'ভুতুড়ে' বিল আর লোডশেডিংয়ে শায়েস্তাগঞ্জে ভোগান্তি

সৈয়দ হাবিবুর রহমান ডিউক, শায়েস্তাগঞ্জ


জুন ৩০, ২০২০
০৯:৫৯ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ৩০, ২০২০
০৯:৫৯ অপরাহ্ন



'ভুতুড়ে' বিল আর লোডশেডিংয়ে শায়েস্তাগঞ্জে ভোগান্তি

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের বিভ্রাটে জনজীবনে চরম ভোগান্তি নেমে এসেছে। মেঘ নেই, দমকা হাওয়া নেই, তবু বিদ্যুতের  ভেলকিবাজিতে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।

অভিযোগ রয়েছে এই করোনাকালে 'ভুতুড়ে' বিল আসার। স্বাভাবিকভাবে একজন গ্রাহকের যত বিল আসে, কারও কারও এর চেয়ে দুই/তিনগুণ বেশি বিল এসেছে। ফলে বিপাকে আছেন অনেক গ্রাহক।

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী রবিন মিয়া জানান, গতমাসে তিনি প্রতিদিন বিকেল ৪টায় দোকান লাগিয়ে চলে গেছেন। অথচ তার বিল এসেছে আগের চেয়ে দ্বিগুণ।

কেউ কেউ বলছেন, পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারীরা সরেজমিনে না এসে মিটারের রিডিং না দেখে অফিসে বসেই মনগড়া বিল তৈরি করছেন। তাই অতিরিক্ত বিল আসছে।

বেশ কিছুদিন ধরেই একবার বিদ্যুৎ গেলে আসতে প্রায় ২ থেকে ৩ ঘন্টা সময় লাগে। কখনও রাতব্যাপী, আবার কখনও দিনব্যাপী চলে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা। ইদানিং এ সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারন করেছে। প্রতিদিন ৪-৫ বার লোডশেডিং হয়। রাতের বেলা, ভোর রাতে কিংবা রোদেলা দিনেও ২/৩ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না।

গরমের দিনে বিদ্যুতের এই সমস্যার কারণে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অসুস্থ মানুষ আরও বেশি অসুস্থ হচ্ছেন। এছাড়া বিদ্যুতের এই বিভ্রাটের কারণে চরম ক্ষতির সম্মুখীন এই উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, অফিস, দোকানপাটসহ স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার ছাত্রছাত্রীরা। প্রায় সময় বিদ্যুৎ না থাকার কারণে বৈদ্যুতিক যন্ত্রনির্ভর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করতে পারছে না। অফিসের সকল কাজও বন্ধ থাকে বিদ্যুতের এই বিভ্রাটের কারণে।

বিদ্যুতের সমস্যা থেকে বাঁচতে পারছে না সাধারণ জনগণ ও এলাকার অনেক দরিদ্র শ্রমিক। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে তারা ব্যাটারি চার্জ দিতে পারছেন না। বিদ্যুতের এই সমস্যা সমাধান না হলে পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা পড়বে মহাসঙ্কটে। বিদ্যুৎচালিত অটোরিকশা চালিয়ে যারা জীবনযাপন করেন, তাদের অবস্থা খুব করুণ। আবার বিদ্যুৎ না থাকলে মোবাইলে থাকে না চার্জ। ফলে জরুরি কথা ও কাজ সম্পাদন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। করোনাকালে নেওয়া যায় না দেশের খবরাখবর।

শায়েস্তাগঞ্জের সাধারণ মানুষকে প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে কোনো উপায় না পেয়ে প্রায়ই দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ করতে। আবার কেউ কেউ পল্লী বিদ্যুতের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করার জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোতাহের হোসেন বলেন, আমাদের একটি পাওয়ার ট্রান্সমিটার নষ্ট ছিল। সেজন্য কিছু লোডশেডিং হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) পাওয়ার ট্রান্সমিটারটি ঠিক করা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার থেকে লোডশেডিং অনেকাংশেই কমে যাবে।

আর ভুতুড়ে বিলের বিষয়ে তিনি বলেন, করোনায় আমাদের জনবল সংকট ছিল। সবাই ঠিকমতো রিডিং লিখে আনতে পারেননি। যাদের অতিরিক্ত বিল এসেছে, তারা অভিযোগ জানালে তাদের বিল অবশ্যই সংশোধন করে দেওয়া হবে। 

 

এসডি/আরআর-১৪