মৌলভীবাজারে পাম্প ক্রয়ে ৩৪ কোটি টাকার দুর্নীতি, দুদকের মামলা

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি


অক্টোবর ২২, ২০২০
১১:৩৫ অপরাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ২২, ২০২০
১১:৩৫ অপরাহ্ন



মৌলভীবাজারে পাম্প ক্রয়ে ৩৪ কোটি টাকার দুর্নীতি, দুদকের মামলা

মৌলভীবাজারের কাউয়াদিঘি হাওরের কাশিমপুর পাম্প হাউজের পাম্প ক্রয়ে ৩৪ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একাধিক প্রকৌশলীসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের হবিগঞ্জ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান। তিনি জানান, গতকাল বুধবার দুদকের হবিগঞ্জ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক সহিদুর রহমান মামলাটি করেছেন। এই মামলার বাদী দুদক। 

মামলার আসামিরা হলেন- পাউবো'র যান্ত্রিক সরঞ্জাম বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী চৌধুরী নজমুল আলম, পাউবো'র পাবনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও সাবেক প্রকল্প পরিচালক এস এম শহিদুল ইসলাম, ঢাকা যান্ত্রিক (পাম্প হাউস) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান, ঢাকার কেন্দ্রীয় যান্ত্রিক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো আবু তালেব, ঢাকা যান্ত্রিক (পাম্প হাউজ) বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এম গোলাম সরওয়ার, পাউবো'র নকশা সার্কেল-৩ (যান্ত্রিক) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্বাছ আলী, ডিজাইন সার্কেল-১ ঢাকার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল বাছিত, চাঁদপুর যান্ত্রিক উপ-বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. রুহুল আমিন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিগমা ইঞ্জিনিয়ারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, চেয়ারম্যান প্রকৌশলী সৈয়দ আরশেদ রেজা এবং জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. আব্দুস সালাম। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে কাশিমপুর পাম্প হাউস পুনর্বাসন প্রকল্পের জন্য প্রকৃত দামের চেয়ে বেশি দামে পাম্প কিনেছেন। অনুসন্ধানে ৮টি পাম্পের প্রকৃত মূল্য পাওয়া যায় ২০ কোটি ৪১ লাখ টাকা। অথচ বিল হিসেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরকারের কাছ থেকে আদায় করেছে ৫৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এতে সরকারের ৩৪ কোটি ৪২ লাখ ১৭ হাজার ১শ ৯৬ টাকা ২০ পয়সা ক্ষতি হয়েছে। তারা দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

উল্লেখ্য, মৌলভীবাজারের কাউয়াদিঘি হাওরের জমির ধান চাষ পাম্প হাউজের সেচ প্রকল্পের ওপর নির্ভরশীল। মনু নদী সেচ প্রকল্পের অধীনে মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি হাওরের ২৪ হাজার ১৭ হেক্টর এলাকার ১৯ হাজার ২২৮ হেক্টর চাষযোগ্য জমির বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ ব্যবস্থা প্রদান করার লক্ষ্য নিয়ে কাশিমপুর পাম্প হাউজে দ্বিতীয়বারের মতো স্থাপন করা হয়েছে নতুন পাম্প মেশিন। এই প্রকল্পে ৮টি পাম্পের মূল্য দেখানো হয় ৫৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, যার প্রকৃত মূল্য পাওয়া যায় ২০ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এই ৩৪ কোটি ৪২ লাখ টাকার দুর্নীতির অভিযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী চৌধুরী নজমুল আলমসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করল দুদক।

 

এসএইচ/আরআর-০৯