শিপার আহমদ, বিয়ানীবাজার
নভেম্বর ১৭, ২০২০
১০:৪৫ অপরাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ১৭, ২০২০
১০:৪৫ অপরাহ্ন
সিলেটের বিয়ানীবাজারে পরিবেশের পরম বন্ধু পাখির রাজ্যে চলছে এখন অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। ফল-ফসলে কীটনাশক প্রয়োগ, উপযুক্ত আবাসস্থল ও খাদ্যের অভাবে ক্রমেই কমছে দেশীয় প্রজাতির হরেকরকম পাখি। উপজেলার প্রধান হাওর মুড়িয়াসহ অন্যান্য ছোট-বড় বিলে পাখির উপস্থিতি খুব কম। এখানকার ক্ষেতের জমি, গাছ, মাঠ-ঘাটে চোখে পড়ে না হরেকরকম পাখির বিচরণ। ভেসে আসে না সুমধুর সুর আর কিচিরমিচির শব্দ। আর পাখি হারিয়ে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য।
একসময় বিয়ানীবাজার উপজেলার ছোট-বড় হাওর-বিলে প্রকৃতির অপরূপ খেয়ালে বাসা বাঁধত দেশীয় পাখিসহ অতিথি পাখিরা। গ্রামের বাঁশঝাড় আর বিভিন্ন গাছ ছিল তাদের স্থায়ী আবাসস্থল। এসবে বাসা বেঁধে প্রজনন হতো অসংখ্য পাখির ছানা। পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর কলকাকলিতে মুখর হতে অনেক প্রকৃতিপ্রেমী ছুটে আসতেন পাখির অভয়াশ্রমে। এখানকার বেশ কয়েকটি বাড়িকে পাখির অভয়াশ্রম হিসেবে গড়ে তোলা হয়। সন্ধ্যার আগেই সব পাখি ফিরে আসত আবাসস্থলে। উপজেলার পাতন গ্রামের একটি বাড়িকে পাখির অভয়াশ্রম হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল। এখন সেটি আর নেই। মুড়িয়া হাওরসহ বিভিন্ন এলাকায় সাদা বক আর নানা প্রজাতির পাখির বিচরণ ছিল। অনেকে অতিথি পাখি শিকার করে বিক্রিও করত।
দুবাগ এলাকার আবুল হাসেম জানান, শেওলা সেতু এলাকায় প্রচুর পাখি বিকিকিনি হয়। এখন পাখির সংখ্যা কমে যাওয়ায় বিকিকিনিও কমে গেছে। ফল-ফসলে কীটনাশক প্রয়োগ ও খাদ্যের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির হরেকরকম পাখি।
রোটারিয়ান ও ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, শালিক, কোকিল, ঘুঘু, দোয়েল, বাবুই, টুনটুনি, কাঠঠোকরা, পানকৌড়ি, ডাহুক, বালীহাঁস, বক, ক্যাসমেচি, বাবুই, মাছরাঙা, বটর, টেইটেরা, গোমড়া ও প্যাঁচা, কাক ও চিলসহ বিভিন্ন পাখির আবাস ছিল এই জনপদ। এখন আর এসব পাখি খুব একটা দেখা যায় না।
বিয়ানীবাজার উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মুকতাদির বিল্লা বলেন, 'ক্ষেতে কীটনাশকের অপব্যবহার ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে বন-জঙ্গল নিধন চলছে। একই সঙ্গে চলছে পাখিশিকার। এসবই পাখি কমে যাওয়ার কারণ। এ ব্যাপারে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।'
এসএ/আরআর-০২