ওসমানীনগর প্রতিনিধি
অক্টোবর ০৬, ২০২০
১২:৫৭ পূর্বাহ্ন
আপডেট : অক্টোবর ০৬, ২০২০
১২:৫৯ পূর্বাহ্ন
সিলেটের ওসমানীনগরে বিয়ের প্রলোভনে কিশোরীকে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে 'ধর্ষণ' ও তার গর্ভের সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্তের বাবা, মা ও চাচাকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। আজ সোমবার (৫ অক্টোবর) সিলেটের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে অভিযুক্তরা হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এর পূর্বে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নের রাতখাই গ্রামের মজনু মিয়ার পুত্র রায়হান মিয়ার বয়স অপ্রাপ্ত দেখিয়ে নারী ও শিশু আদালতে জামিন চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সোমবার কারাগারে প্রেরিত অভিযুক্তরা হলেন- অভিযুক্ত রায়হানের বাবা রাতখাই গ্রামের মজনু মিয়া, মা হামিদা বেগম ও চাচা কামরু মিয়া।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী হুসাইনুর রহমান লায়েছ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই মামলার প্রধান অভিযুক্ত রায়হানকে বয়সে শিশু দেখিয়ে শিশু আদালতে জামিনের আবেদন করলেও সংশ্লিষ্ট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মানবিক দিক বিবেচনা করে পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে আসার পূর্ব পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নের রাতখাই গ্রামের নির্যাতিতা কিশোরীর পিতা পেশায় একজন রিকশাচালক। নিজের সংসার চালাতে কষ্ট হওয়ায় ছোটবেলা থেকে একই গ্রামে মামা মজনু মিয়ার বাড়িতে বড় হতে হয়েছে কিশোরীকে। কিশোরী মামার বাড়িতে থাকার সুবাদে মামাতো ভাই রায়হান গতবছরের ১০ অক্টোবর রাতে প্রথমে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রায়হান শারীরিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখে। একপর্যায়ে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হলে বিষয়টি জানাজানির পর কয়েকদিনের মধ্যে তাকে রায়হানের স্ত্রী করে ঘরে তোলা হবে- এমন প্রতিশ্রুতিতে কিশোরীকে একই গ্রামে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন রায়হানের বাবা মজনু মিয়া। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় একাধিক সালিশ ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় ধর্ষকের পরিবারের লোকজন কিশোরীকে ৫০ হাজার টাকা প্রদানের আশ্বাসসহ কিশোরীর গর্ভপাত করার প্রস্তাব প্রদান করে। এতে কিশোরীর পরিবার রাজি না হওয়ায় শুরু হয় গ্রাম্য শালিশ।
অবশেষে ওই কিশোরী গত ৯ আগস্ট একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। এরপর কিশোরী দেড়মাসের কন্যা শিশুকে নিয়ে পিতার স্বীকৃতির দাবিতে একাধিকবার রায়হানের পরিবারের কাছে গেলে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে কিশোরীর পিতা বাদী হয়ে ওসমানীনগর থানায় ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় রায়হান (১৯), তার বাবা মজনু মিয়া, মা হামিদা বেগম ও চাচা কামরু মিয়ার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
ইউডি/আরআর-১৪