'জকিগঞ্জের বধ্যভূমি ও গণকবর সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে'

জকিগঞ্জ প্রতিনিধি


নভেম্বর ২২, ২০২০
০১:১৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ২২, ২০২০
০১:১৬ পূর্বাহ্ন



'জকিগঞ্জের বধ্যভূমি ও গণকবর সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে'

সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুমী আক্তার বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষায় জকিগঞ্জে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার একাত্তরের স্মৃতি নিয়ে প্রকাশনা হবে এবং বধ্যভূমি ও গণকবর চিহ্নিত করে তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ ২১ নভেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলা হানাদারমুক্ত দিবস। নানা আয়োজনে জকিগঞ্জ হানাদরমুক্ত দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জকিগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

একাত্তরের এই দিনে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী যৌথভাবে পাকবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে জকিগঞ্জ উপজেলাকে পাক হানাদারমুক্ত করে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিল। সেই দিনের স্মরণে শনিবার বেলা ১১টায় জকিগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা ও উপজেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তাগণ।

মুক্তাঞ্চল দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমী আক্তারের সভাপতিত্বে ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার পৌর মেয়র খলিল উদ্দিনের পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আকরাম আলী। অতিথির বক্তব্য দেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপ্লব হোম দাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাকিম হায়দর, ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল মোতাল্লিব, প্রবাসী ঐক্য পরিষদের সভাপতি ফজলুর রহমান, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সার্জেন্ট (অব.) বেলাল আহমদ, সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করতে হবে। জকিগঞ্জ মুক্ত করার গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় তুলে ধরে নবপ্রজন্মকে জাগ্রত করার উদ্যোগ এখনই নেওয়া দরকার।

একাত্তরের স্মৃতিচারণ করেতে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, দেশব্যাপী যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে সিলেটের সীমান্ত উপজেলা জকিগঞ্জকে শত্রুমুক্ত করার শপথ নেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। সে অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর রাতে যৌথবাহিনীর এক সাঁড়াশি অভিযানের ফলে ২১ নভেম্বর ভোরে জকিগঞ্জ মুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধে জকিগঞ্জ ছিল ৪ নম্বর সেক্টরের অধীনে। অধিনায়ক ছিলেন প্রয়াত মেজর চিত্ত রঞ্জন দত্ত। সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজী ছিলেন এই সেক্টরের বেসামরিক উপদেষ্টা। ৬টি সাব-সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন মাহবুব রব সাদী, লে জহির উদ্দিন ও ক্যান্টেন এম এ রব। জকিগঞ্জকে মুক্ত করার পরিকল্পনা অনুসারে ২০ নভেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী ৩টি দলে বিভক্ত হয়ে প্রথম দল জকিগঞ্জের লোহারমহলের দিকে ও দ্বিতীয় দল আমলসীদের দিকে অগ্রসর হয়। তৃতীয় দলটি জকিগঞ্জের কাস্টম ঘাটে অবস্থান করে। খবর পেয়ে পাকসেনারা দিকবিধিক ছুটোছুটি করতে থাকে। তিনদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ঘিরে ফেলেছেন জেনে পাকসেনারা আটগ্রাম হয়ে পালাতে থাকে। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর ৪ জন সদস্য নিহত হয় ও ১২ জনকে আটক করা হয়। মিত্রবাহীর মেজর চমনলাল ও তাঁর দুই সহযোগীসহ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এভাবেই শত্রুমুক্ত হয় জকিগঞ্জ।

 

ওএফ/আরআর-০৫