নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ১৪, ২০২০
০৬:২৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ১৪, ২০২০
০৬:২৫ পূর্বাহ্ন
সিলেটের প্রধান সড়কসমূহের পথচারীদের হাটার জায়গা দখল করে নিয়েছেন হকার এবং ব্যবসায়ীরা। রাস্তারও অনেকাংশ তাদের দখলে। এ কারণে যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি বিপাকে পড়ছেন নগরের পথচারীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরের বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, রিকাবীবাজারসহ প্রধান সড়কের প্রায় প্রতিটি ফুটপাত দখল করে ব্যবস্য করছেন দোকানি ও হকাররা। নগরের জিন্দাবাজার এলাকায় সড়কের পাশে অবস্থিত দোকানের মালামাল রাখা হচ্ছে ফুটপাতে। দোকানিদের অনেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ফ্লেক্সিলোড, পানের দোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালনা করছেন। রাস্তার একাংশ যানবাহনের দখলে এবং একাংশ হকারদের দখলে চলে যাওয়ায় নগরবাসীকে চলতে হচ্ছে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে। পাশাপাশি দুজনের হাঁটার কোনো সুযোগই মিলছে না।
একই অবস্থা নগরের বন্দরবাজার এলাকারও। বন্দরবাজার এলাকার সবগুলো রাস্তার পাশে কাপড়, ফল, শাকসবজি, বিভিন্ন রকমের জিনিষপত্র নিয়ে বসছেন হকাররা। এমনকি সিলেট সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসন ও প্রধান পোস্ট অফিসের সামনের রাস্তাও রেহাই পায়নি হকারদের কবল থেকে। সিটি করপোরেশন মাঝে অভিযান চালালেও সড়ক ও ফুটপাত পুনরায় হকার ও ব্যবসায়ীদের দখলে চলে যাচ্ছে।
পথচারী চন্দন দাস বলেন, ‘নগরের প্রধান সড়কের ফুটপাতে এখন চলা কষ্টকর। ব্যবসায়ীরা তাদের বিভিন্ন জিনিষপত্র ফুটপাতে সাজিয়ে রাখেন। অন্যদিকে হকাররা দখল করে আছে হাটার বাকি অংশটুকু। এ অবস্থায় নগরে হাঁটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা চাই দ্রæত ফুটপাত দখলমুক্ত হোক।’
পথচারী নারী সুমাইয়া ইসলাম বলেন, ‘ফুটপাত খালি না থাকায় নারীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন বেশি। প্রায়ই আমাদেরকে বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।’ জিন্দাবাজার এবং বন্দরবাজারের মতো আম্বরখানায় সড়ক ও ফুটপাত দখল করে চলছে ব্যবসা।
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী সিলেট মিররকে বলেন, ‘ফুটপাত দখলমুক্ত করতে নিয়মিত অভিযান ও জরিমানার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। জরিমানা না করলে একদিকে উচ্ছেদ করা হবে, অন্যদিকে হকাররা বসে যাবে। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশন যাতে কোনো ছাড় না দেয়।’
গত ৩ নভেম্বর সিলেট চেম্বার ভবনে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে হকার উচ্ছেদ নিয়ে মতবিনিময় করেন মেয়র আরিফ। এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরদিন ৪ নভেম্বর সকালে হকার উচ্ছেদ ইস্যুতে আলোচনা করতে পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে যান মেয়রসহ ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নগরের ফুটপাতসহ সড়ক হকারমুক্ত রাখা, নগরের অবৈধ অটোরিকশা-লেগুনা স্ট্যান্ড উচ্ছেদ, যানজট নিরসনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে পুলিশ কমিশনারের সহযোগিতা কামনা করেন। তবে পুলিশ কমিশনার উচ্ছেদের বদলে হকারদের পুনর্বাসনের প্রতি জোর দেন। ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরি করার জন্যও তিনি মেয়রকে অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান সিলেট মিররকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের অভিযান নিয়মিত পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু অভিযানের পর হকাররা আবারও ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে নিচ্ছে। তাই পুলিশের সহযোগিতা ছাড়া এই সমস্যা নিরসন সম্ভব নয়।’ হকারদের পুনর্বাসন ছাড়া এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) আশরাফ উল্ল্যাহ তাহের বলেন, ‘যানজট নিরসন, হকার উচ্ছেদ ও জনগণের ভোগান্তি কমাতে পুলিশের অভিযান শুরু হবে। আমরা চাই নগরবাসীর ভোগান্তি কমাতে। এ জন্য আমরা আইন অনুযায়ী যা যা করা যায় তা করবো।’
এনএইচ/বিএ-০১