কিন্তু সেমির লড়াইয়ে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের কাছে হেরে গেলে অনন্য সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় টাইগার কন্টিনজেন্ট।

এভাবে ১৯৭৯ থেকে ১৯৯৪- টানা পাঁচ বার বিশ্বকাপে খেলার বর্ণিল স্বপ্ন নিয়ে আইসিসি ট্রফিতে অংশ নিয়েছে লাল সবুজের দল কিন্তু প্রতিবারই ফিরে আসতে হয়েছে স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনা নিয়ে। অবশেষে ১৯৯৭’র আসরে দীর্ঘ দিনের লালিত সেই স্বপ্ন পূরণ হয় আকরাম, বুলবুল, নান্নু, রফিক পাইলটদের হাত ধরে।

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের কিলাত ক্লাব মাঠে সেদিন মরিস ওদুম্বে, স্টিভ টিকোলো, টনি সুজিদের হারিয়ে জাতীয় বীরের খেতাবে ভুষিত হয়েছিলেন আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, আমিনুল ইসলাম বুলবুল, খালেদ মাহমুদ সুজন, খালেদ মাসুদ পাইলট, নাঈমুর রহমান দুর্জয়, মোহাম্মদ রফিক, সাইফুল ইসলাম খান আর হাসিবুল হোসেন শান্তরা। কেনিয়াকে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ২ উইকেটে হারানোর মধ্য দিয়ে আইসিসি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। লাল-সবুজ পতাকা উড়েছিল পতপত করে। আকরাম খান বাহিনী স্থান করে নিয়েছিল বিশ্বকাপের মঞ্চে।

৯৭’র ওই আসরে স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে সেমি ফাইনালেই ১৯৯৯ বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছিল টিম বাংলাদেশ। ফলে ফাইনালে কেনিয়ার বিরুদ্ধে না জিতলেও আকরাম, নান্নুদের স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনায় পুড়তে হত না। বৃষ্টি না হলে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারতি হয়ে যেত একদিন আগেই (১২ এপ্রিল)। কিন্তু বৃষ্টি তা প্রলম্বিত করল। তাতে সবার কপালে কিছুটা দুশ্চিন্তার রেখা ফেলে দিয়েছিল বলেও জানালেন টাইগারদের বর্তমান প্রধান নির্বাচক। ‘বৃষ্টির কারণে কার্টেল ওভারে ২৫ ওভারে ১৬৬ রান সহজ ছিল না। কিন্তু কিছু্ করার ছিল না। কারণ মালয়েশিয়াতে তখন বৃষ্টির মৌসুম। সেই হিসেবে টেনশন কাজ করত। তাছাড়া আমরা কেউই কার্টেল ওভার খেলে অভ্যন্ত নই। তারপরেও আমরা একটি দল হিসেবে খেলতে পেরেছি বলেই সাফল্যটি এসেছে।’

এআরআর-০৩/বিএ-০৪