সাগর-রুনি হত্যার তদন্তে আরও ৬ মাস সময় পেল টাস্কফোর্স

সিলেট মিরর ডেস্ক


এপ্রিল ২২, ২০২৫
০২:২৪ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২২, ২০২৫
০২:২৬ অপরাহ্ন



সাগর-রুনি হত্যার তদন্তে আরও ৬ মাস সময় পেল টাস্কফোর্স

সাগর-রুনি হত্যার তদন্তে আরও ৬ মাস সময় পেল টাস্কফোর্স


১৩ বছর ধরে ঝুলে থাকা সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করতে টাস্কফোর্সকে আরও ছয় মাস সময় দিয়েছে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আরশাদুর রউফ তদন্ত শেষ করতে নয় মাস সময় চান। 

শুনানি শেষে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি সিকদার মাহমুদুর রাজীর বেঞ্চ তদন্ত শেষ করতে ছয় মাস সময় দেয়।

অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আরশাদুর রউফ আদালতে বলেন, তদন্তের অগ্রগতি হয়েছে। আরও সময় দরকার। ৫ অগাস্টে ডিবি অফিসে আগুন দেওয়া হয়। তখন অনেক রেকর্ড পুড়ে গেছে।

তিনি জানান, তদন্তের ‘গোপনীয়তার’ কারণ দেখিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ এদিন অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেনি।

মামলার বাদী পক্ষের কৌঁসুলি মো. শিশির মনির বলেন, বারবার সময় নেওয়া হলে জনমনে খারাপ ধারণার জন্ম দেয়। আমরা বলেছিলাম তিন মাস সময় দেওয়া হোক। শুনানি শেষে হাইকোর্ট ছয় মাস সময় দেন।

এদিকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল নথি পোড়ার কথা বলায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এই প্রেক্ষাপটে টাস্কফোর্সের অধীনে মামলা তদন্তের দায়িত্বে থাকা পিবিআই একটি বিবৃতি দিয়েছে।

সেখানে বলা হয়, কেউ কেউ ডিবির নথি পুড়ে যাওয়ার নিউজ করছেন তা সঠিক নয়। আগুনে পুড়ে যাওয়ার কথা বলা হয় নাই। অ্যাডিশনাল অ্যাটর্নি জেনারেল জনাব আরশাদ রউফ বলেছেন, ডিবির অধিকাংশ অফিসার বদলি হওয়ায় পুরনো নথি ও ডকুমেন্টস খুঁজে পাওয়া সময় সাপেক্ষ।’

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া করা বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি।

হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলী রোমান শেরেবাংলা থানায় মামলা করেন। ১৩ বছর পার হলেও তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি।

বিভিন্ন সময়ে মোট আটজনকে এ মামলায় গ্রেফতার করা হয়। পরে দুজন জামিনও পান।

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর শেরেবাংলা নগর থানাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিন দিন পর মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মামলাটি র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের রহস্য উন্মোচন করে তা জাতির সামনে প্রকাশ করা হবে; কিন্তু এক যুগেও সে রহস্য উন্মোচন করতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

দায়িত্ব পেয়ে ডিএনএসহ অন্যান্য বায়োমেট্রিক পরীক্ষার জন্য ঘটনাস্থল থেকে বটি, পরিধেয় কাপড়সহ বেশ কিছু বস্তু পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবেও পাঠায় র্যাব। কিন্তু এতদিনেও তার ফল প্রকাশ করা হয়নি।

তদন্ত প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা নিহত সাংবাদিক দম্পতির পরিবার এবং পেশাজীবীদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এ মামলার দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।

গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তের দায়িত্ব থেকে র্যাবকে বাদ দেওয়া হয় এবং একইসঙ্গে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করে এ তদন্ত কাজ সম্পন্ন করতে ছয় মাস বেঁধে দেয় হাইকোর্ট। টাস্কফোর্সের অধীনে পিবিআই মামলাটির তদন্ত করছে।

জিসি / ০৩