কঠোর লকডাউনসহ বিএনপির সাতদফা সুপারিশ

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুন ১৪, ২০২০
০১:৫৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ১৪, ২০২০
০১:৫৯ পূর্বাহ্ন



কঠোর লকডাউনসহ বিএনপির সাতদফা সুপারিশ

ফের কঠোর লকাডাউন চেয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে সাতদফা সুপারিশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

আজ শনিবার উত্তরার বাসায় আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাতদফা সুপারিশ তুলে ধরেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগমীর বলেছেন, ‘সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতায় বাংলাদেশে এখন করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর মিছিল চলছে। সরকারের চরম অবহেলা ও দায়িত্বহীন আচরণে বাংলাদেশে কভিড-১৯ ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারি হিসেবে দেশে মৃত্যু হাজার ছাড়িয়েছে, আক্রান্ত প্রায় লাখের কাছে। বেসরকারি বা অন্যান্য সূত্রে আক্রান্ত ও মৃত্যর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি।

বিএনপির সুপারিশ

১. প্রয়োজনে সারা দেশে/ এলাকা ভিত্তিক কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

২. চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক ও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের পর্যাপ্ত মানসম্মত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

৩. প্রত্যেক জেলায় করোনা শনাক্তকরণ ও চিকিৎসাসেবা দ্রুত সম্প্রসারিত করতে হবে।

৪. অভাবগ্রস্ত পরিবারে রেশন কার্ডের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি গার্মেন্টস কর্মী ও শ্রমিক শ্রেণির মানুষ সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাদের আর্থিক সুবিধা ও সুচিকিৎসা প্রদান এবং খাদ্য সহায়তা দিতে হবে।

৬. সরকারি ত্রাণ ও অর্থ বিতরণে আওয়ামী লীগের ইতিহাস ভালো না। করোনা দুর্যোগেও সরকার দলীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও আওয়ামী লীগ নেতাদের লুটের চিত্র ফুটে উঠেছে। তাই দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিলে সঠিকভাবে পালন হবে বলে আমরা মনে করি। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীও এতে উপকৃত হবে।

৭. আক্রান্ত ও মৃতের সঠিক সংখ্যা উপস্থাপন করতে হবে। তথ্য লুকিয়ে মেকি সফলতা দেখানোর প্রবণতা জনগণের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে।

সুপারিশমালা তুলে ধরার আগে তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে কেউ যদি মুখ খোলে তাহলে মামলা দেওয়া হচ্ছে। রাখা হচ্ছে কারাগারে। শুধুমাত্র করোনা নিয়ে তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে এ পর্যন্ত ৮৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মানিকগঞ্জে বিএনপি নেতার মেয়েকে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার জন্য গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ত্রাণ আত্মসাৎ, খাদ্যে ভেজাল ও করোনা বিষয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর প্রকাশ করার অভিযোগে সাংবাদিকসহ ৪৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, এখন পর্যন্ত ৫১ লাখ ৮১ হাজার ৩৬০ পরিবারের মাঝে বিএনপি নেতা-কর্মীরা খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। র্সবমোট ২ কোটি, ৭ লাখ, ২৫ হাজার ৪৪০ জন মানুষ উপকৃত হয়েছে। ঈদের আগে গরীব মানুষের বাসা-বাড়িতে ঈদ উপহার ও নগদ অর্থও পৌঁছে দিয়েছে বিএনপি।

মানুষ চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভেন্টিলেটর, আইসিউ বেড ও অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য হাহাকার চলছে। হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই রোগী মারা যাচ্ছে। সিএনজি বা অ্যাম্বুলেন্সে স্ত্রীর চোখের সামনে স্বামীর মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। চারিদিকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। মানুষের আহাজারিতে বাংলাদেশের আকাশ ভারি হয়ে উঠছে।

এনপি-০৩