জগন্নাথপুর প্রতিনিধি
আগস্ট ২৩, ২০২০
০১:৪০ পূর্বাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ২৩, ২০২০
০১:৪০ পূর্বাহ্ন
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের তেলিকোনা গ্রামে জায়ের ওপর প্রতিশোধ নিতে দেড় বছরের শিশুকন্যাকে পানিতে ফেলে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছেন শিশুটির চাচি। আজ শনিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে সুনামগঞ্জের ১ম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে ঘটনার দায় স্বীকার করেন অভিযুক্ত চাচি সুবেনা আক্তার। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠায়।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'বড় জায়ের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে প্রতিশোধ নিতে তার ১৮ মাসের শিশুকন্যাকে পুকুরের পানিতে ফেলে হত্যার কথা শনিবার বিকেলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সুবেনা আক্তার। আমরা শিশুর বাবা রুমেন মিয়ার দায়ের করা মামলার আসামি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানোর পাশাপাশি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করতে আদালতে পাঠালে তিনি সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত দুই/তিনদিন পূর্বে উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের তেলিকোনা (নতুনপাড়া) গ্রামের রুমেন মিয়ার স্ত্রী সাজেদা বেগমের সঙ্গে তার দেবর পাবেল মিয়ার স্ত্রী সুবিনা আক্তারের তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি নিষ্পত্তি হলেও বড় জায়ের ওপর প্রতিশোধ নিতে ছোট জা সুবিনা আক্তার বড় জায়ের ১৮ মাসের শিশু কন্যা সাদিয়া বেগমকে গতকাল শুক্রবার (২১ আগস্ট) ভোরে বাড়ির নিকটবর্তী একটি ডোবার পানিতে ফেলে দেন। এ সময় প্রতিবেশী এক নারী বিষয়টি দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের জানান। পরে ডোবা থেকে শিশুর মরদেহ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ খবর পেয়ে পুলিশ শুক্রবার বিকেলে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরে পুলিশ শিশুর পিতার লিখিত অভিযোগ পেয়ে ওইদিন সন্ধ্যার দিকে অভিযুক্ত চাচি সুবিনা আক্তারকে (২৫) আটক করে জেলহাজতে পাঠায়।
নিহত শিশুর বাবা রুমেন মিয়া বলেন, 'দুই/তিনদিন পূর্বে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমার ছোট ভাইয়ের বৌয়ের কথা কাটাকাটি হয়। এই সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে আমার স্ত্রীর ওপর প্রতিশোধ নিতে আমাদের শিশুকন্যাকে পানিতে ফেলে হত্যা করা করেছে। এ ঘটনায় আমি লিখিতভাবে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'ঘটনার দিন (শুক্রবার) ফজরের আজানের পর আমি কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হই। এ সময় আমার স্ত্রী শিশুকন্যাকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। সকালের দিকে আমি খবর পাই আমার শিশুকন্যাকে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।'
স্থানীয় ইউপি সদস্য আশ্বাদুল হক বলেন, 'সকালে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে জানতে পারি শিশুটিকে তার চাচি সুবিনা আক্তার ভোরবেলা পরিবারের লোকজনের অগোচরে পানিতে ফেলে দিয়েছেন। প্রতিবেশী এক নারী এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন। পরে লোকজন ডোবার পানি থেকে শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করেন।'
এএ/আরআর-০৬