পুলিশ গণধর্ষণের প্রতিবাদ করতে দিচ্ছে না ছাত্রদলকে

নিজস্ব প্রতিবেদক


সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২০
০৩:০২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২০
০৩:০২ পূর্বাহ্ন



পুলিশ গণধর্ষণের প্রতিবাদ করতে দিচ্ছে না ছাত্রদলকে
সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন

সিলেটে পুলিশ গণধর্ষণের প্রতিবাদ করতে দিচ্ছে না ছাত্রদলকে। এমসি কলেজে ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মী কর্তৃক স্বামীর কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে গৃহবধুকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে কোনো ধরনের কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নেতারা। সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ করেন। ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকারটুকুও পুলিশি বাধায় পালন করতে পারছে না বলেও মন্তব্য করেন তারা। এছাড়াও এক প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদল নেতারা কলেজ অধ্যক্ষ ও হল সুপারের পদত্যাগ ও বহিষ্কৃত দুই কর্মচারীকে পুনঃবহালের দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান বলেন, সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের প্রতিবাদে আমরা গত শনিবার নগরীতে একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করেছিলাম। সেই শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ হামলা চালিয়ে আমাদের ৯/১০ জন নিরীহ নেতাকর্মীকে পিঠিয়ে আহত করেছে। এমনকি পুলিশ সেই মিছিলে গুলিও চালায়। অল্পের জন্য আমাদের নেতাকর্মীরা গুলি থেকে রক্ষা পেলেও লাঠিচার্জ থেকে রক্ষা পায়নি। তিনি বলেন, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের ওপর সীমাহিন জুলুম নিপীড়ন চালাচ্ছে।
ফজলে আহসান বলেন, সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রদল কেন্দ্র ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ আমাদের বাধা দিয়ে কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ একই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শহীদ মিনার প্রাঙ্গনসহ নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মানববন্ধনসহ নানা প্রতিবাদী কর্মসসূচি পালন করছে। একই দেশে দুই আইন কার স্বার্থে। আমাদের কি সিলেটে কোন কর্মসূচি পালনের অধিকার নেই। আমরা কি এদেশে নাগরিক নই?
বিরোধীমত হওয়ার কারণে আমরা দীর্ঘ ১২টি বছর ধরে সরকারের সীমাহিন জুলুম-নিপীড়ন ও হামলা-মামলার শিকার হয়ে আসছি। আমাদের প্রতিটি নেতাকর্মী মামলার ভারে জর্জড়িত। সকাল হলে আদালত প্রাঙ্গন আমাদের নেতাকর্মীদের জন্য যেন অঘোষিত ক্যাম্পাসে পরিনত হয়ে যায়। ছাত্রলীগের হাতে সিলেটের শতবর্ষের ঐতিহ্যের স্মারক এমসি কলেজ ছাত্রাবাস পুড়ে ছাই হয়ে যায়। টিলাগড় এলাকায় অবস্থিত দুটি শীর্ষ কলেজ এমসি ও সরকারি কলেজ। সেই টিলাগড় এলাকাকে ছাত্রলীগ ডেঞ্জার জোনে পরিনত করেছে। ১২ বছরে এই টিলাগড় প্রাঙ্গনে ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দলে প্রায় এক ডজনেরও বেশি ছাত্রলীগ নেতাকর্মী খুন হয়েছেন। ছাত্রাবাস পুড়ানোসহ এসব খুনের কোন ঘটনার বিচার না হওয়ায় ছাত্রলীগ এমসি ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনা ঘটানোর সুযোগ পেয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে দ্রæততম সময়ের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের সুযোগ প্রদানের জন্য আহবান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষ, জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দেলোওয়ার হোসেন নাদিম, মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি তোয়াফেল আহমদ, সহ-সভাপতি আব্দুল হাসিব ও তানভীর আহমদ চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি জুবের আহমদ ও এনামুল কবির চৌধুরী সুহেল প্রমুখ।
এএন/০৯