সিলেট মিরর ডেস্ক
অক্টোবর ১৩, ২০২০
০৬:০৩ পূর্বাহ্ন
আপডেট : অক্টোবর ১৩, ২০২০
০৬:০৩ পূর্বাহ্ন
দি ম্যান অ্যান্ড কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফারুক আহমদ মিছবাহ'র বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেছেন কোম্পানির চেয়ারম্যান এম এ মোক্তাদির। সোমবার (১২ অক্টোবর) সিলেট নগরের মেন্দিবাগ এলাকায় একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অব্যবস্থাপনা ও আর্থিক অসচ্ছতাসহ আরও নানা অভিযোগ উত্থাপন করেছেন এম এ মোক্তাদির। এম এ মোক্তাদিরের পক্ষে তার ছেলে নওশাদ আল মোক্তাদির সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘দি ম্যান অ্যান্ড কোম্পানির প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল হাফিজের মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশগণ উত্তরাধিকার সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলেও তাদেরকে শেয়ার হোল্ডার হিসেবে নিবন্ধন করা হয়নি। মিছবাহ বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত বা অন্যান্য পরিচালকের মতামতকে কোনো গুরুত্বই দেন না। কার্যনির্বাহী কমিটি বার বার সভা আহ্বান করলেও তিনি এসব সভায় উপস্থিত থাকেন না।’
মোক্তাদির বলেন, ‘ফারুক আহমদ মিছবাহর পরামর্শে কোম্পানি শাহ ডেভলপার কোম্পানিতে ১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ভেজাল জমি কেনেন। এ জমি কিনতে ১২ কোটি টাকা উত্তোলন করলেও মোটা অংকের টাকা নিজের কাছে রেখে দেন। এর মধ্যে কোম্পানির বিনিয়োগকৃত ১ কোটি টাকার কোনো হিসাব প্রদান করেননি। মিছবাহ নিজে শাহ ডেভেলপার কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। গার্ডেন টাওয়ার ও স্প্রিং গার্ডেনের ফ্ল্যাট মালিকরা সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করলেও তিনি রেজিস্ট্রেশন করতে গড়িমসি ও জটিলতা সৃষ্টি করে রেখেছেন। সার্ভিস চার্জ দিয়ে দি ম্যান অ্যান্ড কোম্পানিকে রক্ষণাবেক্ষণ ও ভাড়া আদায়ের দায়িত্ব দিলেও তিনি ভাড়ার টাকা আদায় করে নিজে খরচ করেছেন।’
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘গত ১০ বছরে কোম্পানির কোনো এজিএম বা ইজিএম হয়নি। যার দায়িত্ব ছিল মিছবাহ'র। জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে তিনি দি ম্যান অ্যান্ড কোম্পানির কোনো হালনাগাদ তথ্যও প্রদান করেননি। তিনি ভুয়া অডিট রিপোর্ট ও বিভিন্ন সময়ে এজিএম বা ইজিএম অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে একসঙ্গে ১০ বছরের রিটার্ন দাখিলের চেষ্টা করেছিলেন এই বছর। এ কারণে কোম্পানির শেয়ার হোল্ডারগণ গত মার্চের ১৫ তারিখে তাকে একটি লিগ্যাল নোটিশও পাঠিয়েছিলেন। তিনি বেআইনিভাবে এবি ব্যাংক গার্ডেন টাওয়ার শাখা থেকে ২০ লাখ টাকা তুলে নিয়ে গেছেন। এই বিষয়ে মামলা দায়ের হয়েছে এবং বিচার চলছে। কোম্পানির চেয়ারম্যান হিসেবে আমি ১৪ জুলাই নোটিশের মাধ্যমে ৫ আগস্ট কোম্পানির ইজিএম আহ্বান করলে মিছবাহ হাইকোর্ট থেকে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আসেন, এরপর তা প্রত্যাহারও করেন।’
তিনি বলেন, ‘মিছবাহর এসব কর্মকাণ্ডে কোম্পানির ২ জন পরিচালক গত ২০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে দুটি মামলা করেন। এসব মামলায় দি ম্যান অ্যান্ড কোম্পানির নথি তলব, সম্পত্তি বিক্রি ও শেয়ার হস্তান্তরে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। মিছবাহ কোম্পানির বিভিন্ন পরিচালকের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের করছেন, জিডি করাচ্ছেন। কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান ড. এনামুল হক সরদারকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। তিনি ১৫ বছর এই কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে ২০১৮ সালে অব্যাহতি নিয়েছেন। এনামুল হক সরদার ২০১০ সাল থেকে কোম্পানির ৫ নম্বর টাওয়ার ভাড়া নিয়ে তিনি কলেজ পরিচালনা করছেন ও নিয়মিত ভাড়া দিচ্ছেন। কিন্তু গত ২ বছর কোম্পানি চুক্তি অনুযায়ী পানি সরবরাহ না করায় এবং অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিল দেওয়ায় কলেজের সুনাম নষ্টের পাশাপাশি তিনি আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মিছবাহ'র স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সমস্যাটির সমাধান হয়নি।’
আব্দুল মোক্তাদির আরও বলেন, ‘মিছবাহ'র কাছে কোম্পানির মোট দেড় কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। তাছাড়া সিটিসেল কোম্পানির সঙ্গে ৬০ লাখ টাকা দফারফার বিষয়েও কোনো সঠিক জবাব এখনও দেননি। এনামুল হক সরদারসহ আমরা কোম্পানির শেয়ার হোল্ডাররা কোম্পানির কাছে ২ কোটি টাকা পাই। মিছবাহ্ সুষ্ঠু হিসেবও দেননি।’ সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানির পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএ-০৭