নিজস্ব প্রতিবেদক
জুন ০৮, ২০২০
১০:৩৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুন ০৮, ২০২০
১২:৫৬ অপরাহ্ন
মাস শেষ হোক বা না হোক- যেকোনো উৎসবের আগেই বেতন-বোনাস পেতেন সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কিন্তু এবার ভিন্ন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাদের। ঈদের আগে বোনাস পেলেও বেতন পাননি তারা। ঈদের পর আরও প্রায় ১৫দিন হতে চললো এখনও মে মাসের বেতন পাননি তারা। করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ ছুটি থাকায় নিজস্ব আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে তাদের। এ অবস্থায় সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে আবেদন জানিয়েছে সিটি করপোরেশন।
তবে, সিটি করপোরশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী আর্থিক সংকটের কথা স্বীকার করলেও মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলছেন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় ফাইলে স্বাক্ষর হয়নি। তাই এখনও বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে দুই একদিনের মধ্যেই বেতন দেওয়া হবে।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মাসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাবদ প্রায় ২ কোটি টাকা খরচ হয়। এই টাকার পুরোটাই আসে নগর ভবনের নিজস্ব আয় থেকে। হোল্ডিং ট্যাক্স, বিজ্ঞাপন কর, মেলা প্রদর্শনী কর, বাস টার্মিনাল ইজারা, ট্রেড লাইসেন্স ইত্যাদি থেকে আয় হয় নগর ভবনের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় হয় হোল্ডিং ট্যাক্স থেকে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে হোল্ডিং ট্যাক্সের বড় একটা অংশই পায়নি নগর ভবন। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কেউ কর দিতে পারেননি। তাই নগর ভবনকে আর্থিক সংকটে পড়তে হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী সিলেট মিররকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের আয়ের একটি বড় অংশ আসে হোল্ডিং ট্যাক্স থেকে। করোনা ভাইরাসের কারণে অনেকে সেই কর পরিশোধ করতে পারেননি। ফলে বড় একটা আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন করেছি।’
ঈদের আগে বেতন না দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিধায়ক রায় চৌধুরী বলেন, ‘ঈদের আগেই বেতন দিতে হবে এমন কোনো নির্দেশনা আসেনি। দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও নেই। তাছাড়া আর্থিক সংকট তো রয়েছেই।’ ইতোমধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মে মাসের বেতন দেওয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আর্থিক সংকটের বিষয়টি স্বীকার করলেও মানতে নারাজ মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সময়মতো বেতন দিতে না পারার কারণ হিসেবে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাসহ তিনচারজনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তিনি। মেয়র বলেন, ‘এখনও আর্থিক সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। তহবিলে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ আছে। হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে। হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাসহ তিনচারজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের স্বাক্ষর নেওয়া সম্ভব হয়নি। করোনা আতঙ্কের কারণে অনেকে অফিসেও যেতে পারছেন না। তবে দু-একদিনের মধ্যেই বেতন হয়ে যাবে বলে আশা করি।’
আরসি/বিএ-১০