মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের উপনির্বাচন : তৎপর সম্ভাব্য প্রার্থীরা

সাইফুল্লাহ হাসান, মৌলভীবাজার


সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০
০৭:১৯ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০
০২:০৬ পূর্বাহ্ন



মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের উপনির্বাচন : তৎপর সম্ভাব্য প্রার্থীরা

মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রবীণ রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আজিজুর রহমান গত ১৮ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হলে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ তফাদার রিজুয়ানা ইয়াসমিন সুমি গত ৬ সেপ্টেম্বর অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান। এরপর ১৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে, আগামী ২০ অক্টোবর মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর পরই প্রচারে সরব হয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তাদের সমর্থকরাও নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে কোথাও কোথাও অনেকেই পছন্দের প্রার্থীর সমর্থনে মতবিনিময় সভা শুরু করেছেন। ভোটারদের দোয়া ও আশীর্বাদ চাচ্ছেন তারা। তবে নিরব রয়েছেন ভোটাররা। এখন পর্যন্ত কোনো ভোটারকে কারও সঙ্গে প্রচারে দেখা যায়নি।

এদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ডজনখানেক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পেতে ছুটছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারে দ্বারে। অনেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে লবিং শুরু করেছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া তারা। সবশেষে কে দলীয় মনোনয়ন পাবেন- এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তবে ধারণা করা হচ্ছে ক্লিন ইমেজ ও দলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ণ করা হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালালেও তারিখ ঘোষণার পর থেকে মাঠে সক্রিয় সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীও। তবে বিএনপি, জাসদ, খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট ও জামায়াতসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীদের প্রচারকাজে দেখা যায়নি। ওই সকল দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি না এখন পর্যন্ত স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না।

সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন- প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর সহধর্মিনী, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সৈয়দা সায়রা মহসীন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিছবাহুর রহমান, গেল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে (স্বতন্ত্র) প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক সাংসদ ও ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এম শাহীন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, গেল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী এম এ রহিম (সিআইপি), মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জাতীয় পরিষদের সদস্য মো. ফিরোজ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা পুলিশের সাবেক এআইজি বজলুল করিম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুহিবুর রহমান তরফদার, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সৈয়দ শাহাব উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান বাবুল, জেলা যুবলীগের সভাপতি মো. নাহিদ আহমদ ও আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য সোহেল আহমদ।

নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন বলে শোনা যাচ্ছে গেল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে (স্বতন্ত্র) প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়া গণফোরামের সাবেক জেলা সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক বকশী ইকবাল আহমদের নাম।

সাবেক সাংসদ সৈয়দা সায়রা মহসিন বলেন, 'এলাকার জনগণ আমাকে চাইছে। দল মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। আমার স্বামী সৈয়দ মহসিন আলী সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। আমিও সেই আদর্শ লালন করি। নেত্রী আমাকে যদি সুযোগ দেন, তাহলে মানুষের জন্য কাজ করে যাব।'

ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এম শাহীন বলেন, 'মানুষের সেবা করাটাই আমার শখ। এজন্য একটি জায়গা প্রয়োজন। জেলা পরিষদকে উপযুক্ত মনে করছি। এ পদে নির্বাচিত হলে পুরো জেলার সেবা করার সুযোগ হবে। সেই চিন্তা থেকেই আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।'

মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান। তিনি বলেন, 'আমি মনোনয়ন চাইব। বাকিটা নেত্রীর সিদ্ধান্ত। আমাদের নেত্রী যাকে প্রার্থী করবেন তার পক্ষেই কাজ করে যাব। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।'

জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি সৈয়দ শাহাব উদ্দিন আহমদ বলেন, 'দলের নির্দেশে প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছি। তবে চূড়ান্তভাবে দল যে সিদ্ধান্ত দেবে আমি সেটা মেনে নেব।'

বিএনপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, 'জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য এখন পর্যন্ত দলীয়ভাবে কোনো নির্দেশনা আসেনি। এর আগে কিছু বলা যাচ্ছে না।' 

জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যমতে, মৌলভীবাজারের ৭টি উপজেলার ৬৭টি ইউনিয়ন, ৫টি পৌরসভা ও ৭টি উপজেলা মিলে ৯৪৩ জন ভোটার রয়েছেন।

 

এসএইচ/আরআর-০৪