নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ২৭, ২০২০
০৬:১৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : অক্টোবর ২৭, ২০২০
০৬:১৫ পূর্বাহ্ন
অ্যাডভোকেট এ এইচ এরশাদুল হকের বিরুদ্ধে আবারও নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন সিলেট নগরের উত্তর বালুচর এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম। গতকাল সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই আমাকে নির্যাতন করা শুরু করেন এরশাদুল হক। নির্যাতনে গর্ভের সন্তানও নষ্ট হয়। বারবার বাসায় এসে টাকা চাইতেন। না দিলে ব্যাপক নির্যাতন করতেন আমাকে। এরপর গত ২১ অক্টোবর একমাত্র সন্তান ইশরাত জাহান ইমুকে (৫) নিয়ে সিলেট জেলা বারের ২ নম্বর হলে আমার স্বামীর চেম্বারে যাই। এ সময় আমি আমার সন্তানের ভরণ পোষণ চাই তার কাছে। এতে তিনি উত্তেজিত হয়ে আমাকে ও তার একমাত্র সন্তানকে মারধর, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, হিরন মাহমুদ নিপু আমাকে শায়েস্তা করবে।’
গত বছরের ১৯ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করার পরদিন হিরন মাহমুদ নিপু তার সহযোগীদের নিয়ে মনোয়ারার বাড়িতে হামলা চালিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেন মনোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে হামলা চালানোর ঘটনায় আমি শাহপরাণ থানায় মামলা দায়ের করতে যাই। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে বাধ্য হয়ে সিলেট মহানগর হাকিম আদালত-১ এ মামলা (মামলা নম্বর-৯০) দায়ের করি। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘গত বছরের ১৪ মার্চ হিরন মাহমুদ নিপু একটি ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করেন। আমার স্বামীর সঙ্গে আমার কোনো ধরণের সম্পর্ক নেই বলে স্ট্যাম্পে লেখা ছিল। আমি স্বাক্ষর দেইনি। এ সময় নিপু আমাকে ধর্ষণের এবং আমার সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ ঘটনায় আমি সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরাণ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (নম্বর-৬৫৮) করি। জিডিটি তদন্ত শেষে শাহপরাণ থানা পুলিশ নন জি আর মামলা (নম্বর ০২/১৯) হিসেবে ডায়রিভুক্ত করে। এ মামলায় গত ৮ মে আদালতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সিএনজি অটোরিকশাযোগে আরামবাগ আনন্দ খেলার মাঠে পৌঁছামাত্র নোহাযোগে আমার স্বামী এরশাদুল হক, হিরন মাহমুদ নিপু, এহতেশাম হক আকমল, আলম মিয়া, পাপ্পু, জুয়েল মিয়া, আদিত্য, দুখু মিয়া, সায়েম ও সাইদুল ইসলাম আমার গাড়িটি আটকিয়ে প্রথমে আমার স্বামী আমার মেয়েটিকে কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে মেরে ফেলতে চায়। আমি বাচ্চাটিকে আগলে রাখতে চাইলে অন্যরা আমাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধর করে। একপর্যায়ে তাদের মারধরে আমি মারাত্মক আহত হলে তারা চলে যায়।’
এ ঘটনায় মামলা করলে মামলাটি তদন্তের জন্য মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে দায়িত্ব দেন আদালত। গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত শেষে ৪ জনকে অভিযুক্ত করে গত ২৮ জানুয়ারি প্রতিবেদন দেয়। এতে অভিযুক্তরা হলেন, এ এইচ এরশাদুল হক, সিলেট জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হিরন মাহমুদ নিপু, আমার ভাসুর এহতেশাম হক আকমল ও তাদের সহযোগী আলম মিয়া।’
মনোয়ারা বেগম নিজের নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে স্বামী এরশাদুল হক, হিরন মাহমুদ নিপু ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিএ-০৪