বিশ্বনাথ প্রতিনিধি
জুলাই ২৪, ২০২০
০৬:২২ অপরাহ্ন
আপডেট : জুলাই ২৪, ২০২০
০৬:২২ অপরাহ্ন
সিলেটের বিশ্বনাথ থেকে অপহৃত নববধূ কোহিনুর আক্তার আশাকে (২১) ১৩দিন পর কিশোরগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার শতরদরিয়া গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে শাওন মিয়ার বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় শাওন মিয়াকে (২১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার শতরদরিয়া গ্রামের আব্দুর রহিমে ছেলে শাওন মিয়ার সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয় কোহিনুর আক্তার আশার। ১৩ দিন আগে আশাকে বিশ্বনাথ থেকে অপহরণ করে কিশোরগঞ্জে নিয়ে যায় শাওন। এরপর শাওন তার নিজ বাড়িতে কোহিনুরকে জিম্মি করে রাখে। ইতিপূর্বে একই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার দেবীদ্বার থানার গজারিয়া গ্রামের রাকিবুল ইসলামের স্ত্রী ও ছাতক উপজেলা সমবায় অফিসের এমএলএস রুজিনা আক্তার (৩০) এবং তার ভাই সিলেট সদর সমবায় অফিসের এমএলএস রাজিব সরকারকে (২৫) গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।
জানা যায়, ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার পানিশ্বর গ্রামের রমজান মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বনাথ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কর্মরত। সেই সুবাদে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে তিনি উপজেলা সদরের জানাইয়া রোডস্থ তেরাবুন ভিলায় ভাড়াটে হিসেবে বসবাস করে আসছেন। প্রায় ৫ বছর পূর্বে আত্মীয় ওমান প্রবাসী আলমগীর হোসেনের সঙ্গে তার বড় মেয়ে কোহিনুর আক্তার আশার বিয়ের ঠিক করা (এনগেজমেন্ট) হয়। গত ৫ জুন ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার নিজ বাড়িতে কোহিনুর আক্তার আশা ও আলমগীর হোসেনের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর স্বামী আলমগীরকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ১৯ জুন বিশ্বনাথে বাবার বাসায় আসেন কোহিনুর। এরপর গত ৯ জুলাই সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ করে বাসা থেকে নিখোঁজ হন। তখন বাসার আশপাশ ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করে মেয়ে কোহিনুরের সন্ধান না পাওয়ায় পরদিন বিশ্বনাথ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন রমজান আলী। এরপর নিখোঁজ কোহিনুরকে উদ্ধারের নামে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করার অভিযোগে গত সোমবার রুজিনা ও রাজিবকে অভিযুক্ত করে নিখোঁজ কোহিনুর আক্তার আশার পিতা বিশ্বনাথ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী রমজান মিয়া বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-১৫।
মামলা দায়েরের পর নিখোঁজ কোহিনুর আক্তার আশার অবস্থান প্রায় নিশ্চিত হয় পুলিশ। এরপর কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় বিশ্বনাথ থানার এসআই ফজলুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে অভিযান চালিয়ে করিমগঞ্জের শতরদরিয়া গ্রামের আব্দুর রহিমে পুত্র শাওন মিয়ার বাড়িতে কোহিনুর আক্তার আশাকে উদ্ধার এবং অপহরণের অভিযোগে শাওনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
ভিকটিম উদ্ধার ও অপহরণকারী শাওনকে গ্রেপ্তারের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার এসআই ফজলুল হক বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত শাওনকে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ভিকটিমকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়েছে।’
এমএএস/এনপি-০১