নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ১৬, ২০২০
০১:০৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ১৬, ২০২০
০১:০৫ পূর্বাহ্ন
নগরের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশি হেফাজতে নিহত মো. রায়হান আহমদের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ করা মামলার বাদী মো. সাইদুল শেখের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। প্রতারণা মামলায় আদালত এ আদেশ দেন।
রবিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে তাঁকে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক সাইফুর রহমান তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশের ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সিলেটের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সাইদুল শেখ পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে করা মামলার একজন সন্দেহভাজন আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা হওয়ায় ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পিবিআই জানায়, সিলেট নগরের আখালিয়া নিহারিপাড়ার বাসিন্দা রায়হানকে গত ১০ অক্টোবর রাতে সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরদিন ১১ অক্টোবর তিনি মারা যান। এ ঘটনায় হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে নির্যাতন করার সত্যতা পায়। ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁঞাসহ চারজনকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।
কোতোয়ালি থানা–পুলিশ জানায়, রায়হানের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ করা ব্যক্তি সাইদুল শেখ ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন। প্রায় ১০ দিনের মাথায় ২৫ অক্টোবর তাঁকে শনাক্ত করে আটক করার পর হেফাজতে মৃত্যুর মামলায় তাঁকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। সপ্তাহখানেক পর ২ নভেম্বর সিলেট কোতোয়ালি থানায় নগরীর লন্ডনি রোড এলাকার বাসিন্দা আফজাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি সাইদুলের বিরুদ্ধে সৌদি রিয়াল ভাঙানোর কথা বলে প্রতারণামূলকভাবে ১ লাখ ২৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একটি লিখিত অভিযোগ দেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সাইদুল শেখের বিরুদ্ধে মামলাটি নথিভুক্ত হয়।
রায়হানকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনার তদন্তসংশ্লিষ্ট পিবিআই সূত্র জানায়, আফজাল পেশায় একজন চিকিৎসকের গাড়িচালক। তিনি নগরের লন্ডনিরোড এলাকায় বসবাস করেন। নিহত রায়হান নগরের রিকাবিবাজার এলাকায় তিনজন চিকিৎসকের দপ্তরে সহকারী পদে চাকরি করতেন। সাইদুলও রিকাবিবাজারের পার্শ্ববর্তী মিরের ময়দান এলাকায় বসবাস করতেন। রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার পেছনে আগের কোনো শত্রুতা ছিল কি না, এ বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে সাইদুলের বিরুদ্ধে করা প্রতারণা মামলারও তদন্ত চলছে।
পিবিআই পরিদর্শক আওলাদ হোসেন বলেন, দুটো পৃথক ঘটনা হলেও যোগসূত্র খোঁজা হচ্ছে। সাইদুলকে রিমান্ডে নিয়ে এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
বিএ-১৯