জকিগঞ্জের আ.লীগ নেতা ফারুকের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন

জকিগঞ্জ প্রতিনিধি


সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০
১০:০২ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০
১০:০২ অপরাহ্ন



জকিগঞ্জের আ.লীগ নেতা ফারুকের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন
উন্নত চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ

গুরুতর অসুস্থ হয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আইসিইউতে আছেন সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা, বার বার কারাবরণকারী ও নির্যাতিত নেতা ফারুক আহমদ। গত রবিবার রাতে ফারুক হঠাৎ বুকে ব্যাথা অনুভব করেন ও বমি করে জ্ঞান হারান। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সোমবার তাঁকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সিলেট নগরের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন তাঁর পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে, দ্রুত অস্ত্রোপাচার করা লাগবে। এরপর গতকাল মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় অস্ত্রোপাচার করা হয়। কিন্তু এই অস্ত্রোপাচার নিয়ে নানা বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অস্ত্রোপাচারের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে ফারুক আহমদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়। আজ বুধবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চিকিৎসকরা তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার হাসপাতালে পাঠাতে স্বজনদের তাগিদ দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, চিকিৎসক পিত্তথলিতে অপারেশন করতে গিয়ে লাংসে অপারেশন করে ফেলেছেন। এ কারণে ফারুক আহমদ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তবে ইবনে সিনা হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জামাল আহমদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অস্ত্রোপাচারের সময় লাংসে সমস্যা দেখে লাংসেই অস্ত্রোপাচার করা হয়েছে। পিত্তথলির পাথর বের করা সম্ভব হয়নি।

ফারুক আহমদের পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, তিনি সংকটাপন্ন অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া লাগবে। ফারুককে বাঁচাতে তাঁর অবুঝ তিন সন্তানসহ পরিবার-পরিজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, ১৯৮৮ সালের দিকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন জকিগঞ্জ পৌর এলাকার আনন্দপুর গ্রামের ফারুক আহমদ। ১৯৯৬ সালে বিএনপি সরকারের একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে বিস্ফোরক মামলায় একটানা ৫ বছর কারাগারে ছিলেন ফারুক। ১/১১ কেটেছিল ফেরারি হয়ে। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান নিয়ে জেলহাজতে ছিলেন। আওয়ামী রাজনীতিতে ফারুক শেষ করে দিয়েছেন নিজের জীবন, যৌবন ও সহায়-সম্পত্তি। দলের মধ্যে রয়েছে তাঁর ক্লিন ইমেজ। রাজনৈতিক জীবনে তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক, জেলা যুবলীগের সদস্য, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন। বিগত পৌরসভা নির্বাচনে অল্প ভোটে মেয়র পদে পরাজিত হন পরাজিত। আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। দলের পোড় খাওয়া ও দলীয় সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত ফারুক আহমদকে সঙ্কটকালে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী জানান, ফারুক আহমদের অসুস্থতার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন তিনি। তিনি আগে গুরুতর অবস্থার খবর জানতেন না।

সিলেট-৫ আসনের সংসদ সদস্য ড. হাফিজ আহমদ মজুমদার এ প্রসঙ্গে জানান, ফারুক আহমদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসকের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ত্যাগী এই নেতা সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় শুনে তাঁর কষ্ট লাগছে। উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তিনি খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।

 

ওএফ/আরআর-১৩