জৈন্তাপুরে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি


জুন ১৩, ২০২০
০৬:৩৭ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ১৩, ২০২০
০৬:৩৭ অপরাহ্ন



জৈন্তাপুরে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুর মোকামপঞ্জি খাসিয়া পল্লীর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা থেকে ২ নম্বর জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সৈয়দ আব্দুল হাসিম সন্দইকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী এবং খাসিয়া পল্লীবাসী। এ দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় খাসিয়া পল্লীর হেডম্যানসহ জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ। 

সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানা যায়, ৬/৭ বছর পূর্ব থেকে ভিকটিম মোকামপুঞ্জি খাসিয়া পল্লীর সুরেশ পাত্রের মেয়ে সুচনা পাত্রের সঙ্গে আলুবাগান গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ আব্দুল হাসিম সন্দই মেম্বারের পুত্র নাজিম উদ্দিনের প্রেমের সর্ম্পক ছিল। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর এক পর্যায়ে পরিবারিকভাবে ছেলের পক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হলে সুচনা পাত্রের পরিবার তাতে রাজি হয়নি। বিষয়টি সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি করতে খাসিয়া পুঞ্জিতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ কয়েক দফা সালিশ বৈঠক আহ্বান করেন। পরবর্তীতে জৈন্তাপুর থানায় ইউপি সদস্য সৈয়দ আব্দুল হাসিম সন্দই মিয়াকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। 

বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে জৈন্তাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এখলাছুর রহমান, স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের হেডম্যান বানন লামিন ও খাসিয়া সম্প্রদায়ের একাধিক সদস্য এবং ভিকটিমের পরিবারের সমন্বয়ে কয়েকটি সালিশ বৈঠক হয়। এছাড়া জনৈক ইউপি সদস্য একাধিকবার সামাজিকভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার চেষ্টাও করেন।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য সৈয়দ আব্দুল হাসিম সন্দই'র ছেলে ব্যবসায়ী শামীম আহমদ বলেন, আমরা চাই ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অপরাধীর সুষ্ঠু বিচার হোক। এ ঘটনায় আমার পিতা কোনোভাবেই জড়িত নন। শুধুমাত্র সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে তাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার পিতা একজন সমাজসেবী, শিক্ষানুরাগী ও সামাজিক মর্যাদা সম্পন্ন সালিশ ব্যক্তিত্ব। আমাদেরকে পারিবারিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও মান-সম্মান ক্ষুন্ন করতে এ ঘটনায় তাকে জড়িয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপ্রপ্রচার করা হয়েছে। আমি এই অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই এবং সরেজমিনে তদন্ত করে অবিলম্বে এ ঘটনায় প্রকৃত দায়ীদের চিহিৃত করে আমার পিতাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের হেডম্যান বানন লামিন বলেন, ভিকটিমের পরিবারে নাজিম উদ্দিন দীর্ঘ ৭/৮ বছর থেকে যাওয়া-আসা করত। আমরা কয়েক দফা বিষয়টি সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি করতে বৈঠক করি। সালিশ বৈঠকে থাকা অবস্থায় নাজিম উদ্দিন ও তার পিতা ইউপি সদস্য'র বিরুদ্ধে মামলা করার পর ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হই। ভিকটিমের পরিবার আমাদের আদিবাসী সম্প্রদায়ের সঙ্গে মামলার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেননি।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য কয়েক দফা সালিশ বৈঠক হয়েছে। আগামী ১৫ জুন এ ঘটনার বিষয়ে একটি সালিশ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এক্ষেত্রে ইউপি সদস্য সৈয়দ আব্দুল হাসিম সন্দই মেম্বার জড়িত নন। আমরা ঘটনায় প্রকৃত অপরাধী ব্যতীত অহেতুকভাবে জড়িত নন এমন ব্যক্তিদের হয়রানি না করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এখলাছুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের ওই সদস্য জড়িত নন, বরং ইউপি সদস্য বিষয়টি জানার পর সালিশের মাধ্যমে নিষ্পত্তির চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু উল্টো তাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা সামাজিকভাবে আপসে নিষ্পত্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

 

আরকে/আরআর-১৪