নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ০৪, ২০২০
০৪:২১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ০৪, ২০২০
০৪:২১ পূর্বাহ্ন
সিলেটের বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ (৩২) হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) সিলেটে সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল আমিন বিপ্লবের আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন বিকাশ দাশ। এই মামলার আসামি গ্রেপ্তারকালে জব্দ তালিকার সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে তিনি সাক্ষ্যপ্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৮ আগস্ট ভোররাতে কানাইঘাট থেকে মামলার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেওয়া একমাত্র আসামি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহীকে (২৪) পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) গ্রেপ্তার করে। এসময় আসামির কাছ থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল, সিমসহ অন্যান্য মালামল জব্দ করা হয়। জব্দকৃত তালিকায় সাক্ষী ছিলেন বিকাশ শাহা।
গত ৬ অক্টোবর সর্বশেষ সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছিল। নতুন একজনসহ এ পর্যন্ত মোট সাক্ষ্য দিয়েছেন ১৪ জন। এ মামলায় মোট ২৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের কথা। মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনায় অংশ নেন এমাদউল্লাহ শহিদুল ইসলাম ও তার সহকারী হিসেবে মামলা পরিচালনায় সহযোগিতা করেন মোহাম্মদ মনির উদ্দিন ও মো. বুরহান উদ্দিন। আসামি পক্ষের আইনজীবী হিসেবে অংশ নেন অ্যাডভোকেট শাহ আলম মহি উদ্দিন
বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ মনিরউদ্দিন সিলেট মিররকে বলেন,‘ অনন্ত হত্যা মামলায় মঙ্গলবার আরও একজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এনিয়ে মোট ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল সাক্ষ্য গ্রহণের সময় এই মামলায় কারাবন্দী থাকা সাফিউর রহমান ওরফে ফারাবী ও আবুল খায়ের রশীদ আহমদকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ১৮ নভেম্বর নির্ধারণ করেছেন আদালত।’
প্রসঙ্গত, গত ২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারের কলাপাড়া এলাকার নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত বিজয় দাশ। বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি তিনি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন অনন্ত।
হত্যাকাণ্ডের এক দিন পর অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।
মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের মধ্যে কানাইঘাটের আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭) ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫) পলাতক। কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এ বি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪) মৃত্যুবরণ করেছেন। আরেক আসামি সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় বসবাসকারী সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান (৩০)। তিনি ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলারও আসামি।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবীরা জানান, গত বছরের ৭ মে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। কিন্তু সাক্ষীদের অনুপস্থিতির কারণে বারবার পেছানো হয় সাক্ষ্য গ্রহণ। দীর্ঘদিন সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলার পর সম্প্রতি মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। মামলায় মোট ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
বিএ-১৪