নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০
০৭:০২ পূর্বাহ্ন
আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০
০৭:০২ পূর্বাহ্ন
বিভিন্ন দোকান ও গাড়ির গ্যারেজ থেকে নামিদামি ব্র্যান্ডের খালি মবিলের কনটেইনার সংগ্রহ করে কারখানা থেকে ভরা হতো ব্যবহৃত মবিল। এরপর কনটেইনারে হুবহু নামিদামি কোম্পানির মোড়ক লাগিয়ে তুলনামূলক কম দামে বাজারে বিক্রি করা হতো। প্রায় ১০ বছর ধরে এভাবেই সিলেটে ব্যবসা পরিচালনা করছিল মুক্তা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও র্যাব-৯ এর যৌথ অভিযানে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়। দক্ষিণ সুরমায় খোজারখলা এলাকার এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি ধ্বংস করা হয়েছে প্রায় দুই হাজার লিটার খোলা ও ভেজাল মবিল এবং দেড় হাজার বিভিন্ন নামিদামি প্রতিষ্ঠানের খালি কনটেইনার।
সকাল ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম মাসুদ ও র্যাব-৯ এর সহকারী পুলিশ সুপার ওবাইন। এতে সহযোগিতা করেন অধিদপ্তরের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী ও র্যাব-৯ এর সদস্যরা।
র্যাব জানায়, দক্ষিণ সুরমার দক্ষিণ খোজারখলায় নকল মবিল উৎপাদনের কারখানায় বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের এবং নকল-ভেজাল মবিল মোড়কজাত করা হচ্ছিল। খবর পেয়ে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও র্যাব। এ সময় কারখানার দায়িত্বে থাকা কর্মচারী খালেক মিয়াকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে প্রায় ১০ বছর ধরে এ ব্যবসা চালিয়ে আসার কথা স্বীকার করেন খালেক মিয়া।
খালেক মিয়া জানান, বিভিন্ন গ্যারেজ ও দোকান থেকে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মবিলের খালি কনটেইনার সংগ্রহ করে কারখানায় আনা হয়। পরে সেগুলোতে বাজারের খোলা মবিল ভর্তি করে আবার নতুন করে মোড়কজাত করা হতো। এরপর বাজারে প্রচলিত দামের চেয়ে তুলনামূলক কম দামে সরবরাহ করা হতো। ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের জন্য সেগুলো কিনে নিয়ে গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করতেন।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক আমিরুল ইসলাম সিলেট মিররকে জানান, বিভিন্ন বিদেশি ব্রান্ডের লোগো ব্যবহার এবং নকল-ভেজাল মবিল উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বিক্রির অপরাধে মুক্তা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এসময় বিভিন্ন কোম্পানির নামে স্টিকার সংবলিত প্রায় ১ হাজার ৫০০টি কন্টোইনার ও ২ হাজার লিটার ইঞ্জিন অয়েল জব্দ ও ধ্বংস করা হয়। এছাড়াও কারখানাটি থেকে অয়েল বোতলজাত করণের মেশিন, আয়রণ, রং ও বিপুল পরিমান ভেজাল ইঞ্জিন অয়েল জব্দ ও ধ্বংস করা হয়।
তিনি বলেন, ‘কারখানাটিতে ভেজাল ও নিম্নমানের মোড়কজাত করা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মবিল দেখে বোঝার উপায় নেই সেগুলো নকল। কারখানা থেকে ভেজাল ইঞ্জিন অয়েল বিক্রির প্রায় দুইশটি বিক্রয় রশিদ জব্দ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সেগুলো অনুসরণ করে ওইসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
বিএ-০৬