সিলেট মিরর ডেস্ক
অক্টোবর ২৮, ২০২০
০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট : অক্টোবর ২৮, ২০২০
০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন
সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখতের বিরুদ্ধে ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সম্পত্তি গ্রাস এবং সম্পদের ক্ষতি সাধনের’ অভিযোগ করেছেন সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হোটেল রেজিয়ার স্বত্বাধিকারী মো. ফজলুল করিম। গতকাল মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেছেন।
ফজলুল করিমের অভিযোগ- ‘সম্পত্তি গ্রাস এবং সম্পদের ক্ষতি সাধনে লিপ্ত রয়েছেন মেয়র নাদের বখত। অব্যবহৃত খালি জায়গা থাকা সত্তে¡ও তা ব্যবহার না করে মালিকানাধীন ভূমিতে ড্রেন নির্মাণ করছেন তিনি।’ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অনুমতি না নিয়েই পৌর কর্তৃপক্ষ এই কাজ শুরু করেছে বলেও অভিযোগ করেন ফজলুল করিম।
তিনি বলেন, ‘সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক সংলগ্ন আরপিন নগরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভূমিতে সুনামগঞ্জ পৌরসভার নির্মাণ করা প্রায় তিন ফুট চওড়া একটি ড্রেন রয়েছে। ড্রেনের পাশেই আমাদের আবাসিক ও বাণিজ্যিক হোটেল ভবনের মধ্যবর্তী জমিতে পৌরসভার অনুমতিক্রমে অনুমোদিত নকশানুসারে নির্মাণ কাজ চলমান ছিল। কিন্তু মেয়র হোটেল ভবনের দেয়ালের ভিত্তি ঘেঁষে একটি অবৈধ ও অপ্রয়েজনীয় ড্রেন নির্মাণ কাজ চালাচ্ছেন। ড্রেন নির্মাণের ফলে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন হুমকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং ভিত্তিটিও দুর্বল হয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় ভূমি ধ্বসে ভবনের বাসিন্দাদের প্রাণহানীসহ মারাত্মক ক্ষতি সাধন হতে পারে।’ ফজলুল করিমকে ভূমি থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই মেয়র এই কাজ করছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
যে ভ‚মিতে ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে তা নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সঙ্গে তাদের একটি মামলা চলমান রয়েছে বলেও জানিয়েছেন মো. ফজলুল করিম। তিনি বলেন, ‘স্বত্ব মামলা থাকা অবস্থায় আইনগতভাবে মেয়র কিংবা পৌর কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এখানে ড্রেন নির্মাণ কাজ করতে পারেন না। মামলার বিষয় অবগত করার পর বাসা-বাড়ি ও হোটেল রেজিয়া আবাসিক সংলগ্ন মালিকানার জায়গা থেকে ড্রেনটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন করেও পৌর কর্তৃপক্ষ ড্রেন নির্মাণকাজ থেকে সরে আসেনি।’
মো. ফজলুল করিম বলেন, ‘নিরুপায় হয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে গেলে তিনি তাৎক্ষণিক সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ দেন। সহকারী কমিশনার গত ১৪ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়- ১৪৪ নম্বর জে এলস্থিত তেঘরিয়া মৌজার ১৩৬২ নম্বর নামজারি খতিয়ানে ২০৫ নম্বর দাগে ০.৪৪ একর বাড়ি রকম ভূমি রেজিয়া খাতুনের নামে রেকর্ডভুক্ত আছে। অপরদিকে ৯ নম্বর খতিয়ানে ১৪৮৪ নম্বর দাগে ১৬ আনা হিস্যায় ৮.৪০ একর সড়ক রকম ভূমি কমিউনিকেশন অ্যান্ড ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট সুনামগঞ্জের নামে রেকর্ডভুক্ত আছে। তবে মালিকানাধীন ভূমি এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভূমির মধ্যে কেনো খাস সরকারি খতিয়ানের ভূমি নেই।’
ফজলুল করিম লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘সুনামগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দেওয়া তথ্য মতে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক সংলগ্ন সড়ক ও জনপথ বিভাগের দাবিকৃত ভূমিতে সুনামগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃক ড্রেন নির্মাণের কোনো অনুমতি তারা প্রদান করেননি। একই সঙ্গে মালিকানা এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের সঙ্গে মামলা চলমান রয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন।’ সুনামগঞ্জ শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রয়োজনে সড়ক সংলগ্ন মূল ড্রেনের গভীরতা বাড়ানো এবং প্রশস্ত করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে ফজলুল করিম বলেন, ‘সেক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই ভূমি ছাড় দিতে রাজি আছি। কিন্তু মেয়র নাদের বখত মূলতঃ আমার ব্যক্তিগত ক্ষতি সাধন করতে এবং রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে এ ধরনের অবিবেচনাসুলভ কাজ করেছেন।’ তদন্ত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় কমিশনার ও সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বিএ-০২