ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক করে টাকা আদায় করত তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক


অক্টোবর ০৯, ২০২০
০৫:০৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ০৯, ২০২০
০৫:০৩ পূর্বাহ্ন



ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক করে টাকা আদায় করত তারা
সিলেটে দুই অনলাইন প্রতারক গ্রেপ্তার

সিলেটে অনলাইন প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৯। বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, প্রতারণা চক্রের প্রধান মামুন মিয়া (২০) ও তার অন্যতম সহযোগী আফজাল হোসেন (২০)। তবে এই চক্রের আরেক সদস্য জাবের আহম্মেদকে (২৯) গ্রেপ্তার করতে পারেনি র‌্যাব। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সিলেট শহরতলীর মুরাদপুরস্থ র‌্যাব-৯ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৯ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু মুসা মো. শরীফুল ইসলাম। তিনি জানান, সিলেটে একটি সাইবার প্রতারকচক্র ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকের মাধ্যমে প্রবাসী, দেশের বিত্তশালী ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে বিভিন্ন প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বড় অংকের টাকা আদায় করতো। হাতিয়ে নেওয়া টাকা জমা হতো প্রতারকচক্রের সদস্যদের বিকাশ অ্যাকাউন্টে। প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে এ বিষয়ে তদন্তে নামে র‌্যাব-৯। তী² নজরদারি আর গভীর তদন্তের পর অবশেষে বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় বিকাশের টাকা উত্তোলনের সূত্র ধরে র‌্যাবের একটি দল নগরের চৌকিদেখির ১ নম্বর রোডের ২৩/১ বাসায় অভিযান চালিয়ে সাইবার প্রতারকচক্রের প্রধান মামুন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। মামুন এই বাসায় বাড়া থাকতেন। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী বেলা ১১টায় সুনামগঞ্জ থেকে মামুনের অন্যতম সহযোগী আফজাল হোসেন রিমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

র‌্যাব-৯ এর অধিনায়ক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামুন জানান- বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘেঁটে এবং ইউটিউব থেকে হ্যাকিং বিষয়ক ভিডিও দেখে তিনি হ্যাকিং শিখেন। একপর্যায়ে মামুন হ্যাকিংয়ে দক্ষ হয়ে ওঠেন এবং একের পর এক প্রবাসী, বিত্তশালী ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে থাকেন। হ্যাক করার পর ওই অ্যাকাউন্টের ফ্রেন্ড লিস্ট পর্যবেক্ষণ করে আইডি’র মূল মালিকের আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুর কাছে অতি প্রয়োজন দেখিয়ে, আকস্মিক কোনো সমস্যা অথবা কোনো দরিদ্র লোকের চিকিৎসার কথা বলে টাকা চাইতেন এবং বিকাশের মাধ্যমে সে টাকা আনতেন। পরে মামুন তার দুই সহযোগী রিমন ও জাবেরের মাধ্যমে সিলেট এবং সুনামগঞ্জের বিভিন্ন বিকাশ পয়েন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করতেন।

র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাকে মামুন বলেছেন- একসময় হ্যাকিং করা তাদের নেশা ও এর মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ পেশা হয়ে দাঁড়ায়। এভাবে অর্থ কামিয়ে উন্নত জীবনযাপন করা এবং অল্প সময়ে ধনী হওয়াই তাদের লক্ষ্য ছিল। মামুন ও তার দুই সহযোগী গত ফেব্রæয়ারি থেকে এ পর্যন্ত প্রতি মাসে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় করতেন। 

সাইবার প্রতারকচক্রের এই তিনজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানানো হয়েছে র‌্যাবের পক্ষ থেকে। 

বিএ-০৪